সোমবার, ২৩শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

জনশুমারি ও গৃহগণনা-২০২২ কর্মসূচির চূড়ান্ত জাতীয় প্রতিবেদন  সাধারণ শিক্ষায় অংশগ্রহণ কমেছে, বেড়েছে কারিগরি ও ধর্মীয়তে

জনশুমারি ও গৃহগণনা-২০২২ কর্মসূচির চূড়ান্ত জাতীয় প্রতিবেদন সাধারণ শিক্ষায় অংশগ্রহণ কমেছে, বেড়েছে কারিগরি ও ধর্মীয়তে

Views

            ষ্টাফ রিপোর্টার\ গত এক দশকে দেশে কৃষিতে কর্মসংস্থান কমেছে ৯ শতাংশের বেশি। একই সময়ে শিল্প ও সেবা খাতে কর্মসংস্থান বেড়েছে। শিল্প খাতে কর্মসংস্থান বেড়েছে সাড়ে ৩ শতাংশ আর সেবা খাতে বেড়েছে ৫ দশমিক ৬৬ শতাংশ। এ ছাড়া এ সময়ে গৃহস্থালি কাজে অংশগ্রহণ কমেছে ৪ দশমিক ৭ শতাংশ। একই সঙ্গে সাধারণ শিক্ষায় অংশগ্রহণ কমেছে, বেড়েছে কারিগরি ও ধর্মীয় শিক্ষায় অংশগ্রহণ।

জনশুমারি ও গৃহগণনা-২০২২ কর্মসূচির চূড়ান্ত জাতীয় প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনটি গতকাল মঙ্গলবার (২৮শে নভেম্বর) আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়েছে। এর আগে ২০২২ সালে জনশুমারির প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হলেও সেখানে জাতীয় পর্যায়ের বিস্তারিত কোনো তথ্য ছিল না। এবারের প্রতিবেদনে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে।

            প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে কর্মরত ১০ বছরের বেশি বয়সীদের ৩৭ দশমিক ৯০ শতাংশ কৃষি খাতে যুক্ত রয়েছে। ২০১১ সালে প্রকাশিত আদমশুমারির জাতীয় প্রতিবেদনে কৃষিতে ৪৭ দশমিক ০৩ শতাংশ মানুষের কর্মরত থাকার কথা বলা হয়েছিল। সে হিসাবে কৃষিতে কর্মসংস্থান কমেছে ৯ দশমিক ১৩ শতাংশ।

            অন্যদিকে, শিল্প খাতে কর্মসংস্থান বেড়েছে। একই সময়ে শিল্পে কর্মরত রয়েছে ১৮ দশমিক ৪০ শতাংশ মানুষ। ২০১১ সালের জনশুমারির জাতীয় প্রতিবেদনে এটি ছিল ১৪ দশমিক ৯২ শতাংশ। অর্থাৎ শিল্পে কর্মসংস্থান বেড়েছে ৩ দশমিক ৪৮ শতাংশ।

গত দশ বছরে সেবা খাতেও কাজের সুযোগ বেড়েছে। এ সময়ে একই বয়স গ্রæপের মানুষের মধ্যে সেবা খাতে যুক্ত রয়েছে ৪৩ দশমিক ৭০ শতাংশ। যেখানে দশ বছর আগে এ খাতে যুক্ত ছিল ৩৮ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ মানুষ। সে হিসাবে এ খাতে কর্মসংস্থান বেড়েছে ৪ দশমিক ৭ শতাংশ। গত দশ বছরে অবশ্য গৃহস্থালি কাজে মানুষের সরাসরি অংশগ্রহণ কমেছে। দশ বছর আগে যেটি ছিল ৩৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ; সেটি ২০২২ সালে কমে হয়েছে ২৮ দশমিক ৬৩ শতাংশ।

            সবশেষ জনশুমারির জাতীয় প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, পাঁচ বছর বা এর চেয়ে বেশি বয়সীদের সাধারণ শিক্ষায় অংশগ্রহণ কমেছে। ২০১১ সালের আদমশুমারির তথ্য অনুযায়ী, সাধারণ শিক্ষায় অংশগ্রহণ ছিল ৯৩ দশমিক ৭১ শতাংশ। আর গত বছরের জনশুমারির সবশেষ তথ্য বলছে, সাধারণ শিক্ষায় অংশগ্রহণ কমে হয়েছে ৮৯ দশমিক ২৬ শতাংশ। অর্থাৎ কমেছে ৪ দশমিক ৪৫ শতাংশ।

            কারিগরি শিক্ষায় অংশগ্রহণ সামান্য বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে ধর্মীয় শিক্ষায় অংশগ্রহণ। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী ধর্মীয় শিক্ষায় অংশগ্রহণ ছিল ৫ দশমিক ৫৮ শতাংশ। আর তা ২০২২ সালের জনশুমারিতে বেড়ে হয়েছে ৭ দশমিক ১৯ শতাংশ।

এক দশকের ব্যবধানে পরিবারও ছোট হয়ে হয়েছে। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, যেখানে প্রতি পরিবারের সদস্য সংখ্যা ছিল গড়ে ৪ দশমিক ৪৪ জন, সেখানে ২০২২ সালের জনশুমারিতে অনুযায়ী, তা কমে হয়েছে ৩ দশমিক ৯৮ জন। তবে এ সময়ে দেশে গৃহ বা খানার সংখ্যা বেড়েছে। দশ বছর আগে যেখানে দেশে গৃহস্থালির সংখ্যা ছিল ৩ কোটি ২১ লাখ ৭৩ হাজার ৬৩০টি, সেখানে ২০২২ সালের জনশুমারিতে তা হয়েছে ৪ কোটি ১০ লাখ ৮ হাজার ২১৭টি। বেড়েছে ৮৮ লাখ ৩৪ হাজার ৫৮৭টি।

            এসব তথ্য–উপাত্তের বাইরেও জনশুমারির জাতীয় প্রতিবেদনে প্রতিটি জেলা–উপজেলাভিত্তিক তথ্যও তুলে ধরা হয়েছে। এর মধ্যে দেশে মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা থেকে শুরু করে, মোবাইল ব্যাংকিং, ব্যাংকিং লেনদেনসহ বিভিন্ন আর্থ–সামাজিক তথ্যও রয়েছে। এটি মঙ্গলবার পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নানের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করেছে জনশুমারি ও গৃহগণনা প্রকল্প কার্যালয়।

Share This

COMMENTS