ষ্টাফ রিপোর্টার\ কুমিল্লা জেলার ১৭টি উপজেলার মধ্যে ১১ জন নারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পদে কর্মরত রয়েছেন। দেশের গুরুত্বপূর্ণ এই জেলার ১১টি উপজেলা ১১জন নারীর নেতৃত্বে পরিচালিত হচ্ছে। তাদের কেউ কেউ আবার বর্তমানে পৌর প্রশাসক ও উপজেলা পরিষদের প্রশাসকের দায়িত্বও পালন করছেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ইউএনও’রা ২৪ ঘণ্টায়ই সেবা দেন। আইনশৃঙ্খলার অবনতি কিংবা নারীর প্রতি সহিংসতা হলে তারা সবার আগে মাঠে যান। এখন প্রশাসনিক দায়িত্বের পাশাপাশি তারা উপজেলা চেয়ারম্যান ও পৌর মেয়রের কাজও করছেন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ৭ই ডিসেম্বর থেকে কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের ৩৪ ব্যাচের সাহিদা আক্তার। ২০২৩ সালের ৭ই ফেব্রæয়ারি থেকে হোমনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বিসিএস ৩৪ ব্যাচের মোলিকা চাকমা। ২০২৩ সালের ২০শে জুলাই থেকে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, বিসিএস ৩৫ ব্যাচের রুবাইয়া খানম। ২০২৪ সালের ৩১শে জুলাই থেকে তিতাস উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বিসিএস ৩৫ ব্যাচের সুমাইয়া মমিন। ২০২৪ সালের ১১ই সেপ্টেম্বর থেকে চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বিসিএস ৩৫ ব্যাচের নাজিয়া হোসেন। ২০২৪ সালের ১৮ই সেপ্টেম্বর থেকে দাউদকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বিসিএস ৩৪ ব্যাচের নাঈমা ইসলাম। ২০২৪ সালের ৩১শে অক্টোবর থেকে মনোহরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বিসিএস ৩৫ ব্যাচের ফাহরিয়া ইসলাম। ২০২৪ সালের ১০ই নভেম্বর থেকে মেঘনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বিসিএস ৩৪ ব্যাচের হ্যাপী দাস। ২০২৪ সালের ১৯শে ডিসেম্বর থেকে আদর্শ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বিসিএস ৩৫ ব্যাচের ফাতেমা তুজ জোহরা। ২০২৫ সালের ২১শে জানুয়ারি থেকে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বিসিএস ৩৬ ব্যাচের মাহমুদা জাহান। সবশেষ ২০২৫ সালের ২৭শে ফেব্রæয়ারি থেকে লালমাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন বিসিএস ৩৪ ব্যাচের হিমাদ্রী খীসা।
কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাতেমা তুজ জোহরা বলেন, ‘আমরা যখন কাজ করি, তখন মনেই হয় না আমরা নারী নাকি পুরুষ। রাতে দিনে খবর আসলেই কাজে নেমে পড়ি। নারী বলে এখন তেমন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয় না। তবে বর্তমান সময়ে কাজের চাপ অতিরিক্ত। কারণ রাতে গোমতীর মাটি কাটার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে অভিযান, দিনে বাজার মনিটরিং, উপজেলা প্রশাসনের কাজ, উপজেলা পরিষদের কাজ, ফ্যামিলি তার ফাঁকে অতিরিক্ত আরও দায়িত্ব। কাজকে উপভোগ করি। প্রফেশনাল জায়গায় থাকলে মানুষের সহযোগিতা পাই।’
হোমনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোলিকা চাকমা বলেন, ‘হোমনা উপজেলার মানুষ সজ্জন। আমি দুই বছর কাজ করে তাদের যা সহযোগিতা পেয়েছি তা বলে শেষ করা যাবে না। আমি যেখানেই বদলী হয়েছি নারী বা পুরুষ এটা দিয়ে কেউ মূল্যায়ন করেনি। মানুষ কার কাছ থেকে সেবা পাচ্ছে সেটা বিষয় নয়। তারা সঠিকভাবে সেবাটা পাচ্ছে কি না তারা শুধু তা-ই চায়। আর আমরাও যখন কাজ করি নারী বা পুরুষ তা মনে থাকে না। আমার লক্ষ্যই থাকে শুধু সেবা।’
কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছার বলেন, ‘১৭টি উপজেলা ১১ জন নারী দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে। এই ১১টি উপজেলায় নারী ইউএনওদের পাশাপাশি মনোহরগঞ্জ, ব্রাহ্মণপাড়া, লালমাই, আদর্শ সদর ও বুড়িচং উপজেলায় সহকারী কমিশনারও (ভূমি) নারী। কিন্তু আমি নারী বলে কাজে কোন অসহযোগিতা পাইনি। উল্টো কিছু জায়গায় আমি তাঁদের বেশি সিনসিয়ার হিসেবে প্রমাণ পেয়েছি। পুরুষ ইউএনওদের সঙ্গে তাদের কাজেরও কোন ভিন্নতা দেখিনি।’
জেলা প্রশাসক আরো বলেন, ‘তাঁরা নিজ দায়িত্বের পাশাপাশি উপজেলা প্রশাসক, পৌর প্রশাসক, ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক, উপজেলার স্কুল-কলেজের কমিটির অতিরিক্ত দায়িত্বও পালন করছেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক:
শহীদুল্লাহ ভূঁইয়া
সহযোগী সম্পাদক: তোফায়েল আহমেদ
অফিস: সম্পাদক কর্তৃক আজমিরী প্রেস, নিউমার্কেট চান্দিনা প্লাজা, কুমিল্লা থেকে মুদ্রিত ও ১৩০৭, ব্যাংক রোড, লাকসাম, কুমিল্লা থেকে প্রকাশিত। ফোন: ০২৩৩৪৪০৭৩৮১, মোবাইল: ০১৭১৫-৬৮১১৪৮, সম্পাদক, সরাসরি: ০১৭১২-২১৬২০২, Email: laksambarta@live.com, s.bhouian@live.com