ময়মনসিংহ সদর উপজেলায় নিজ বাড়ির সামনে এক সাংবাদিককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে শম্ভুগঞ্জের মাঝিপাড়ার টানপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তি স্বপন কুমার ভদ্র (৬৫), যিনি তারাকান্দা প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি ছিলেন। তিনি পূর্বে ময়মনসিংহ থেকে প্রকাশিত দৈনিক স্বজন পত্রিকায় তারাকান্দা উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করতেন। বর্তমানে তিনি কোনো গণমাধ্যমে কর্মরত ছিলেন না। তবে তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এলাকার বিভিন্ন ঘটনা ও বিষয় নিয়ে নিয়মিতভাবে লেখালেখি করতেন। স্বপন কুমার ভদ্রের দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। তার ছোট ছেলে রনি ভদ্র সেনাবাহিনীতে কর্মরত।
নিহত ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, লেখালেখির কারণেই স্বপন কুমার ভদ্রকে হত্যা করা হয়েছে। বছরখানেক আগেও তার ওপর হামলা হয়েছিল। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ আজ দুপুরে সাগর মিয়া (১৮) নামের এক তরুণকে আটক করেছে। সাগর মাঝিপাড়া গ্রামের বাবুল মিয়ার ছেলে।
নিহত ব্যক্তির ভাতিজা জুয়েল ভদ্র বলেন, আজ বেলা ১১টার দিকে চাচা (স্বপন ভদ্র) নিজ বাড়ির সামনে বসে ছিলেন। এ সময় তাঁকে মাথায় এলোপাতাড়ি কোপানো হয়, এবং তাঁর বাঁ হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়। চাচির (সবিতা ধর) চিৎকারে স্থানীয় লোকজন ছুটে আসেন। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
বেলা আড়াইটার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের লাশঘরের সামনে দেখা যায় মানুষের ভিড়। সেখানে কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই আবুল কাশেম স্বপন ভদ্রের মরদেহের সুরতহাল করছিলেন। তিনি জানান, ঘাড়ে ছয়টি কোপের চিহ্ন পাওয়া গেছে, বাঁ হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন, এবং শরীরের অন্যান্য অংশেও আঘাত রয়েছে।
স্বপন কুমার ভদ্রের ভাগনে মানিক সরকার জানান, ‘মাদক সংক্রান্ত পোস্ট দেওয়ার কারণেই আমার মামাকে হত্যা করা হয়েছে। লেখালেখির কারণে তাঁর ওপর ক্ষোভ ছিল। এ কারণে তাঁর হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন করা হয়।’
ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সফিকুল ইসলাম খান বলেন, আটক সাগর এলাকায় বখাটে ও নেশাগ্রস্ত হিসেবে পরিচিত। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে মানুষকে ছুরিকাঘাত করার অভিযোগও রয়েছে।
আজ দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার আজিজুল ইসলাম। তিনি জানান, আটক সাগর একজন বখাটে ও সন্ত্রাসী, এবং এই হত্যাকাণ্ডে তাঁর সংশ্লিষ্টতা নিশ্চিত হয়েছে। সাগরের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আগেও প্রতিবাদ করেছিলেন স্বপন ভদ্র। একবার সাগর তাঁর হাতেও আঘাত করেছিলেন। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে এবং পরে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে।