ষ্টাফ রিপোর্টার\ কুমিল্লা জেলার ১৭টি উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অর্ধেকেরও বেশি প্রতিষ্ঠানে প্রধান শিক্ষকের অভাবে প্রশাসনিক কার্যক্রমসহ পাঠদানে দেখা দিচ্ছে নানামুখী সমস্যা।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, কুমিল্লা জেলায় মোট ২ হাজার ১০৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ৯০৯টিতে প্রধান শিক্ষক রয়েছেন। বাকি ১ হাজার ১৯৮টি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। প্রধান শিক্ষক না থাকায় অধিকাংশ বিদ্যালয়ে জ্যেষ্ঠ সহকারী শিক্ষক চলতি দায়িত্ব পালন করছেন। এতে শিক্ষা কার্যক্রমের মান ও শিক্ষার পরিবেশ ব্যাহত হচ্ছে।
উপজেলা পর্যায়ের হিসাব মতে, আদর্শ সদর উপজেলার ১১০টি বিদ্যালয়ের মধ্যে ৩৯টিতে, লাকসামে ৭৬টির মধ্যে ৪৩টি, দেবীদ্বারে ১৮৫টির মধ্যে ১২০টি, মুরাদনগরে ২০৪টির মধ্যে ১২৯টি এবং দাউদকান্দিতে ১৪৯টির মধ্যে ১০১টি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই। চৌদ্দগ্রামে ১৭৫টির মধ্যে ১১৪টি, ব্রাহ্মণপাড়ায় ১০৮টির মধ্যে ৫৬টি, বরুড়ায় ১৫৪টির মধ্যে ৯৩টি এবং বুড়িচংয়ে ১৪৯টির মধ্যে ৫৬টি বিদ্যালয়ে একই অবস্থা। এছাড়া চান্দিনায় ১৩৬টির মধ্যে ৬৫টি, হোমনায় ৯২টির মধ্যে ৬০টি, নাঙ্গলকোটে ১৫১টির মধ্যে ৮৫টি, মেঘনায় ৬৫টির মধ্যে ৪০টি, মনোহরগঞ্জে ১০৪টির মধ্যে ৬৩টি, তিতাসে ৯২টির মধ্যে ৫৫টি, সদর দক্ষিণে ৯০টির মধ্যে ৪৫টি এবং লালমাইয়ে ৬৭টির মধ্যে ৩৪টি বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক শূন্য রয়েছে।
এদিকে, শিক্ষক সংকট নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিভাবকরা। আদর্শ সদর উপজেলার অভিভাবক মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক না থাকায় স্কুলের শৃঙ্খলা ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে। সহকারী শিক্ষকরা যত চেষ্টা করেন, সংকট সমাধান হচ্ছেনা।’
দেবীদ্বারের আরেক অভিভাবক রুবিনা আক্তার বলেন, ‘আমাদের সন্তানদের লেখাপড়া ঠিকমতো হচ্ছে না। স্কুলের নিয়মিত কার্যক্রমও অনেক সময় থেমে যায়। এত বড় জেলার এত স্কুলে কেন প্রধান শিক্ষক নেই?’
শিক্ষাবিদদের মতে, একটি বিদ্যালয়ের প্রাণ হলো প্রধান শিক্ষক। তিনি শুধু পাঠদানের মান নির্ধারণ করেন না, বরং বিদ্যালয়ের সার্বিক প্রশাসনিক ও শৃঙ্খলা রক্ষার প্রধান দায়িত্ব পালন করেন। সেই নেতৃত্বহীনতা কুমিল্লার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর ভবিষ্যৎকে অনিশ্চিত করে তুলছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তাপস কুমার পাল জানান, প্রধান শিক্ষক পদে ৩৫ শতাংশ সরাসরি নিয়োগ এবং ৬৫ শতাংশ পদোন্নতির মাধ্যমে পূরণ হয়। বর্তমানে শূন্য পদগুলোর অধিকাংশই পদোন্নতির জন্য খালি রয়েছে। তিনি বলেন, ‘মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন হলেই নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হবে। আমাদের উপদেষ্টা মহোদয় জানিয়েছেন, নভেম্বর-ডিসেম্বরের মধ্যে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে এবং শূন্য পদ পূরণ হবে।’
সম্পাদক ও প্রকাশক:
শহীদুল্লাহ ভূঁইয়া
সহযোগী সম্পাদক: তোফায়েল আহমেদ
অফিস: সম্পাদক কর্তৃক আজমিরী প্রেস, নিউমার্কেট চান্দিনা প্লাজা, কুমিল্লা থেকে মুদ্রিত ও ১৩০৭, ব্যাংক রোড, লাকসাম, কুমিল্লা থেকে প্রকাশিত। ফোন: ০২৩৩৪৪০৭৩৮১, মোবাইল: ০১৭১৫-৬৮১১৪৮, সম্পাদক, সরাসরি: ০১৭১২-২১৬২০২, Email: laksambarta@live.com, s.bhouian@live.com