আব্দুল গাফফার সুমন\ মনোহরগঞ্জ উপজেলা কেন্দ্রিক স্বতন্ত্র শিক্ষা কমপ্লেক্স না থাকায় মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ও ডিগ্রি সমমানের পরীক্ষাগুলো অনুষ্ঠিত হচ্ছে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। এতে কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত প্রতিষ্ঠানগুলোতে পাঠদান বন্ধ থাকায় শিক্ষা কার্যক্রমে চরম বিঘœ ঘটছে। বছর শেষে কাঙ্খিত ফলাফল অর্জন ও সার্বিক মূল্যায়নের দিক থেকে পিছিয়ে পড়ছে প্রতিষ্ঠানগুলো।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, মনোহরগঞ্জে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ৭টি কেন্দ্রে। উপজেলার ৪২টি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ৬টি কেন্দ্রে। ১২টি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। ডিগ্রি ও সমমানের পরীক্ষার ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে কেন্দ্র সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়গুলো প্রায় ১ মাসেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ থাকে। এতে পাঠদান কার্যক্রম থেকে অনেকটাই পিছিয়ে পড়ে কেন্দ্র সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
উপজেলার একাধিক প্রতিষ্ঠান প্রধানের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হলে তারা জানান, এক সময় শিক্ষার্থীরা জেলায় গিয়ে পাবলিক বা বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতো। বর্তমানে তৃণমূল পর্যায়ে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হলেও উপজেলাভিত্তিক তৈরি হয়নি স্বতন্ত্র শিক্ষা কমপ্লেক্স। উপজেলা পর্যায়ে একটি স্বতন্ত্র শিক্ষা কমপ্লেক্স তৈরি হলে পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে কেন্দ্রের জন্য নির্ধারিত প্রতিষ্ঠানগুলো কেন্দ্র নামক বিড়ম্বনা থেকে মুক্তি পাবে। তাছাড়া কেন্দ্র সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের শ্রেণি কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি নির্দিষ্ট সময়ে সিলেবাস শেষ না হওয়ায় তড়িঘড়ি করে পরীক্ষা পরবর্তী সময়ে সিলেবাস শেষ করতে হয়। এতে শিক্ষার্থীদের উপর চাপ পড়ছে ও পরীক্ষায় খারাপ ফলাফলের প্রভাব পড়ার কথা জানিয়েছেন শিক্ষকরা।
তারা আরও জানান, বছরে শুরুতে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের কাছে সরবরাহের জন্য প্রাপ্ত বই রাখার কোন গুদামঘর উপজেলায় নেই। বিতরণের জন্য আসা এসব বই রাখা হয় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শ্রেণীকক্ষে। শ্রেণীকক্ষে মজুদ রাখা এসব বই সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোতে পাঠদান বিঘœ ঘটার অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়ায়। উপজেলায় শিক্ষা কমপ্লেক্স ভবন তৈরি হলে পরীক্ষার পাশাপাশি নীচতলায় বিনামূল্যে বই বিতরণের গুদামঘর ও উপরের তলাগুলোতে হোমোজিনিয়াসলি পরীক্ষাও নেয়া যাবে।
এ বিষয়ে উপজেলার পোমগাঁও উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব ড. একেএম জাহাঙ্গীর বলেন, বাস্তবতার নিরিখে এটা হওয়া সঠিক নয়। লেখাপড়ার গুনগত মান নিশ্চিতের জন্য উপজেলায় স্বতন্ত্র শিক্ষা কমপ্লেক্স হওয়া জরুরি। একই উপজেলায় একাধিক কেন্দ্র হওয়ায় প্রশ্নের প্রাইভেসি, সেটকোড প্রাইভেসি বিঘœ হওয়ার মত ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। এতে রাষ্ট্র ব্যবস্থাপনা চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়ছে। উপজেলায় এমন একটি ভবন তৈরি হলে শুধু পরীক্ষা কেন্দ্র নয়; এখানে প্রশিক্ষণ, অরিয়েন্টেশন, সেমিনারসহ এর বহুমুখী ব্যবহারের সুযোগ পাবে এলাকাবাসী। কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সময় ও পাঠদান বিড়ম্বনা বহুলাংশে কমে যাবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গাজালা পারভীন রুহী বলেন, উপজেলায় স্বতন্ত্র শিক্ষা কমপ্লেক্স হলে সকল প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা একই স্থানে পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ পাবে। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে একাধিক কেন্দ্রে পরীক্ষা নিতে উপজেলা প্রশাসনকেও বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। কেন্দ্রগুলো উপজেলা সদর থেকে দূরবর্তী হওয়ায় প্রশাসনের নজরদারিতেও বিঘœ ঘটে। তাছাড়া পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে কেন্দ্র সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকায় সেখানে পাঠদান কার্যক্রমে বিঘœ ঘটে।
সম্পাদক ও প্রকাশক:
শহীদুল্লাহ ভূঁইয়া
সহযোগী সম্পাদক: তোফায়েল আহমেদ
অফিস: সম্পাদক কর্তৃক আজমিরী প্রেস, নিউমার্কেট চান্দিনা প্লাজা, কুমিল্লা থেকে মুদ্রিত ও ১৩০৭, ব্যাংক রোড, লাকসাম, কুমিল্লা থেকে প্রকাশিত। ফোন: ০২৩৩৪৪০৭৩৮১, মোবাইল: ০১৭১৫-৬৮১১৪৮, সম্পাদক, সরাসরি: ০১৭১২-২১৬২০২, Email: laksambarta@live.com, s.bhouian@live.com