নিজস্ব প্রতিনিধি\ কুমিল্লার মুরাদনগরে মাটি বোঝাই ট্রাক্টরের দৌরাত্মে অতিষ্ঠ জনগন। এতে করে যানজট যেন সাধারন মানুষের নিত্যদিনের সঙ্গি হয়ে পড়েছে। কোম্পানীগঞ্জ বাস টার্মিনালের প্রায় ২’শ মিটার রাস্তা পার হতে লাগে আধ-ঘন্টা থেকে ১ ঘন্টা। আবার কোনো কোনো সময়ে এ রাস্তা পার হতেই লাগে ঘন্টার পর ঘন্টা। কমিনিউটি পুলিশিংয়ের সদস্যরা নিয়মিত যাটজট নিরসনের জন্য কাজ করলেও তাতে কোন সুরাহা হচ্ছে না। আর হাইওয়ে পুলিশ ও প্রশাসনের নজরদারি নেই বললেই চলে এ যানজট নিয়ে। এতে করে যেন যানযট এ রাস্তায় যাতায়াতকারী যাত্রী এবং চালকের গলার কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কোম্পানীগঞ্জ বাস টার্মিনালে বাস কাউন্টার রয়েছে ৬টি। এ টার্মিনালের মাঝে ছোট-বড় সিএনজি চালিত অটোরিকশা স্ট্যান্ড রয়েছে ৫টি। এসব কাউন্টারের বাস যাত্রী ও সিএনজি চালিত অটোরিকশার যাত্রী তোলা হয় রাস্তার উপর থেকে। যার কারনে সারা বছর যানজট লেগে থাকে এ টার্মিনালে। বর্তমানে শীত মৌসুমে এ টার্মিনালে যানজটের সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে ইটভাটার মাটিবাহী ট্র্যাক্টও ও ড্রামট্রাক। উপজেলার ২২টি ইউনিয়নে নিয়ম বর্হিভূতভাবে ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে উঠেছে বিভিন্ন নামে প্রায় ৪০টি ইটভাটা আর এই ইটভাটাকে কেন্দ্র করে ট্র্যাক্টরের চলাচল বর্তমানে বেড়েছে। দিনের বেলায় মাটি পরিবহনকারী ট্র্যাক্টর ও ড্রামট্রাক কম চললেও সন্ধ্যার পর এসব গাড়ির পরিমান বেড়ে যায় প্রায় তিনগুন। প্রতিদিন গোমতী নদী থেকে দেদারসে মাটি কেটে শত শত ট্র্যাক্টর ও ড্রামট্রাক বোঝাই করে এসব মাটি নিয়ে যাওয়া হয় উপজেলার বিভিন্ন ইটভাটায়। গোমতীর বেড়িবাধ দিয়ে মাটি পরিবহন করার ফলে গোমতী বাঁধ রয়েছে চরম হুমকির মুখে। এসব মাটি যখন একের পর এক ট্র্যাক্টর ও ড্রামট্রাক বোঝাই করে কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের কোম্পানীগঞ্জ বাস টার্মিনাল ক্রস করে বিভিন্ন ইটভাটায় নিয়ে যাওয়া হয়। তখন দু’পাশের যানজটের তীব্রতা অনেকটাই বেড়ে যায়।
তাছাড়া ট্র্যাক্টর চালানো অবস্থায় অনেক চালককে দেখা যায় কানে ইয়ারফোন লাগিয়ে রাখে এতে করে অন্যান্য যানবাহনের চালকরা হর্ণ বাজালেও সেদিকে তাদের দৃষ্টি থাকে না। নিজেদের মনগড়া মত তাদের ট্র্যাক্টর চালাচ্ছেন এতে প্রায়ই প্রানহানীসহ নানা ধরনের দূর্ঘটনা ঘটছে। বিশেষ করে এই ট্র্যাক্টর চলাচলের কারনে ধুলাবালির পরিমান বেড়ে গেছে। এই ধুলাবালিতে অতিষ্ঠ সাধারন মানুষ, তীব্র ভোগান্তির মধ্যে যাতায়াত করতে হয়। কয়েকজন বাস এবং ট্রাক চালকের সাথে কথা বলে জানা যায়, ট্র্যাক্টরের কারনে যানজটসহ প্রতিদিন নানা ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। প্রায়ই টার্মিনালে সকল যানবাহনের চালকদের অসহনীয় দূর্ভোগ পোহাতে হয়। এতে করে যাত্রী এবং চালকরা নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যস্থলে পৌছতে পারে না। এদিকে মিরপুর হাইওয়ে থানা পুলিশ মাঝেমধ্যে যানজট নিরসন করতে ডিউটি করলেও বেশীরভাগ সময় হিতে বিপরীত যানজট নিরসন না করে ব্যস্ত থাকেন বিভিন্ন যানবাহনের বৈধ কাগজপত্র চেক করতে। এতে প্রতিদিন হয়রানির শিকার অটোরিকশা, সিএনজি, পিকআপসহ বিভিন্ন যানবাহনের চালকরা। এই ব্যাপারে কথা বললে কোম্পানীগঞ্জ বাজার সাবেক কমিনিউটি পুলিশিং এর সভাপতি হাজ্বী জাহাঙ্গীর আলম জানান, আগে কমিনিটি পুলিশিং এর সদস্যরা প্রতিদিন যানজট নিরসনের জন্য কাজ করতেন। বর্তমানে কমিউনিটি পুলিশিংয়ের দায়িত্বে কারা আছে আমার জানা নেই। তবে প্রত্যেক স্ট্যান্ডের লোকজন যানজট নিরসনের জন্য প্রতিদিন কাজ করে যাচ্ছে। মিরপুর হাইওয়ে থানার ওসি মঞ্জুরুল আবসার বলেন, কোম্পানীগঞ্জ বাস টার্মিনালের যানজট নিয়ে আমি বিরক্তিকর অবস্থায় আছি। মুরাদনগর থানা পুলিশ যানজট নিরসনে কোনো ভূমিকা রাখে না। আমি প্রতিদিন বাস টার্মিনালে পুলিশ পাঠাচ্ছি যানজট নিরসনের জন্য। গাড়ির বৈধ কাগজপত্র চেক করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। আমি মুরাদনগর ওসি এবং ইউএনও একসাথে বসে যানজট নিরসনের জন্য কি ব্যবস্থা নেয়া যায় তার জন্য আলাপ করব। উপজেলা নির্বাহী আব্দুস সামাদ শিকদার বলেন, এ টার্মিনালের যানজটের ভুক্তভোগী আমি নিজেই। আমি অল্প কিছু দিন হয়েছে এ উপজেলায় যোগদান করেছি। সকলের সাথে কথা বলে যানজট নিরসনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক:
শহীদুল্লাহ ভূঁইয়া
সহযোগী সম্পাদক: তোফায়েল আহমেদ
অফিস: সম্পাদক কর্তৃক আজমিরী প্রেস, নিউমার্কেট চান্দিনা প্লাজা, কুমিল্লা থেকে মুদ্রিত ও ১৩০৭, ব্যাংক রোড, লাকসাম, কুমিল্লা থেকে প্রকাশিত। ফোন: ০২৩৩৪৪০৭৩৮১, মোবাইল: ০১৭১৫-৬৮১১৪৮, সম্পাদক, সরাসরি: ০১৭১২-২১৬২০২, Email: laksambarta@live.com, s.bhouian@live.com