নিজস্ব প্রতিনিধি\ কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার খিলা বড় বাড়ির বাসিন্দা দিনমজুর মোজাম্মেল হোসেন পৈতৃক সম্পত্তির বিরোধে প্রতিবেশি বাসিন্দা আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুব আলমের অত্যাচার ও নির্যাতনে অকাল মৃত্যুবরণ করেন। ২০২০ সালে স্বামীর মৃত্যুর পর তার স্ত্রী ৩ মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে কষ্টকর জীবন যাপন করছিলো। এ সময় স্বামী হত্যার বিচার চাওয়ার সুযোগ হয়ে উঠেনি।
তবুও কুমিল্লার আদালতে এবং বিভিন্ন আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা ও বাহিনীর দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কোন লাভ হয়নি। ৪ ছেলে মেয়েকে নিয়ে আতঙ্কে মানবেতর জীবন যাপন করছেন কোহিনুর বেগম। ক্ষমতা, অর্থ ও পেশী শক্তিতে ঘাতক মাহবুব আলম সব জায়গায় আধিপত্য বিস্তার করে রেখেছিল। কথাগুলো বলেই হাউমাউ করে কেঁদে উঠলেন অকালে স্বামী হারানো কোহিনুর বেগম।
গত সোমবার (২৩শে জুন) নিজ বাড়িতে সাংবাদিকদের ডেকে কথাগুলো বলেন কোহিনুর। পাশে ছিলো ৩ মেয়ে।
কোহিনুর বলেন, আমার স্বামীকে হত্যার ৫ বছর পার হলেও বিচারতো পাইনি; বরং মাহবুবুর রহমানের আতংকে ও নির্যাতন নিয়ে আমাদেরকেও দিন কাটাতে হচ্ছে। ২০২৪ সালে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকার পলায়ন করলে মাহবুব এখন টাকার বিনিময়ে বিএনপির উপর নির্ভর করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, আমি বিধবা একজন নারী, আমার ৩ টি মেয়ে বিয়ের উপযুক্ত হলেও আমার স্বামীর পৈতৃক সম্পত্তির উপর একটি ঘর পর্যন্ত করতে পারছিনা। তাই আজ আমি (কোহিনুর বেগম) অসহায় হয়ে সাংবাদিকদের মাধ্যমে সকলের নিকট বার্তাটি দিতে চাচ্ছি। আমি আমার স্বামী হত্যার বিচার এবং আমাদের উপর মাহবুব আলমের চলমান নির্যাতন বন্ধের দাবী জানাই।
সন্ত্রাসী মাহবুব আলম কর্তৃক নির্মম নির্যাতন ও অত্যাচারে বাবা হত্যার বর্ননা দিয়েছেন নিহত দিনমজুর মোজাম্মেল হোসেনের বড় মেয়ে শারমিন আক্তার। এসময় শারমিন বলেন, আমার বাবা ছিলেন সহজ সরল একজন মানুষ। দিনমজুরি করে আমাদের সংসার চালাতেন। ফ্যাসিস্ট মাহবুব সামান্য কিছু হলেই চড়াও হতো আমার বাবার উপর। অত্যাচার নির্যাতন করে আমার বাবাকে হত্যার ৫ বছর অতিক্রম হলেও আমরা এখনো বিচার পাচ্ছিনা। মাহবুব আগে ছিলো আওয়ামী লীগ নেতা এখন বিএনপি হওয়ার চেষ্টা করছে। মাহবুব এখন চাচ্ছে আমাদেরকে ভিটা বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করার জন্য।
তিনি বলেন, বাবার হত্যার পর আমাদের থানায় যেতে দেয়নি, বিচারের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরলেও আলোর মুখ দেখেনি আমাদের বিচারটি। ৫ই আগস্ট স্বৈরাচার হাসিনার পতনের পর আমরা মনোহরগঞ্জ থানায় যোগাযোগ করলে আমাদের অভিযোগের কোনো হদিস পাওয়া যায়নি। পরে চলতি বছরের ২৮শে ফেব্রæয়ারি আমার মা বাদী হয়ে মাহবুবকে প্রধান আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলার তদন্তের জন্য পিবিআইকে দায়িত্ব দেন। শারমিন আক্তার বলেন, মামলা করার পর থেকে আমাদেরকে বিভিন্নভাবে আবারো হুমকি দিতে থাকে মাহবুব ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী।
তিনি বলেন, আমাদের বাবা না থাকায় এখন কোনো পুরুষ অভিভাবক নেই। তাই আমরা এখন চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছি, যেকোনো সময় আমাদের উপর নৃশংস হামলা করতে পারে মাহবুব ও তার বাহিনী, তাই আমরা মাহবুবকে আইনের আওতায় আনার জন্য পুলিশ প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর সহায়তা কামনা করছি। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, মোজাম্মেলের স্ত্রী কোহিনুর বেগম, মেজো মেয়ে শিমু আক্তার এবং ছোট মেয়ে সেতু আক্তার।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মাহবুব আলমের মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও রিসিভ করা হয়নি।
এ বিষয়ে মনোহরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বিপুল চন্দ্র দে জানান, বিষয়টি আমাকে অবগত করা হয়েছে। বিষয়টি যেহেতু অনেক আগের ও আদালতে বিচারাধীন তাই আমি আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক যে কোন ব্যবস্থা গ্রহন করতে প্রস্তুত রয়েছি।
সম্পাদক ও প্রকাশক:
শহীদুল্লাহ ভূঁইয়া
সহযোগী সম্পাদক: তোফায়েল আহমেদ
অফিস: সম্পাদক কর্তৃক আজমিরী প্রেস, নিউমার্কেট চান্দিনা প্লাজা, কুমিল্লা থেকে মুদ্রিত ও ১৩০৭, ব্যাংক রোড, লাকসাম, কুমিল্লা থেকে প্রকাশিত। ফোন: ০২৩৩৪৪০৭৩৮১, মোবাইল: ০১৭১৫-৬৮১১৪৮, সম্পাদক, সরাসরি: ০১৭১২-২১৬২০২, Email: laksambarta@live.com, s.bhouian@live.com