ষ্টাফ রিপোর্টার\ দেশে বিদ্যমান স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন সংশোধনে জাতীয় সংসদে একটি বিল উত্থাপন করা হয়েছে। উত্থাপিত বিলে নতুন ইউনিয়ন পরিষদে ও মেয়াদোত্তীর্ণ ইউনিয়ন পরিষদে প্রশাসক নিয়োগের বিধান ও ‘সচিব’ নামের পরিবর্তে ‘ইউনিয়ন পরিষদ প্রশাসনিক কর্মকর্তা’ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
গত রোববার (৫ই মে) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে বিলটি উত্থাপন করেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। এ সময় ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।
তবে এ বিলের বিরোধিতা করে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী বলেন, বর্তমান সময়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে প্রশাসক নিয়োগের প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। সেই ধারাবাহিকতায় প্রস্তাবিত বিলেও ইউনিয়ন পরিষদে প্রশাসক নিয়োগের প্রস্তাব করা হয়েছে, যা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার সঙ্গে বেমানান।
তাই বিলটি সংসদে উত্থাপন না করে আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা প্রয়োজন। কিন্ত বিলের ওপর আনীত আপত্তি কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়। পরে বিল সংসদে উত্থাপন করেন মন্ত্রী। এরপর বিলটি অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। কমিটিকে যাচাই-বাছাই শেষ করে ৭ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
সংসদে উত্থাপিত বিলে বলা হয়েছে, ‘স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯ (২০০৯ সনের ৬১ নং আইন), অতঃপর উক্ত আইন বলিয়া উল্লিখিত, এর সর্বত্র উল্লিখিত ‘সচিব’ শব্দের পরিবর্তে ‘ইউনিয়ন পরিষদ প্রশাসনিক কর্মকর্তা’ শব্দসমূহ এবং ‘সচিবের’ শব্দের পরিবর্তে ‘ইউনিয়ন পরিষদ প্রশাসনিক কর্মকর্তার’ শব্দসমূহ প্রতিস্থাপিত হইবে। ’
বিলে আরও বলা হয়েছে, ‘বিদ্যমান আইনের ধারা ১৮ এর উপ-ধারা (১) এর পরিবর্তে নিম্নরূপ উপ-ধারা (১) প্রতিস্থাপিত হইবে, যথা:- (১) কোন এলাকাকে ইউনিয়ন ঘোষণার বা পরিষদের মেয়াদ উত্তীর্ণ হইবার পর ইহার কার্যাবলী সম্পাদনের জন্য সরকার এক জন উপযুক্ত কর্মকর্তা বা উপযুক্ত ব্যক্তিকে প্রশাসক হিসাবে নিয়োগ করিবে এবং নির্বাচিত পরিষদ গঠন না হওয়া পর্যন্ত প্রশাসক ইউনিয়ন পরিষদের সার্বিক দায়িত্ব পালন করিবেন: তবে শর্ত থাকে যে, উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রশাসক কেবল একবারের জন্য নিযুক্ত হইবেন এবং ১২০ দিনের অধিক সময় দায়িত্বে থাকিতে পারিবেন না: আরো শর্ত থাকে যে, কোন দৈব-দুর্বিপাকের কারণে নির্বাচিত পরিষদ গঠন করা সম্ভব না হইলে সরকার উক্ত মেয়াদ ৬০ দিন পর্যন্ত বৃদ্ধি করিতে পারিবে। ’
বিলের উদ্দেশ্যে ও কারণ সংবলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহকে আর্থিকভাবে শক্তিশালীকরণ, সরকার প্রদত্ত বরাদ্দের উপর নির্ভরশীলতা কমানোর উপায় নির্ধারণ এবং ইউনিয়ন পরিষদ আইনকে আরো যুগোপযোগী ও সেবা সহজীকরণের লক্ষ্যে ‘স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) (সংশোধন) আইন-২০২৪’ সংশোধনের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত সম্মানী প্রদানের বিধান যুক্ত করা হয়েছে। ইহার মাধ্যমে কোন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের বরখাস্তকালীন সময়ে ভাতা প্রদানের বিষয়ে কোন আইনগত জটিলতা থাকবে না। এছাড়া, কোনো এলাকাকে ইউনিয়ন ঘোষণা কিংবা পরিষদের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর কার্যাবলী সম্পাদনের জন্য সরকার একজন উপযুক্ত কর্মকর্তা বা উপযুক্ত ব্যক্তিকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ করবে। গ্রাম আদালত পরিচালনা ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় সরকারের অর্পিত দায়িত্ব পালন ও প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ ইউনিয়ন পরিষদের কার্যাবলীর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হলে গ্রাম আদালতের কার্যক্রমকে আরো বিস্তৃত ও কার্যকর করা সম্ভব হতে পারে।”
সম্পাদক ও প্রকাশক:
শহীদুল্লাহ ভূঁইয়া
সহযোগী সম্পাদক: তোফায়েল আহমেদ
অফিস: সম্পাদক কর্তৃক আজমিরী প্রেস, নিউমার্কেট চান্দিনা প্লাজা, কুমিল্লা থেকে মুদ্রিত ও ১৩০৭, ব্যাংক রোড, লাকসাম, কুমিল্লা থেকে প্রকাশিত। ফোন: ০২৩৩৪৪০৭৩৮১, মোবাইল: ০১৭১৫-৬৮১১৪৮, সম্পাদক, সরাসরি: ০১৭১২-২১৬২০২, Email: laksambarta@live.com, s.bhouian@live.com