শনিবার, ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

কোরবানির পরদিন সূর্যোদয়ের আগে পশুর বর্জ্য  অপসারণের নির্দেশ স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর

কোরবানির পরদিন সূর্যোদয়ের আগে পশুর বর্জ্য অপসারণের নির্দেশ স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর

            ষ্টাফ রিপোর্টার\ আসন্ন কোরবানির ঈদে পশু কোরবানির পরদিন সূর্যোদয়ের আগে বর্জ্য অপসারণের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে এবারও নির্দিষ্ট স্থানে পশু কোরবানি দিতে হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।

            গত বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মেলনকক্ষে এক সভায় সাংবাদিকদের তিনি এ তথ্য জানান। ঈদুল আজহা উপলক্ষে পশুর হাট ব্যবস্থাপনা, নিদিষ্ট স্থানে পশু কোরবানির বাস্তবায়ন করা ও কোরবানির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে সার্বিক প্রস্তুতি পর্যালোচনার এ সভার আয়োজন করা হয়। সভায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রতিনিধি, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের জায়েদা খাতুনসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

            মন্ত্রী বলেন, আসন্ন কোরবানির ঈদে পশু কোরবানির পরদিন সূর্যোদয়ের আগে পশুর বর্জ্য অপসারণ করতে হবে। সম্ভব হলে বর্জ্য রাতের মধ্যে অপসারণ শেষ করতে হবে। ঈদের দিন সকাল ৮টা থেকে কোরবানি শুরু হবে। এর পরদিন অর্থাৎ তার আগের ২৪ ঘণ্টা সময় দেয়া হলেও এবার নিদিষ্ট করে দিয়েছি। সূর্য ওঠার আগে বর্জ্য অপসারণ করতে হবে। এরপরে যেন কোথাও কোনো বর্জ্য না দেখি। এরপর যদি কোনো বর্জ্য থেকে যায় সেটা পরিবেশ দূষণ করবে না। আমি মনে করি দুই সিটি করপোরেশন সফলতার পরিচয় দেবে। এরপরেও যদি কোনো কোরবানি করে থাকে সেটাও অপসারণ করতে হবে। কেননা ঈদের পর কয়েক দিন পশু কোরবানি হয়ে থাকে। সেজন্য পরের কয়েকদিন একটু বেশি নজর দিতে হবে।

            তিনি বলেন, আমি জানি আপনারা তার আগে করে ফেলবেন। তারপরও সূর্য ওঠার পরে কোথাও যেন বর্জ্য পরিলক্ষিত না হয়। ঢাকা শহরে ২৫ লাখ পশু কোরবানি হবে। এত বড় একটা কর্মযজ্ঞে কোথাও যদি একটু সময়ক্ষেপণ হয় সেটা মেনে নেওয়া যায়। এর বেশি হলে সহ্য করা যায় না। ঈদের কয়েকদিন আন্তরিকতার সঙ্গে যারা কাজ করেন তাদের এ একটু-আধটু ক্রুটি মেনে নেয়া যায়। অতীতেও প্রতিকূলতা ছিল তারমধ্যেই কাজ করেছেন। সারা বিশ্বেই এটা হয়ে থাকে। এবছরও কি দুই সিটি করপোরেশন পশু কোরবানির জন্য নিদিষ্ট স্থান নির্বাচন করে দেবে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, অতীতে তারা সামাজিক ব্যবস্থাপনার মধ্যে দিয়ে করেছে। বিশেষ করে করোনার সময়ে করা হয়েছিল। এবার কিছু কিছু এলাকায় সামাজিকভাবে নির্দিষ্ট স্থানে পশু কোরবানি করবে। একই সঙ্গে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করবে সেই সিদ্ধান্ত দেয়া হয়েছে। জাল নোট শনাক্তকরণ মেশিন কি দেশের সব পশুর হাটে থাকবেএমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, জাল নোট শনাক্তকরণে যে মেশিন সেটা মোবাইল মেশিন। ফলে সব জায়গায় এ মেশিন থাকবে। ঈদের আগে অতীতে যেসব সিদ্ধান্ত হয়েছে সেগুলো কতটুকু বাস্তবায়ন হয়েছে। না হলে কেন হলো না সে বিষয়ে আলোচনা করেছেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ পর্যন্ত যতগুলো সিদ্ধান্ত হয়েছে। সফলতার সঙ্গে তা বাস্তবায়ন করেছে দুই সিটি। আমরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বর্জ্য অপসারণের কথা বলেছি, সেটা আগের বছরগুলোতে করে দেখিয়েছে তারা।এখানে ব্যর্থতার কোনো নজির নেই। এমন খবরও প্রচার হয়নি। তিনি বলেন, রেল ও সড়ক কর্তৃপক্ষের অব্যবহৃত স্থান, কলোনি, রাজউকসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের জায়গা অস্থায়ীভাবে পশু কোরবানির স্থান হিসেবে ব্যবহারের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানকে সহায়তা করবে। স্থানীয় প্রশাসন ও স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহ এলাকাভিত্তিক পশুর হাট ও পশু কোরবানির নির্দিষ্ট স্থানের তালিকা জনসাধারণের জ্ঞাতার্থে ব্যাপকভাবে প্রচার করবে। এক্ষেত্রে স্থানীয় কেবল টিভি অপারেটরদের সহায়তা গ্রহণ করা যেতে পারে। তিনি বলেন, এসব সিদ্ধান্ত জেলা প্রশাসকরা পৌর মেয়র, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের নিয়ে ভার্চুয়াল সভার মাধ্যমে বাস্তবায়ন নিশ্চিত করবেন। প্রয়োজনে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করবেন। একই সঙ্গে স্থানীয় পর্যায়ে মসজিদের ইমামরা নির্দিষ্ট স্থানে পশু কোরবানি এবং কোরবানির বর্জ্য অপসারণ করার বিষয়ে জনসচেতনতামূলক বক্তব্য প্রদান করবেন। কোরবানির সাথে সাথে যেন পশুর চামড়ায় লবণ দেয়া হয়, তা নিশ্চিত করতে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করা যেতে পারে।

Share This