ইসরায়েলি বিমান হামলা বৈরুতের দক্ষিণ উপশহরে , সিরিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ সীমান্তপথ বন্ধ
বৈরুতের উপশহরে ইসরায়েলের একাধিক বিমান হামলা রাতভর শহরকে কাঁপিয়ে তুলেছে। এসব হামলায় লেবানন এবং সিরিয়ার মধ্যে প্রধান সীমান্ত পারাপথ বন্ধ হয়ে গেছে, যা হাজার হাজার মানুষকে অবরুদ্ধ করে দিয়েছে, যারা ইসরায়েলি বোমাবর্ষণ থেকে পালানোর চেষ্টা করছিল।
বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলের উপশহরে এই বিস্ফোরণগুলো আকাশে বিশাল ধোঁয়ার কুন্ডলী তৈরি করে এবং লেবাননের রাজধানীর অনেক দূরে ভবনগুলো কাঁপিয়ে তোলে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এখনও এই হামলার লক্ষ্যবস্তু নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। হতাহতের বিষয়ে তথ্য পাওয়া যায়নি, তবে লেবাননের জাতীয় সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, ঐ এলাকায় একের পর এক ১০টিরও বেশি বিমান হামলা হয়েছে। একই সময়ে, ইসরায়েলি বাহিনী জানিয়েছে, হিজবুল্লাহ প্রায় ১০০টি রকেট ইসরায়েলে নিক্ষেপ করেছে।
ইসরায়েলি বাহিনী আরও জানিয়েছে যে, বৃহস্পতিবার বৈরুতে চালানো এক হামলায় হিজবুল্লাহর যোগাযোগ বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ রশিদ স্কাফি নিহত হয়েছে। স্কাফি হিজবুল্লাহর একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, যিনি ২০০০ সাল থেকে যোগাযোগ ইউনিটের দায়িত্বে ছিলেন।
বৃহস্পতিবারের আরেকটি হামলা বৈরুত থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার পূর্বে লেবানন-সিরিয়া সীমান্তে মাসনা সীমান্ত পারাপথের কাছে একটি রাস্তা বন্ধ করে দেয়। ইসরায়েল জানিয়েছে, এই পথ হিজবুল্লাহর সামরিক সরঞ্জাম পরিবহনের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছিল। তারা আরও জানায়, ঐ এলাকায় একটি টানেল আঘাত করা হয়েছে, যা ইরান থেকে হিজবুল্লাহর কাছে অস্ত্র চোরাচালানের জন্য ব্যবহৃত হতো। হিজবুল্লাহ সিরিয়া হয়ে ইরান থেকে প্রচুর অস্ত্র পেয়ে থাকে বলে ধারণা করা হয়।
গত দুই সপ্তাহে, লেবাননে যুদ্ধ থেকে পালিয়ে আসা লক্ষাধিক মানুষ সিরিয়ায় প্রবেশ করেছে। ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত লেবাননের সাধারণ নিরাপত্তা বিভাগ জানিয়েছে, ২ লাখ ৫৬ হাজার সিরিয়ান এবং ৮২ হাজার লেবানিজ নাগরিক সিরিয়ায় পালিয়ে গেছে।
ইসরায়েল ইতোমধ্যে লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলের বাসিন্দাদের সরিয়ে নেয়ার জন্য সতর্কতা জারি করেছে। লেবাননের দক্ষিণ সীমান্তে ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহ প্রায় প্রতিদিনই গোলাগুলি বিনিময় করছে, বিশেষ করে ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকে, যেখানে ১২০০ জন ইসরায়েলি নিহত এবং ২৫০ জনকে জিম্মি করা হয়েছিল।
এদিকে, ইসরায়েলি বাহিনী পশ্চিম তীরের টুলকারেম শহরে হামলা চালিয়ে ১৮ জন প্যালেস্টিনিকে হত্যা করেছে। পশ্চিম তীরের শহরগুলোতে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে, বিশেষ করে ৭ অক্টোবরের হামলার পর থেকে।
ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত আক্রমণের জেরে গাজা উপত্যকায় প্রাণ হারিয়েছে ৪১,০০০-এরও বেশি প্যালেস্টিনি, যাদের অধিকাংশ নারী ও শিশু। সূত্র: টাইম ম্যাগাজিন