মঙ্গলবার, ১৩ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

আওয়ামী লীগের সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে সরকারের প্রজ্ঞাপন

আওয়ামী লীগের সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে সরকারের প্রজ্ঞাপন
Views

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার কার্য শেষ না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও এর সব অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন এবং ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। আজ সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে। সন্ত্রাসবিরোধী (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫ অনুযায়ী এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বিচার কার্য সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ও সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোর যেকোনো প্রকাশনা, প্রচার, মিছিল, সভা-সমাবেশ, সম্মেলন এবং অনলাইন বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয়তা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো।

গতকাল রোববার জারি হওয়া সন্ত্রাসবিরোধী (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫-এ রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তি বা সংগঠনের সকল কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার বিধান যুক্ত করা হয়েছে। নতুন অধ্যাদেশ অনুযায়ী, কোনো প্রতিষ্ঠান, গোষ্ঠী বা সংগঠনের সকল কার্যক্রম আইনের আওতায় নিষিদ্ধ করা সম্ভব।

এর আগে শনিবার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বিশেষ সভায় তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় সিদ্ধান্ত হয়, বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে এবং ট্রাইব্যুনালের বাদী ও সাক্ষীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা হবে। পাশাপাশি, ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে চূড়ান্ত করে প্রকাশের সিদ্ধান্তও গৃহীত হয়।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, ২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো রাজনৈতিক বিরোধীদের ওপর দমন-পীড়ন, গুম, খুন, ধর্ষণসহ নানা ধরনের নিপীড়ন চালিয়েছে। বিশেষ করে গত বছরের ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত চলমান ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমন করতে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে, যা দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

বর্তমানে এইসব অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও অন্যান্য আদালতে বহু মামলা বিচারাধীন রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে যে, এসব বিচার প্রক্রিয়ায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি, সাক্ষীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উসকানিমূলক বক্তব্য প্রচারসহ আইনশৃঙ্খলাবিরোধী কার্যক্রমে দলটির নেতাকর্মীরা জড়িত।

সরকারের হাতে থাকা তথ্য-প্রমাণ অনুযায়ী, আওয়ামী লীগ ও এর সংগঠনগুলো রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। এসব বিবেচনায়, সন্ত্রাসবিরোধী আইন ২০০৯-এর ১৮(১) ধারা ও সংশোধিত অধ্যাদেশ ২০২৫-এর আওতায় দলটির সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

Share This

COMMENTS