অনলাইন ডেস্ক: মানবদেহের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হলো কিডনি। এটি রক্ত পরিশোধন, শরীরের অতিরিক্ত পানি ও বর্জ্য বের করে দেওয়া, ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় রাখা এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু অনেক সময় কিডনির সমস্যা নীরবে শুরু হয় এবং প্রাথমিক পর্যায়ে কোনো সুস্পষ্ট উপসর্গ দেখা যায় না। তাই কিডনি ভালো আছে কি না তা সময়মতো বুঝে নেওয়া জরুরি।
১. প্রস্রাবের স্বাভাবিকতা: দিনে গড়ে ৬-৮ বার প্রস্রাব হওয়া, রঙ ফিকে হলুদ থাকা এবং তীব্র দুর্গন্ধ না থাকা কিডনি ভালো থাকার লক্ষণ।
২. শরীর ফুলে না যাওয়া: হাত, পা, চোখের পাতা বা মুখে ফোলা না থাকলে সাধারণত কিডনির কার্যকারিতা স্বাভাবিক থাকে।
৩. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকা: কিডনি ও রক্তচাপের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ। যাদের কিডনি ভালো থাকে, সাধারণত রক্তচাপও স্বাভাবিক সীমার মধ্যে থাকে।
৪. শরীর ক্লান্ত না হওয়া: অতিরিক্ত ক্লান্তি বা দুর্বলতা না থাকা মানে রক্তে টক্সিন জমছে না, অর্থাৎ কিডনি কাজ করছে ঠিকভাবে।
৫. চামড়া ও চোখের স্বাভাবিকতা: ত্বক শুষ্ক না হওয়া, চুলকানি না থাকা এবং চোখে হলদেটে ভাব না থাকাও কিডনি সুস্থ থাকার লক্ষণ।
প্রস্রাবের রঙ ঘন হয়ে যাওয়া বা ফেনা ওঠা।
প্রস্রাব কমে যাওয়া অথবা হঠাৎ বেড়ে যাওয়া।
মুখমণ্ডল, চোখের পাতা বা পায়ে ফোলা দেখা দেওয়া।
হঠাৎ উচ্চ রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া।
দীর্ঘদিন ধরে অবসন্নতা ও রুচিহীনতা।
ঘুমের সমস্যা, বমি ভাব বা শ্বাসকষ্ট।
ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া নিশ্চিতভাবে বলা কঠিন। তবে নিয়মিত কিছু পরীক্ষা করলে সহজেই বোঝা যায়—
১. রক্ত পরীক্ষা (Serum Creatinine, Blood Urea, eGFR): এগুলো কিডনির কার্যক্ষমতা যাচাইয়ের প্রধান পরীক্ষা।
২. প্রস্রাব পরীক্ষা (Urine R/E, ACR): প্রস্রাবে প্রোটিন বা রক্ত আছে কি না, তা থেকে কিডনির অবস্থা বোঝা যায়।
৩. আল্ট্রাসনোগ্রাফি: কিডনির আকার ও গঠন পরীক্ষা করা হয়।
৪. রক্তচাপ পরীক্ষা: নিয়মিত রক্তচাপ মাপা জরুরি।
পর্যাপ্ত পানি পান করুন (সাধারণত দিনে ২-৩ লিটার, তবে কিডনি রোগ থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ জরুরি)।
লবণ ও প্রক্রিয়াজাত খাবার কম খান।
উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
ধূমপান ও অতিরিক্ত ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়া এড়িয়ে চলুন।
নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম বা ব্যায়াম করুন।
বছরে অন্তত একবার কিডনি পরীক্ষা করান, বিশেষত যদি ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ বা পারিবারিক কিডনি রোগের ইতিহাস থাকে।
কিডনি সমস্যা নীরবে বাড়তে পারে, তাই কেবল উপসর্গের ওপর নির্ভর করা নিরাপদ নয়। সচেতন জীবনযাপন, নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং প্রাথমিক লক্ষণগুলো নজরে রাখা কিডনি সুস্থ রাখার মূল চাবিকাঠি। মনে রাখবেন, কিডনি একবার নষ্ট হলে তা আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। তাই যত আগে সচেতন হবেন, তত বেশি নিরাপদ থাকবেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক:
শহীদুল্লাহ ভূঁইয়া
সহযোগী সম্পাদক: তোফায়েল আহমেদ
অফিস: সম্পাদক কর্তৃক আজমিরী প্রেস, নিউমার্কেট চান্দিনা প্লাজা, কুমিল্লা থেকে মুদ্রিত ও ১৩০৭, ব্যাংক রোড, লাকসাম, কুমিল্লা থেকে প্রকাশিত। ফোন: ০২৩৩৪৪০৭৩৮১, মোবাইল: ০১৭১৫-৬৮১১৪৮, সম্পাদক, সরাসরি: ০১৭১২-২১৬২০২, Email: laksambarta@live.com, s.bhouian@live.com