চৌদ্দগ্রামে এবার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ১২,২৯৩ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ
মোঃ আবদুল মান্নান\ কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রামে চলতি মৌসুমে ১২ হাজার ২৯৩ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। গতবারের লক্ষ্যমাত্রাকে অতিক্রম করে এবার প্রায় ৪৩ হেক্টর বাড়তি জমিতে কৃষকরা এই বোরো আবাদ করেন। কৃষকরা আশা করছেন যে, আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে এবার পুরা চৌদ্দগ্রাম উপজেলা এলাকায় বাম্পার বোরো ধানের ফলন হতে পারে।
উপজেলা কৃষি অফিস বলেছেন, চৌদ্দগ্রাম পৌরসভাসহ উপজেলার ১৩ ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রান্তিক কৃষকরা আবাদি জমিগুলোতে ব্রিধান ২৮, ব্রিধান ২৯, ব্রিধান ৫৮, ব্রিধান ৮৯, ব্রিধান ৯২, ব্রিধান ৯৫, ব্রিধান ১০০ ও হাইব্রিড এসএলএলডি এইচসহ একাধিক জাতের আবাদ করে গত বছরের লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করেন।
বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কনকনে তীব্র শীত উপেক্ষা করে ফালগুনের শুষ্ক মৌসুমে প্রতিদিন কাঁক ডাকা ভোরেই লাঙ্গল জোয়াল কাঁধে নিয়ে কৃষকরা নেমে পড়েছেন জমিতে স্বপ্নের সোনালি ফসল বোনাতে। আর আটি বাধা ধানের কচি চারাগুলো কাদাযুক্ত জমিতে আপন হস্তে রোপণ করছেন। অন্যদিকে সময়মত ‘সেচের পানি পাওয়ায় উপজেলার প্রান্তিক কৃষকরা এবার তাড়াতাড়ি বোরো আবাদে নেমে পড়েছেন। আবার কিছু এলাকায় সরিষা থাকায় একটু বিলম্বিত হচ্ছে বোরোর আবাদে। যার ফলে এখন পর্যন্ত কৃষকের আবাদি জমির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১১,০৬৪ হেক্টর। বাকি জমিগুলোতে সরিষা উঠে গেলে, আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে কৃষকরা বোরো লাগাতে পারবেন বলে জানিয়েছে উপজেলা কৃষি অফিস।
মুন্সির-হাট ইউনিয়নের ফেলনা গ্রামের কৃষক আলী মিয়া ও ফকির মিয়া বলেন, ভোর বেলায় জমিতে বদলা নিয়ে বোরো ধানের চারা লাগাতে এসেছি। প্রায় ৮০ শতক জমিতে এবার ধানের চারা লাগাচ্ছি। লোডশেডিং যদি না হয় তাহলে সময়মত সেচের পানি পাব। কিন্তু দেখা গেছে, অতিরিক্ত লোডশেডিং আর চৈত্রের তীব্র খরাতে মাঠ ফেটে চৌঁচির হয়ে যায়। তখন আবাদি ধানের চারা নিয়ে চরম বেকায়দায় পড়তে হয় আমাদেরকে। অলকরা ইউনিয়নের কুঞ্জ-শ্রীপুর গ্রামের কৃষক আক্কাছ ও মোঃ সোহেল বলেন, বোরো সিজনে বৃষ্টি বাদল কম হওয়ায় সেচের পানি পেতে দেরি হয়। এসময় বৈদ্যুতিক জটিলতা থাকে বেশি। তবুও সেচ পাম্প মালিকদেরকে প্রতি কানি জমিতে ৩৫০০-৪০০০ টাকা দিতে হয়। বোরোতে খরচ অনেক বেশি। এতে কুলিয়ে উঠা আমাদের পক্ষে প্রায় অসম্ভব।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোঃ যোবায়ের হোসেন বলেন, উফশী প্রণোদনা হিসেবে এবার উপজেলার প্রায় ৪ হাজার ৮শ’ জন কৃষকের প্রত্যেককে ৫ কেজি বীজ, ১০ কেজি ডিএপি ও ১০ কেজি এমওপি সার দেয়া হয়েছে এবং হাইব্রিড প্রণোদনার আওতায় ২ হাজার ৩শ’ জনকে ২ কেজি করে বীজ দেয়া হয়েছে। আর আমাদের বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা হলো ১২,২৯৩ হেক্টর জমি। আশা করি, এবার আমাদের অর্জিত লক্ষ্যমাত্রা পুরণ হবে।