ষ্টাফ রিপোর্টার\ লাকসামে বিএনপির ২ শীর্ষ নেতাকে অপহরণের পর গুমের অভিযোগে সাবেক মন্ত্রী তাজুল ইসলামসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। লাকসাম পৌরসভার ফতেপুর গ্রামের বাসিন্দা ও গুম হওয়া বিএনপি নেতা মোঃ হুমায়ুন কবির পারভেজের ছোট ভাই গোলাম ফারুক বাদি হয়ে ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর বরাবর অভিযোগটি দাখিল করেন। ১১ বছর ৩ মাস আগে গুমের শিকার ওই ২ নেতার এখনো কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
গুমের শিকার ২ নেতা হলেন- লাকসাম উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য মোঃ সাইফুল ইসলাম হিরু এবং লাকসাম পৌরসভা বিএনপির সাবেক সভাপতি মোঃ হুমায়ুন কবির পারভেজ।
ট্রাইব্যুনালে দাখিল করা অভিযোগে সাবেক স্থানীয় সরকারমন্ত্রী ও কুমিল্লা-৯ আসনের সাবেক এমপি মোঃ তাজুল ইসলামকে প্রধান আসামী করা হয়। অভিযুক্ত বাকী ৬ জন হলেন, র্যাব-১১ এর বাধ্যতামূলক অবসরে যাওয়া সাবেক অধিনায়ক (সিইও) ও নারায়ণগঞ্জের ৭ খুনের ঘটনায় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত লেঃ কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, র্যাব-১১ এর তৎকালীন কুমিল্লা ক্যাম্পের দায়িত্বে থাকা কোম্পানি-২ এর মেজর শাহেদ হাসান রাজীব, উপসহকারী পরিচালক (ডিএডি) মোঃ শাহজাহান আলী, উপপরিদর্শক (এসআই) কাজী সুলতান আহমেদ ও অসিত কুমার রায় এবং লাকসাম থানার তৎকালীন ওসি আবুল খায়ের।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দেয়া অভিযোগ এবং গুম হওয়া ২ নেতার পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বিএনপির টানা অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে ২০১৩ সালের ২৭শে নভেম্বর রাত ৯টায় লাকসামে বিশেষ অভিযান চালায় র্যাব-পুলিশসহ যৌথ বাহিনী। একপর্যায়ে র্যাবের সদস্যরা উপজেলা বিএনপির তৎকালীন সভাপতি ও সাবেক এমপি সাইফুল ইসলামের মালিকানাধীন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ‘লাকসাম ফ্লাওয়ার মিলে’ এক ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে ৯ জনকে গ্রেফতার করেন। খবর পেয়ে ওই রাতেই সাইফুল ইসলাম, পৌর বিএনপির সভাপতি হুমায়ুন কবির এবং একই কমিটির সহ.সাংগঠনিক সম্পাদক জসিম উদ্দিন একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে লাকসাম থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়। তাদের বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সটি কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের আলীশ্বর এলাকায় পৌঁছালে একদল লোক অ্যাম্বুলেন্সটির গতিরোধ করে নিজেদের র্যাব পরিচয়ে চালক ও হেলপারকে মারধর করে বিএনপির ৩ নেতাকে আটক করে অন্য একটি গাড়িতে তুলে কুমিল্লার দিকে নিয়ে যায়।
অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, ওই দিন রাত সাড়ে ১২টায় জসিম উদ্দিন (অ্যাম্বুলেন্সে থাকা) এবং লাকসামে গ্রেফতার হওয়া ৯ জনকে লাকসাম থানায় হস্তান্তর করেন র্যাব-১১ এর কুমিল্লা শাখার তৎকালীন ডিএডি শাহজাহান আলী। পরদিন সকালে একটি হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠায় পুলিশ। তবে সেই থেকে বিএনপি নেতা সাইফুল ইসলাম হিরু ও হুমায়ুন কবির পারভেজের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।
এ গুমের সাথে সাবেক মন্ত্রী তাজুল ইসলামের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, সাইফুল ইসলাম লাকসামের জনপ্রিয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং সফল ব্যবসায়িক নেতা ছিলেন। তার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত ছিলেন তৎকালীন স্থানীয় সংসদ সদস্য তাজুল ইসলাম। তা ছাড়া তৎকালীন বিরোধী দলের আহ্বান করা সব কর্মসূচি স্থানীয়ভাবে পালিত হতো সাইফুল ইসলাম ও হুমায়ুন কবিরের নেতৃত্বে। সাইফুল ইসলাম ও হুমায়ুন কবির রাজনীতির মাঠে থাকলে তাজুল ইসলামের রাজনীতিতে বাধা সৃষ্টি পারে সেজন্য তাজুল ইসলাম পথের কাঁটা সরাতে র্যাবকে দিয়ে এ জগন্য কাজ করেছিলেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক:
শহীদুল্লাহ ভূঁইয়া
সহযোগী সম্পাদক: তোফায়েল আহমেদ
অফিস: সম্পাদক কর্তৃক আজমিরী প্রেস, নিউমার্কেট চান্দিনা প্লাজা, কুমিল্লা থেকে মুদ্রিত ও ১৩০৭, ব্যাংক রোড, লাকসাম, কুমিল্লা থেকে প্রকাশিত। ফোন: ০২৩৩৪৪০৭৩৮১, মোবাইল: ০১৭১৫-৬৮১১৪৮, সম্পাদক, সরাসরি: ০১৭১২-২১৬২০২, Email: laksambarta@live.com, s.bhouian@live.com