ষ্টাফ রিপোর্টার\ ইদানিংকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম চার লেনের মহাসড়কে আতঙ্কের নাম যানজট। এছাড়া, মহাসড়কে যানবাহন চালকরা বেপরোয়া হওয়ায় দিন দিন বাড়ছে দুর্ঘটনা। প্রাণহাণির ঘটনা ঘটছে অহরহ। আহত হয়ে অনেকেই পঙ্গুত্ব¡ বরণ করছে। বিনা চিকিৎসায় অর্থের অভাবে কেউ কেউ আবার মৃত্যুর কোলে ঢুলে পড়ছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, দেশের প্রধান ব্যস্ততম ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা অংশজুড়ে রয়েছে প্রায় একশত কিলোমিটার অংশ। জেলার দাউদকান্দি থেকে চৌদ্দগ্রাম পর্যন্ত মহাসড়কে ২০১৫ সালের আগস্টে নিষিদ্ধ হয়েছে সিএনজি অটোরিকশা। এছাড়াও নিষিদ্ধের তালিকায় আছে, রিকশা, ইজিবাইক, নসিমন, ভটভটি, ট্রাক্টর। কিন্তু কোনটাই থেমে নেই। প্রতিদিনই চলছে মহাসড়ক দিয়ে একস্থান থেকে অন্যস্থানে। মহাসড়কে সিএনজি অটোরিকশা যাত্রী বহনে নিষিদ্ধের পর একটি সিন্ডিকেট মালামাল পরিবহণের কাজে ব্যবহৃত পিকআপকে যাত্রী পরিবহণের উপযোগী করে বিভিন্ন গন্তব্যে যাত্রী পরিবহণ করছে। এর বাইরে রয়েছে ফিটনেসবিহীন লক্কর-ঝক্কর মার্কা মাইক্রোবাস। বিআরটিএ এসব যানবাহনের মহাসড়কে চলাচলের অনুমতি না দিলেও আইন-প্রয়োগকারী সংস্থার চোখের সামনেই চলছে এসব যানবাহন। প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী এসব মাইক্রোবাস দিয়ে চলাচল করলেও চালকদের নেই কোন লাইসেন্স। এতে মৃত্যু ঝুঁকিতে রয়েছে কুমিল্লার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিভিন্ন স্বল্প দূরত্বে চলাচলকারী যাত্রীরা।
ঢাকা-চট্রগ্রামে মহাসড়কের কুমিল্লায় মহাসড়ক ঘেঁষে গড়ে উঠেছে শত শত হাট-বাজার। এছাড়া মহাসড়কের উভয়পার্শ্বে অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে দোকানপাট ও বাজারের স্থায়ী কাঠামো।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজটের কারণে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনীতিকে প্রায় স্থবির করে দিয়েছে। অচল হয়ে পড়ে থাকছে ঘন্টার পর ঘন্টা যানবাহন। এতে করে প্রতিদিন মহাসড়কে যানজট রুটিন হয়ে গেছে। এই অবস্থায় যানবাহনের চলাচলকারীদেরর অবর্ননীয় দুভোর্গ পোহাতে হচ্ছে।
কুমিল্লার চার মহাসড়কের দুঃখ হয়ে দাঁড়িয়েছে ১১টি বাজার। জেলার ওপর দিয়ে অতিক্রম করা ঢাকা-চট্টগ্রাম, কুমিল্লা-নোয়াখালী, কুমিল্লা-সিলেট ও কুমিল্লা-চাঁদপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের ওপর ২ ডজন বাজার থাকলেও বেশি দুর্ভোগে পড়তে হয় এই ১১টি বাজারে।
খোঁজ নিয়ে ও সরেজমিন জানা যায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে দাউদকান্দি উপজেলার গৌরিপুর, চান্দিনা উপজেলা সদর, বুড়িচং উপজেলার নিমসার, সদর দক্ষিণ উপজেলার সুয়াগাজী ও চৌদ্দগ্রাম উপজেলা সদর বাজার। কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কে অধিকাংশ বাজার মহাসড়কে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। বেশি যানজট সৃষ্টি হচ্ছে লালমাই উপজেলার বাগমারা বাজার ও লাকসাম উপজেলার বাইপাস এলাকায়, কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের বুড়িচং উপজেলার কংশনগর, দেবিদ্বার সদর ও মুরাদনগর উপজেলার কোম্পানীগঞ্জ বাজারে। এলোপাতাড়ি ছোট যানবাহন পার্কিংয়ের কারণে কংশনগর বাজারে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। কুমিল্লা-চাঁদপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের লাকসাম উপজেলার মুদাফফরগঞ্জ বাজারে যানজট লেগেই থাকে।
চৌদ্দগ্রামের কামাল হোসেন, মুদাফফরগঞ্জের আবু তাহের ও বাগমারার মোসলেম উদ্দিন বলেন, মহাসড়কগুলোয় গড়ে ওঠা গ্রামীণ বাজার ও রিকশা স্ট্যান্ড অপসারণ জরুরি। যতক্ষণ এসব এলাকায় পুলিশ থাকে ততক্ষণ মহাসড়ক সচল থাকে। সরে গেলে আগের অবস্থায় ফিরে যায়।
সংগঠক মতিন সৈকত বলেন, মহাসড়কগুলোয় গড়ে তোলা বাজার এলাকায় অস্থায়ী-স্থায়ী স্থাপনা ও যত্রতত্র গাড়ি রাখায় যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। বিশেষ করে দাউদকান্দির গৌরিপুর, বুড়িচংয়ের কংশনগর, লালমাইয়ের বাগমারা ও লাকসামের মুদাফফরগঞ্জ বাজার মহাসড়কের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের উপকূল বাস সার্ভিসের পরিচালক কবীর আহমেদ বলেন, ফোর লেনের কাজ শেষ না হওয়ায় এবং সড়কের ওপর বাজার বসায় লাকসাম বাইপাস ও বাগমারায় যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। বেশি দুর্ভোগ হচ্ছে বাগমারায়।
কুমিল্লা মোটর অ্যাসোসিয়েশনের (বাস মালিক সমিতি) সভাপতি জামিল আহমেদ খন্দকার বলেন, বিভিন্ন বাজারে কমিউনিটি পুলিশ কাজ করছে। তার সঙ্গে হাইওয়ে পুলিশ টহল বাড়ালে মহাসড়ক সচল থাকে। মহাসড়ক সচল রাখতে আমরা পরিবহন চালকদের পরামর্শ দিয়ে আসছি।
হাইওয়ে পুলিশ কুমিল্লা অঞ্চলের পুলিশ সুপার মো. খাইরুল আলম বলেন, আমরা বাজার এলাকার সমস্যা অবগত রয়েছি। এ নিয়ে কংশনগরসহ বিভিন্ন বাজারের ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছি। সবার সঙ্গে আলোচনা করে সমাধানে আসতে পারব বলে আশা করছি।
সম্পাদক ও প্রকাশক:
শহীদুল্লাহ ভূঁইয়া
সহযোগী সম্পাদক: তোফায়েল আহমেদ
অফিস: সম্পাদক কর্তৃক আজমিরী প্রেস, নিউমার্কেট চান্দিনা প্লাজা, কুমিল্লা থেকে মুদ্রিত ও ১৩০৭, ব্যাংক রোড, লাকসাম, কুমিল্লা থেকে প্রকাশিত। ফোন: ০২৩৩৪৪০৭৩৮১, মোবাইল: ০১৭১৫-৬৮১১৪৮, সম্পাদক, সরাসরি: ০১৭১২-২১৬২০২, Email: laksambarta@live.com, s.bhouian@live.com