বৃহস্পতিবার, ৫ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

অবশেষে ফেনী সদর উপজেলার বাসিন্ধা  বৃদ্ধ আলিম উল্লাহ’র মৃতদেহ  কলাগাছের ভেলায় ভাসিয়ে দেওয়া হয়

অবশেষে ফেনী সদর উপজেলার বাসিন্ধা বৃদ্ধ আলিম উল্লাহ’র মৃতদেহ কলাগাছের ভেলায় ভাসিয়ে দেওয়া হয়

২৯ Views

অবশেষে ফেনী সদর উপজেলার বাসিন্ধা
বৃদ্ধ আলিম উল্লাহ’র মৃতদেহ
কলাগাছের ভেলায় ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে।
অথচ, প্রিয় মানুষ মারা যাওয়ার পর আত্মীয়-স্বজনদের প্রথম চাওয়া থাকে যে, মৃত মানুষটির কবরের যেন চিহ্ন থাকে। ভবিষ্যতে যেন প্রিয় মানুষটির কবরে অন্তত জিয়ারত করা যায়। কিন্তু মাটির অভাবে সেই মানুষকে কবর দিতে না পেরে কলাগাছের ভেলায় ভাসিয়ে দেওয়ার যে কষ্ট তা কি ভোলার মতো! এমনি এক ঘটনা ঘটেছে ফেনী সদর উপজেলা মোটবী ইউনিয়নে সাতসতী গ্রামের বাসিন্দা আলিম উল্লাহের পরিবারে।
গত শুক্রবার (২৩শে আগস্ট) ভোরে মারা যান বৃদ্ধ আলিম উল্লাহ (৭৩)। কিন্ত পুরো এলাকা  পানিতে তলিয়ে থাকায় মৃতদেহটি দাফন করার জন্য সাড়ে তিন হাত শুকনো জায়গাও খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাছাড়া, আলিম উল্লাকে অন্তত: দূরে কোথাও কবর দেওয়ার ব্যবস্থা করা যায় কি না- তার জন্য জরুরি পরিস্থিতিতে যোগাযোগও করেছিলেন পরিবারের সদস্যরা। কেউ হয়ত আসবে সেই আশায় দু-দিন মরদেহ নিয়ে অপেক্ষাও করেছিলেন তারা। কিন্তু কেউ আর আসেনি।
অত:পর, বাধ্য হয়ে গত শনিবার (২৪শে আগস্ট) কলাগাছের ভেলায় ভাসিয়ে দেওয়া হয় আলিম উল্লাহর মরদেহ। সঙ্গে লিখে দেওয়া হয় একটি চিঠিও। সেই চিঠিতে যা লিখা ছিল তা হুবহু তুলে ধরা হলো: ‘এই মৃতদেহটি অতিরিক্ত বন্যার কারণে আমরা দাফন করতে পারিনি। দু’দিন অতিবাহিত হওয়ার পরে নিরুপায় হয়ে লাশ পানিতে ভাসিয়ে দিয়েছি। সঙ্গে আমাদের এলাকার নাম-ঠিকানাসহ ফোন নম্বর দেওয়া হয়েছে। যদি কেউ শুকনো জায়গা পান, তাকে কবর দিয়ে দেবেন এবং আমাদের এই ঠিকানায় যোগাযোগ করবেন। আপনাদের কাছে আমরা চির কৃতজ্ঞ থাকব’।
এ ব্যাপারে পরিবারের সদস্যরা জানান, আলিম উল্লাহ ৪ দিন যাবত অসুস্থ থাকার পর ২৩শে আগস্ট ভোরে মারা যান। তখন পুরো ইউনিয়নের চারপাশেই অথৈ পানি। একটু শুকনো জায়গা পাওয়া যায়নি তাঁকে কবর দেওয়ার জন্য। দুদিন ধরে সেনাবাহিনী ও স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে ফেনীতে যোগাযোগের চেষ্টাও করেন তারা। কিন্তু কারও কাছ থেকে কোনো সাড়া পাননি। তাই বাধ্য হয়ে কলাগাছের ভেলায় মরদেহটি ভাসিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া, বাবার মরদেহ কবর দেওয়ার বিষয়ে সাহায্য চেয়ে ফেসবুকেও পোস্ট করা হয়েছিলো। মৃতের ছেলে মাসুদ সেখানে তিনি লিখেন, ‘হে আল্লাহ আমার বাবা যেন একটু মাটি পায়। আল্লাহ তুমি সব কিছুর মালিক। অন্তত যাতে তাঁর কবর জিয়ারত করতে পারি- ওই সুযোগ করে দাও। কিন্ত কবরে জায়গা মেলেনি। Courtesy: somoyerkonthosor
##

Share This