কুমিল্লা বিসিকের ময়লা-আবর্জনায় দূষিত হচ্ছে পরিবেশ
ষ্টাফ রিপোর্টার\ কুমিল্লা বিসিক শিল্পনগরীতে বর্জ্য অব্যবস্থাপনার কারণে বিভিন্ন কলকারখানা সংলগ্ন সড়কের পাশেই ফেলা হচ্ছে ময়লা-আবর্জনা। ফলে একদিকে খাদ্য ও বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী উৎপাদনকারি প্রতিষ্ঠান ঘিরে বিসিক এলাকার পরিবেশ দূষণ হচ্ছে, অন্যদিকে বিসিক এলাকায় চলাচলে মালিক, শ্রমিক ও সাধারণ মানুষদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বর্জ্য সমস্যার সমাধান না হওয়ায় ক্ষুব্ধ এখানকার কারখানার মালিক ও শিল্প উদ্যোক্তাসহ সংশ্লিষ্টরা। তারা দ্রæত সমস্যার সমাধানসহ অবকাঠামো উন্নয়নের দাবি জানান।
বিসিক কর্তৃপক্ষ বলছেন, ডাস্টবিনের জন্য নির্দিষ্ট জায়গার ব্যবস্থা না হওয়ায় কলকারখানার বর্জ্য, ময়লা-আবর্জনা সড়কের পাশে ফেলতে হচ্ছে। সমস্যার সমাধানে বিসিকের শিল্প, কলকারখানার মালিকদের সঙ্গে প্রয়োজনে আলোচনা হবে।
কুমিল্লা বিসিক শিল্পনগরী সূত্রে জানা গেছে, ১৯৬০ সালে নগরীর অশোকতলা এলাকার ৫৪ দশমিক ৩৫ একর জায়গা নিয়ে ‘কুমিল্লা বিসিক শিল্পনগরী’ গড়ে ওঠে। এখানে ১৪২টি শিল্প প্লটের মধ্যে আটা, অটোরাইস, মুড়ি, ময়দা, বিস্কুট, মিষ্টি, চানাচুর, সরিষা, ওষুধ, জাল, ক্যাবল, সুতা, অ্যালুমিনিয়ামের পাতিল তৈরিসহ বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী উৎপাদনের ১৩১টি কারখানা চালু আছে। এসব কারখানায় প্রায় ৭ হাজার শ্রমিক কাজ করছেন। এখানে বছরে প্রায় ৩৫০ কোটি টাকার পণ্য উৎপাদিত হয় এবং সরকারের রাজস্ব আসে ১৮ কোটি টাকার বেশি।
অথচ বিশাল এই বিসিক শিল্পনগরীতে বর্জ্য, ময়লা-আবর্জনা ফেলার সঠিক ব্যবস্থাপনা গড়ে ওঠেনি। প্রতিদিন এসব শিল্প কলকারখানার ময়লা আবর্জনা পরিত্যক্ত প্লট সংলগ্ন সড়কের পাশে বা খোলামেলা জায়গায় ফেলা হচ্ছে। প্রতিদিন ময়লা আবর্জনার স্তুূপ জমছে বিসিকে চলাচলের রাস্তার পাশে। এসব ময়লার ভাগাড়ে দিনরাত গরু, ইঁদুর, কুকুর ও বিড়ালের উৎপাত চলছে। ফলে ময়লা ছড়িয়ে পড়ছে সড়কে। ময়লা-আর্বজনা পঁচে গিয়ে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে চারদিকে আর পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। এছাড়া বিসিক কারখানার মালিকরা তাদের কারখানার সামনে সড়কের ওপর ছোট ছোট ডাম্পিং বানিয়ে দিনের পর দিন ময়লা আবর্জনা ফেলে পরিবেশ দূষণ করছেন।
কুমিল্লা ফ্লাওয়ার মিলসের কর্মকর্তা সৈয়দ গোলাম কাদের জানান, বিভিন্ন সমস্যার কারণে বিসিকে শিল্পকারখানা করতে অনেক উদ্যোক্তারা আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। ড্রেনেজে সমস্যার পাশাপাশি ডাস্টবিন সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে। বিসিকে সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা না থাকায় কারখানাগুলোর সামনে সড়কের পাশে ময়লা আবর্জনা স্তুূপ জমছে। এতে পরিবেশ কেবল দূষণই হচ্ছে না, বিসিকের সৌন্দর্যও নষ্ট হচ্ছে। এসব সমস্যার সমাধান দ্রæত হওয়া উচতি।
কুমিল্লা বিসিক শিল্পনগরী কর্মকর্তা বদিউল আলম জানান, এটি সত্যি যে, এখানে ময়লা আবর্জনা ফেলার নির্দিষ্ট স্থান নেই। ফলে বিভিন্ন কলকারখানার বর্জ্য, আবর্জনা যেখানে সুযোগ মিলছে সেখানেই ফেলা হচ্ছে। ইতোপূর্বে আমরা সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে সমন্বয় সভায় বিসিকের ময়লা-আবর্জনা অপসারণসহ ডাস্টবিন নির্মাণের বিষয়ে আলোচনা করেছি। কিন্তু বিষয়টি চূড়ান্ত করা যায়নি। বিষয়টি চূড়ান্ত হলেই ডাস্টবিনের জন্য বিসিকের ভেতর স্থান নির্ধারণের পদক্ষেপ নেয়া হবে। বিসিককে ময়লার ভাগাড় থেকে মুক্ত করতে এবিষয়ে আমরা এখানকার শিল্প, কলকারখানার মালিক, উদ্যোক্তাদের সঙ্গে বসে কথা বলবো।