ইট-সুরকী উঠে যানবাহন ও জনসাধারন চলাচলে সীমাহীন ভোগান্তির শিকার এলাকাবাসী লাকসামের মুদাফরগঞ্জ-শান্তিরবাজার সড়কের ১৩ কিলোমিটারের বেশির ভাগই বন্যার ক্ষত


আবুল কালাম আজাদ\ কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার মুদাফরগঞ্জ থেকে মনোহরগঞ্জ উপজেলার শান্তির বাজার পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার সড়কটির দৈন্যদশায় যানবাহন চলাচলে সীমাহীন ভোগান্তি বিরাজ করছে। এছাড়াও সড়কটির কিছু অংশ বরুড়া ও চাঁদপুর জেলার শাহরাস্তি উপজেলা অংশেও চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সড়কটির প্রায় পুরোটায় অসংখ্য গর্ত ও খানাখন্দে ভরপুর। ফলে এ পথে চলাচলকারীদের দুর্ভোগের যেন শেষ নেই। সড়কটি দিয়ে চাঁদপুর ও মনোহরগঞ্জের মানুষ ঢাকা, চাঁদপুর, চাটখিল, রামগঞ্জ ও সোনাপুর যাতায়াত করে থাকে। সড়কটির বেহাল দশায় বর্তমানে আয়েশা পাসপোর্ট ছাড়া আর কোন কোম্পানির বাস চলাচল করছে না।
স্থানীয় লোকজনের ভাষ্য, প্রায় এক বছরের বেশি সময় ধরে সড়কটির বিভিন্ন স্থান ভাঙাচোরা। গত বছরের স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় লাকসাম-মনোহরগঞ্জসহ আশপাশের কয়েকটি উপজেলা প্লাবিত হয়। বন্যার ¯্রােতে সড়কটির ১৩ কিলোমিটারই ক্ষত-বিক্ষত হয়েছে। দ্রæত এটি সংস্কার করা না হলে যানবাহন চলাচল বন্ধ হবে, অন্যথায় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশংকা রয়েছে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কের শতাধিক স্থানে পিচ ঢালাই উঠে ইট-সুরকির কঙ্কাল বেরিয়ে এসেছে। সড়কের বেশির ভাগ এলাকাতেই ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত। খানাখন্দের কারণে যান চলাচলে চরম সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। বেহাল সড়কটি নিয়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে দ্বিগুণের বেশি সময় লাগছে।
লাকসাম উপজেলার মুদাফরগঞ্জ বাজার থেকে রঘুরামপুর পার হলেই সড়কটিতে ভাঙাচোরা শুরু দেখা যায়। ছোট-বড় গর্তের কারণে গাড়ি হেলেদুলে চলে। লাকসাম উপজেলা অংশ পার হয়ে মনোহরগঞ্জ উপজেলার অংশে প্রবেশ করতেই আরও খারাপ অবস্থা চোখে পড়ে। মনোহরগঞ্জ উপজেলার মির্জাপুর, বেরনাইয়া, পাঁচপুকুরিয়া এলাকায় খানাখন্দে ভরা সড়কটি। এসব স্থানের অনেক জায়গায় পিচ ঢালাইয়ের কোনো অস্তিত্ব চোখে পড়েনি। রঘুরামপুর থেকে শান্তিরবাজার পর্যন্ত অবস্থা আরও খারাপ। বেশির ভাগ স্থানেই সড়কের পিচ ঢালাইয়ের কোনো অস্তিত্ব নেই। স্টেশন চিতোষী থেকে রঘুরামপুর পর্যন্ত অংশটির একই দশা। কয়েকটি স্থানে পিচঢালাই ও সুরকিও বিলীন হয়ে গেছে।
নুরুল আমিন ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক মনিরুল ইসলাম বলেন, গত বছরের আগস্টের বন্যার সময় পানির স্রোতে সড়কের অনেক জায়গা একেবারে ভেঙে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে ইট, বালু ও মাটি ফেলে চলাচলের উপযোগী করা হলেও এখন প্রায় পুরো সড়কটি ভাঙাচোরা হয়ে পড়েছে। এতে চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন তারা।
শান্তিরবাজারের সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক রুবেল বলেন, ‘সড়কটির এত খারাপ অবস্থা গত ১৫ বছরের মধ্যে দেখিনি। শান্তিরবাজার থেকে মুদাফরগঞ্জ যেতে আগে সময় লাগত ২০ মিনিট, এখন সেখানে ১ ঘণ্টা লেগে যায়।’
মনোহরগঞ্জ উপজেলা প্রধান প্রকৌশলী শাহ আলম জানান, সড়কটি বন্যায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে, বিষয়টি সমাধান কল্পে আমরা কাজ করছি। আশা করি দ্রæত সময়ের মধ্যে সড়কটি সংস্কারের কাজ শুরু করা যাবে। এ প্রসঙ্গে এলজিইডি বিভাগ কুমিল্লার প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবদুল মতিন বলেন, বন্যার কারণে সড়কটি বেশি বেহাল ও ভাঙাচোরা হয়ে পড়েছে। এরই মধ্যে সড়কটির সংস্কার কাজের দরপত্র প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। দ্রæত সময়ের মধ্যে সড়কটির সংস্কার কাজ শুরু হবে বলে আশা করছি। এতে মানুষের দুর্ভোগ দূর হবে।