ষ্টাফ রিপোর্টার\ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য-প্রক্টরসহ ৩৬ জনের নামে থানায় বিস্ফোরক আইনে মামলা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ৫০-৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
গত বুধবার সদর দক্ষিণ থানায় মো. সাখাওয়াত হোসেন নামে এক ব্যক্তি বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। তিনি নিজেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয় দেন। থানার পরিদর্শক ও তদন্তকারী কর্মকর্তা এস এম আরিফুর রহমান তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘৩৬ জনের নামসহ ৫০-৬০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা হয়েছে। বিষয়টির তদন্ত চলছে। এখানে যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত শিক্ষকদের নাম রয়েছে। তাই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা মোতাবেক তদন্ত করা হবে।’
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, সংঘবদ্ধ জনতাকে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর, জখম, ককটেল বিস্ফোরণ করে ত্রাস ও আতঙ্ক সৃষ্টির অপরাধে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। মামলায় সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএফএম আবদুল মঈন ছাড়া বাকিরা হলেন- সাবেক প্রক্টর ও ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. কাজী ওমর সিদ্দিকী, আইকিউএসির পরিচালক অধ্যাপক ড. রশিদুল ইসলাম শেখ, সহকারী প্রক্টর ও মার্কেটিং বিভাগের প্রভাষক আবু উবাইদা রাহিদ, সহকারী প্রক্টর ও নৃবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক অমিত দত্ত। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা পরিষদের সভাপতি ডেপুটি রেজিস্ট্রার মো. জাকির হোসেন, সেকশন অফিসার রেজাউল ইসলাম মাজেদ, বিল্লাল হোসেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী পরিষদের সভাপতি জসিম উদ্দিন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্লানিং দপ্তরের কম্পিউটার অপারেটর মো. মহসিন, আইকিউএসির অফিস সহকারী কাম ডাটা প্রসেসর মো. জসিম, হিসাব বিভাগের অফিস সহকারী কাম ডাটা প্রসেসর মো. ফখরুল ইসলাম ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা প্রহরী মিজানুর রহমান।
ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা হলেন- শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের সভাপতি রাফিউল আলম দীপ্ত। আবার রাকিবুল ইসলাম রকি নামে একজনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে এই নামে কোন শিক্ষার্থী বাংলা বিভাগে নেই। এ ছাড়া বিপ্লব চন্দ্র দাস, রেজা-ই-ইলাহী, এ এস এম সায়েম, অর্ণব সিংহ রয়, মাহমুদুর রহমান মাসুম, বিশ্বজিৎ সরকার, পার্থ সরকার, রিয়াজ, আব্দুল্লাহ আল মামুন, পারভেজ মোশারফ, এস কে মাসুম, রাকেশ দাস প্রমুখ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাদী সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘সমন্বয়কদের সিদ্ধান্তক্রমে আমাকে বাদী করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাই মামলায় আমি বাদী হয়েছি।’ এ সময় তিনি তিনজন সমন্বয়কের নাম বলেন। তারা হলেন, মোহামদ সাকিব হোসাইন, আবু রায়হান ও মুহাম্মদ রাশেদুল হাসান।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে সাখাওয়াত বলেন, ‘এক থেকে ছয় পর্যন্ত যাদের নাম রয়েছে উনারা সবাই হুকুমদাতা। তাদের প্রত্যক্ষ নির্দেশে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করা হয়েছে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইকিউএসির সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ড. রশিদুল ইসলাম শেখ বলেন, ‘আমার নাম দেখে আমি বিস্মিত ও লজ্জিত। আমার ছুটি ছিল ১১ তারিখ থেকে ১৩ তারিখ পর্যন্ত। আমি দেশের বাইরে ছিলাম তখন। কিন্তু কীভাবে নাম আসল জানি না।’
সাবেক প্রক্টর ড. কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, ‘আমি মামলার বিষয়টি জানতে পেরেছি। আমরা বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই এই মামলা দেয়া হয়েছে। মামলার বিষয়ে আমি আইনি পদক্ষেপ নিব।’
সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন বলেন, ‘আমি শুনে আশ্চর্য ও মর্মাহত হয়েছি যে, আমাদের নামে মিথ্যা মামলা হয়েছে। আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলাম না এবং আমরা শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে কোনো বাধা দিইনি, কাউকে আঘাত করার জন্য কোনো নির্দেশও দিইনি। উপরন্তু, শিক্ষার্থীদের বাস, অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে সহায়তা, গ্রেপ্তার শিক্ষার্থীদের মুক্তির ব্যবস্থা করাসহ যখন যে সহায়তার জন্য বলা হয়েছে তার ব্যবস্থা করেছি। শুধু শুধু হয়রানির জন্য মামলাটি করা হয়েছে এবং এটি তুলে নেয়ার আহ্বান জানাই।’
সম্পাদক ও প্রকাশক:
শহীদুল্লাহ ভূঁইয়া
সহযোগী সম্পাদক: তোফায়েল আহমেদ
অফিস: সম্পাদক কর্তৃক আজমিরী প্রেস, নিউমার্কেট চান্দিনা প্লাজা, কুমিল্লা থেকে মুদ্রিত ও ১৩০৭, ব্যাংক রোড, লাকসাম, কুমিল্লা থেকে প্রকাশিত। ফোন: ০২৩৩৪৪০৭৩৮১, মোবাইল: ০১৭১৫-৬৮১১৪৮, সম্পাদক, সরাসরি: ০১৭১২-২১৬২০২, Email: laksambarta@live.com, s.bhouian@live.com