কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘জুলাই আন্দোলনের প্রথম প্রতিরোধ দিবস’ ঘোষণা


২০২৪ সালের ১১ জুলাই কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনে সাহসিক ভূমিকার স্বীকৃতি হিসেবে দিনটিকে ‘জুলাই আন্দোলনের প্রথম প্রতিরোধ দিবস’ ঘোষণা করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
শুক্রবার বিকেলে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে আয়োজিত “গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার প্রথম প্রতিরোধ দিবস—১১ জুলাই” শীর্ষক স্মৃতির মিনার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ ঘোষণা দেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হায়দার আলী।
বক্তব্যে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, “১১ জুলাই কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল, তা সারাদেশের আন্দোলনকারীদের অনুপ্রাণিত করেছিল। এই দিনে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে সরকারিভাবে সহিংসতা চালানো হয়—আর তার সূচনা হয়েছিল কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই।”
তিনি আরও বলেন, “বিকেল তিনটায় শাহবাগে আমাদের কেন্দ্রীয় কর্মসূচি চলছিল এবং একই সময়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ চলছিল। তখন খবর আসে—কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা হয়েছে। এই সংবাদ ছড়িয়ে পড়তেই আন্দোলন আরও তীব্র হয় এবং বিপুলসংখ্যক মানুষ এতে অংশ নেয়।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনারা সেদিন শুধু কর্মসূচি সফল করেননি, বরং রাত ১১টা পর্যন্ত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে রেখেছিলেন। আপনাদের সাহসিকতা সারা দেশে আন্দোলনকে আরও শক্তিশালী করে তোলে। আমরা বলেছিলাম, ‘বাঁধা দিলে বাধবে লড়াই’—আপনারা সেটির বাস্তব প্রমাণ দিয়েছেন। এই ধারাবাহিকতা থেকেই গণআন্দোলনের জয় নিশ্চিত হয় এবং স্বৈরাচারী শাসনের অবসান ঘটে।”
তিনি বলেন, “এই ১১ জুলাই দিনটিকে ‘প্রথম প্রতিরোধ দিবস’ হিসেবে আমি ঘোষণা করছি। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মিতব্য ‘স্মৃতির মিনার’-এর উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। পাশাপাশি, যেই স্থানে আপনারা মহাসড়ক অবরোধ করে প্রতিরোধের ইতিহাস রচনা করেছিলেন, সেই স্থানে সরকারিভাবে একটি ‘প্রতিরোধ মিনার’ নির্মাণ করা হবে, যাতে সবাই এই ইতিহাস স্মরণে রাখতে পারে।”
উপদেষ্টা আরও জানান, “জুলাই অভ্যুত্থানে শিক্ষার্থীদের অবিস্মরণীয় অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য তিনটি বাস উপহার দেওয়া হবে।”
অনুষ্ঠান শেষে তিনি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ‘জুলাই মিনার’-এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।