নিজেদের শক্তিতেই সরকারকে সরাতে হবে: মির্জা ফখরুল
ষ্টাফ রিপোর্টার\ বিদেশী নিষেধাজ্ঞার খবরে খুশি না হয়ে নিজেদের শক্তিতেই সরকার সরাতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, দুর্নীতি নিয়ে আমরা হাজার বার বলছি, গোটা দুনিয়া বলছে যে, বর্তমান শাসকগোষ্ঠি আকুন্ঠ দুর্নীতিতে ডুবে আছে। তারা (সরকার) অস্বীকার করে যে তারা দুর্নীতি করে না। এখন দেখেন, খবর এসেছেন যে, সাবেক সেনা প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদসহ তার পরিবারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। কেনো? দুর্নীতি এবং গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রভাবিত করা এবং জনগণের বিশ্বাস ক্ষুন্ন করায়। এতে অনেকেই খুশি হবেন, আজিজের (সাবেক সেনা প্রধান আজিজ আহমেদ) নিষেধাজ্ঞা এসেছে। আমি মনে করি এটা আরেকটা বিভ্রান্ত করা। এরকম বিভ্রান্ত হচ্ছি আমরা সবসময়, যখন র্যাবের বিরুদ্ধে হয়েছে, পুলিশের নয় জন কর্মকর্তা যারা র্যাবে ছিলেন তাদের বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞা হয়েছিলো। এতে করে কি তাদের (সরকার) সেই ভয়ংকর যাত্রা বন্ধ হয়েছে? বন্ধ হয়নি।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাবেক প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র প্রবেশে অযোগ্য ঘোষণার খবরের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে গতকাল মঙ্গলবার এক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। সেগুন বাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপার একাংশের উদ্যোগে দলটির প্রতিষ্ঠাতা শফিউল আলম প্রধানের সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকীর উপলক্ষে এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
সরকার যে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে একের পর এক অপকর্ম করে যাচ্ছে তার চিত্র তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, আপনারা রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করছেন, ব্যবহারের চেষ্টা করেছেন সেনাবাহিনীকে, বিচার বিভাগকে, প্রশাসনকে এবং আজকে ত্রাস সৃষ্টি করেছেন, ভয়ের রাজত্ব তৈরি করেছেন। আজকে গণমাধ্যম মন খুলে, প্রাণ খুলে রিপোর্ট লেখতে পারেন না, প্রতিটি শব্দ লেখতে চিন্তা করতে হয় এরজন্য জেলে যেতে হবে কিনা? এরজন্য মামলা খেতে হবে কিনা? এই হচ্ছে দেশের বর্তমান অবস্থা। এজন্য জনগণকে আরো ঐক্যবদ্ধ করে রাস্তায় নেমে সোচ্চার হতে হবে। রাস্তায় নামা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই, আমরা অন্য কোনো পথ চিনি না। আমাদেরকে প্রকাশ্যে সামনে এসেই লড়াইটা করতে হবে।
তিনি বলেন, অনেক সময় ভুল ব্যাখ্যা করা হয় যে আমরা নাকি উখাত করতে চাই। আমরা উখাতের কথা বলিনি, উখাত করতে যাবো কেনো? আমরা ভোটের অধিকার চাই, ভোটের মধ্য দিয়ে তোমাদেরকে পরাজিত করব। সেই ভোটের অধিকার অর্জন করার জন্য আমাদের সবাইকে আরও ত্যাগ স্বীকার করতে হবে।
মালয়েশিয়ার আনোয়ার ইব্রাহিমের উদাহরণ টেনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আসুন আমরা না চাইলে কোনো কিছু দেবে না আমাদের। অবশ্যই অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ আরও হতে হবে, আন্দোলনকে তীক্র থেকে তীব্রতর করতে হবে। আমরা যুগপৎ আন্দোলনে জোট করেছি, বিভিন্ন জোট, আমরা সবাইকে আমন্ত্রণ জানিয়েছি। আমরা সকল রাজনৈতিক দলের সাথে কথা বলেছি, একই সঙ্গে কাজ করেছি। আন্দোলনের প্রক্রিয়া বলতে কি? এই জোট আরও শক্তিশালী হবে এবং অদূর ভবিষ্যতে এই ভয়াবহ দানবীয় শক্তিটাকে পরাজিত করে গণতান্ত্রিক শক্তিকে প্রতিষ্ঠিত করব এই বিশ্বাস আমাদের আছে।
জাগপার সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমানের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব এসএম শাহাদাতের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, এনডিপির চেয়ারম্যান আবু তাহের, গণদলের এটিএম গোলাম মাওলা চৌধুরীসহ উলামা দল, কৃষক দল, জাগপার নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।