রবিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

নাঙ্গলকোটের বক্সগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ে ভবন সংকটে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত

নাঙ্গলকোটের বক্সগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ে  ভবন সংকটে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত
৪১ Views

            আবুল কাশেম গাফুরী\ কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার ঐতিহ্যবাহী বক্সগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষ সংকটে সহ¯্রাধিক ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে চরম বিপাকে পড়ছেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে বসে ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাস কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। অত্যন্ত মনোরম পরিবেশে গড়ে তোলা প্রাচীন এ বিদ্যালয়ে লেখাপড়ার সুবর্ণ সুযোগ থাকা সত্তে¡ও নানাবিধ সমস্যার কারণে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা আধুনিকতার এই যুগে সুশিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

            ১৯৪৬ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রাচীন এ বিদ্যালয়ে অধ্যায়ন করে অনেক শিক্ষার্থী এখন দেশের সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উচ্চ পদস্থসহ বিভিন্ন পদে কর্মরত রয়েছেন। ঐতিহ্যবাহি এ বিদ্যাপীঠটি আজ ঐতিহ্য হারাতে বসেছে। বহু আগে নির্মিত বিদ্যালয়ের ভবনগুলো বর্তমানে ব্যবহার অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। পুরনো দু’টি ভবনের অবস্থা খুবই খারাপ। ভবনগুলোতে এতদিন শিক্ষকমন্ডলী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনা করলেও বর্তমানে একেবারে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বর্তমানে জরাজীর্ণ ভবনে ঝুঁকিপুর্ণভাবে ক্লাস পরিচালনার কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। উক্ত ভবনের ছাদ দিয়ে পলেস্তারা খসে পড়ছে। ক্লাস চলাকালীন সময়ে ছাত্র-ছাত্রীদের গায়ের ওপর পলেস্তারা পড়ে দুর্ঘটনা ঘটে এমন দৃষ্টান্ত রয়েছে। বৃষ্টি হলেই ছাদ দিয়ে পানি পড়ে।

            বিদ্যালয়টিতে লেখাপড়ার মানও সন্তোষজনক। বিদ্যালয়টিতে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম নেই। শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীদের পর্যাপ্ত বাথরুম নেই, ছাত্রীদের জন্য নেই কমন রুম, রয়েছে নাম মাত্র একটি শহীদ মিনার, বিদ্যালয়ের সবপাশে নেই কোনো সীমানা প্রাচীর, ডিজিটাল কম্পিউটার ল্যাব নেই, বিজ্ঞানাগার ও পাঠাগারের অবস্থা খুবই জরাজীর্ণ। এখানে নেই ডিজিটাল কম্পিউটার ল্যাব। রয়েছে বিশুদ্ধ পানির অভাব। নেই কোন নামাজ পড়ার স্থান। আছে শিক্ষক ও কর্মচারী সংকট। স্কুল মাঠটিতে গর্তের কারণে বর্ষা মৌসুমে মাঠে পানি জমে থাকে। ফলে ব্যাহত হয় খেলাধুলাসহ ও স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম। এদিকে বিদ্যালয়ের জায়গা এবং ভবনগুলো খালের পাড়ে অবস্থিত হওয়ায় প্রতি বছর বর্ষার সময় পানির তোড়ে পেছনের অংশ ভেঙে যায়।

            অভিভাবকদের সাথে কথা বললে তারা জানান, বিদ্যালয়ের ভবনসহ অবকাঠামোগত অনেক সমস্যা রয়েছে। ফলে শিক্ষার্থীদের পাঠদানে অনেক সমস্যা সৃষ্টি হয়। বিগত দিনে বিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নয়ন নিয়ে কেউ এগিয়ে আসে নাই। তারা শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণসহ সার্বিক উন্নয়ন করার দাবি জানান।

            প্রধান শিক্ষক আলী আশ্রাফ বলেন, বিদ্যালয়ে ক্লাসরুম সংকটের কারণে ক্লাস কার্যক্রম বিঘিœত হচ্ছে। অবকাঠামোগত বিভিন্ন সমস্যায় শিক্ষক শিক্ষার্থীদের সমস্যার মাধ্যমে পরিচালিত হতে শিক্ষা কার্যক্রম। বিদ্যালয়ের সভাপতি সাংবাদিক মজিবুর রহমান মোল্লা বলেন, প্রাচীনতম এ বিদ্যালয়ের যেভাবে অবকাঠামোগত উন্নয়ন হওয়ার কথা ছিল সেভাবে হয়নি। তাই এখানে শিক্ষার্থীদের পাঠদানে ব্যাপক সমস্যায় পড়তে হয়। ঐতিহ্যবাহি এ বিদ্যালয়ের ঐতিহ্য ফিরে আনতে সকল ধরণের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি বিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নয়নে এগিয়ে আসার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতিও আহবান জানান।          উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইউনুছ বলেন, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে এ উপজেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জরাজীর্ণ ভবনের তালিকা চাওয়া হয়েছে। আমরা ১৫-১৬টি প্রতিষ্ঠানের নামের তালিকা প্রেরণ করেছি। তার মধ্যে বক্সগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের নামও তালিকায় রয়েছে।

            উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আল আমিন সরকার বলেন, বক্সগঞ্জ বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণের জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তালিকা প্রেরণ করা হবে। পাশাপাশি অবকাঠামোগত উন্নয়নেরও সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।

Share This