শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

নির্বাচনকে ঘিরে সেনাবাহিনী মাঠে  নামতে পারে ২৯শে ডিসেম্বর থেকে

নির্বাচনকে ঘিরে সেনাবাহিনী মাঠে নামতে পারে ২৯শে ডিসেম্বর থেকে

            ষ্টাফ রিপোর্টার\ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে সেনাবাহিনী মাঠে নামার সম্ভাবনা আগামী ২৯শে ডিসেম্বর থেকে। সশস্ত্র বাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার জানিয়েছেন যে, ১০ই জানুয়ারি পর্যন্ত ১৩ দিনের জন্য এ বাহিনী মাঠে থাকতে পারেন।

গত সোমবার (১১ই ডিসেম্বর) নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা জানান। এর আগে তিনি কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করেন।

            প্রকাশ থাকে যে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩৫ হাজারের বেশি সেনা সদস্য মোতায়েন করা হয়েছিল। এবার যদি আরো বেশি প্রয়োজন হয়, সেভাবেই মোতায়েন করা হতে পারে। অবশ্যই সব সময়ই প্রস্তুতি আছে। গতবার ৩৮৮ উপজেলায় ছিল।

            পিএসও বলেন, তারা (নির্বাচন কমিশন) চাচ্ছে সেনা মোতায়েন হোক। কীভাবে মোতায়েন হবে, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তারা রাষ্ট্রপতির কাছে রিকমেন্ডেশন করবে। রাষ্ট্রপতি যদি সিদ্ধান্ত দেন, তবে অবশ্যই সেনা মোতায়েন হবে। তারা যেভাবে সহায়তা চাইবে, সেভাবেই আমরা সহায়তা করব।

            তিনি আরও বলেন, তারা (ইসি) চাচ্ছে একটি সুন্দর সুষ্ঠু, ফ্রি-ফেয়ার একটি নির্বাচন হোক। এ বিষয়ে আমারও সামান্য সন্দেহ নেই। তারা অত্যন্ত সিরিয়াস। আমরা সশস্ত্র বাহিনী যদি ডেপ্লয় (মোতায়েন) হই, আমরা অবশ্যই সাহায্য-সহায়তা করব। এটিই ছিল প্রারম্ভিক আলোচনা। রাষ্ট্রপতি অনুমতি দিলে আমরা অতীতের মতোই আবার ডেপ্লয় হবো। ইন এইড টু সিভিল পাওয়ারের আওতায় মোতায়েন হবো।

            এর আগে ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম বলেছেন, সশস্ত্র বাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, জননিরাপত্তা বিভাগ ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবদের সঙ্গে নির্বাচন কমিশন আলোচনা করেছেন। এক্ষেত্রে সশস্ত্র বাহিনী আগামী ৭ই জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কী করে সহায়তা করতে পারে- তা নিয়েই আলোচনা হয়েছে।

মুরাদনগরের ২০ গ্রামের মানুষের যাতায়াতে একমাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকো

            নিজস্ব প্রতিনিধি\ বাঁশ পুরনো হয়ে গেলে বা ভেঙে গেলে গ্রাম থেকে টাকা তুলে নতুন বাঁশ দিয়ে সাঁকোটি মেরামত করে চলাচলের উপযোগি করা হয়। গত ৫২ বছর ধরে এভাবেই চলছে ২০ গ্রামের প্রায় দু’লাখ মানুষের পারাপার। তাদের দুর্ভোগ লাগবে অনেকেই প্রতিশ্রæতি দিলেও কেউ কথা রাখেনি।

            কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরাবাজার থানার বাঙ্গরা পশ্চিম ইউনিয়নের ধনপতিখোলা ও দৌলতপুর সড়কের পাশে আর্সি নদীর ওপর নির্মিত ওই সাঁকোটি দিয়ে চরম ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে সব শ্রেণি পেশার মানুষ। কারণ বাঁশ দিয়ে তৈরি প্রায় ২শ’ ফুট লম্বা সাঁকোই তাঁদের একমাত্র ভরসা।

            জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো দিয়ে পারাপারের সময় পানিতে পড়ে আহত হওয়ার ঘটনাও ঘটছে অহরহ। বাঙ্গরা পশ্চিম ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামের কৃষক কদম আলী আক্ষেপ করে বলেন, নির্বাচন এলেই এলাকার জনপ্রতিনিধি চেয়ারম্যান ও মেম্বার এখানে সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রæতি দেন। কিন্তু ভোটে পাস করার প্রতিশ্রæতির কথা তাঁদের আর মনে থাকে না। দেশ স্বাধীনের পরের বছর বাঁশের সাঁকো দেয় গ্রামবাসি। কত জনপ্রতিনিধি চেয়ারম্যানরা-মেম্বার আসলো কিন্তু কেউ কথা রাখেনি।

            স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এলাকাবাসীর চাঁদায় নির্মিত বাঁশের সাঁকো দিয়ে ওই নদী পারাপার হয় বাঙ্গরা পশ্চিম ইউনিয়নের ধনপতিখোলা, কালারাইয়া, মোহাম্মদপুর, ঘোড়াশাল, সোনাকান্দা, জোগেরখিল, মেটংঘর, দৌলতপুর গ্রামের মানুষ। এছাড়া রোয়াচালা, কুড়–ন্ডী, পিপিড়িয়াকান্দা, চুলুড়িয়া, বড়িয়াচুড়া, কুড়াখাল, কালীসিমা, পেন্নাই, দিঘিরপাড়, পাজিরপাড়, কাউইন্নামুড়ি, বৃষ্ণপুর, শ্রীকাইল, চন্দনাইল, রামচন্দ্রপুর, বি-চাপিতলাসহ উপজেলার উত্তর অঞ্চলের লোকজনের বাঙ্গরা বাজার থানা সদরের মধ্যে স্থলপথে যোগাযোগ করতে হলে প্রায় ৬ কিলোমিটার সড়ক ঘুরে আসতে হয়। আর্সি নদীটি কালারাইয়া ও ধনপতিখোলা গ্রামের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়ায় ২ পাশের ২০টি গ্রামের ২ লক্ষাধিক মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে এবং বাঙ্গরা বাজার থানা সদরে আসতে হচ্ছে।

            খোষঘর গ্রামের কলেজছাত্র নজরুল জানান, ব্রিজের জন্য আমাদের কয়েকটি গ্রামের মানুষদের দুর্ভোগের শেষ নেই। দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করে ভয়ে ভয়ে পার হতে হয় সাঁকোটি। প্রায় সময় অনেক শিক্ষার্থীরা পারাপারের সময় সাঁকো থেকে পড়ে আহত হচ্ছে। এতে করে অনেক শিক্ষার্থী নিয়মিত স্কুলে যায় না।

            উপজেলার কালারাইয়া গ্রামের কৃষক বাতেন মিয়া বলেন, যুদ্ধের আগে এই নদীর পার হতাম নৌকা দিয়ে। গত প্রায় ৫/৬ মাস আগে বাজারে যাওয়ার জন্য ওই সাঁকো পার হতে গিয়ে নিচে পড়ে গিয়ে কোমরে ব্যাথা পেয়েছি। এরপর থেকেই এই সাঁকো পার হতে আমার খুবই ভয় হয়। শিক্ষার্থী নূরুল ইসলাম ও মো. সফিক মিয়া বলেন, নড়বড়ে ওই সাঁকো পার হয়ে বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসার সময় প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো শিক্ষার্থী পানিতে পড়ে যায়।

            ধনপতিখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ তৌহিদ মিয়া বলেন, প্রতিদিন বিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী ওই বাঁশের সাঁকো দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাওয়া-আসা করছে। এখানে একটি স্থায়ী সেতু নির্মাণ করা হলে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ এলাকার ২০টি গ্রামের প্রায় ২ লাখ লোকের ভোগান্তির অবসান হতো।

            বাঙ্গরা পশ্চিম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বাহার খান বলেন, এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি আর্সি নদীর উপর একটি সেতু নির্মাণের। আমি অনেক বার এমপি-মন্ত্রীর কাছে গিয়েও বরাদ্দ পাইনি। সেতুটি নির্মিত হলে মুরাদনগর উপজেলা উত্তর অঞ্চলের ২০ গ্রামের লোকদের দুর্ভোগ কমবে। আরও উন্নত হবে তাদের জীবনমান।

            মুরাদনগর উপজেলা স্থানীয় সরকার অধিদপ্তরের প্রকৌশলীর রায়হানুল আলম চৌধুরী বলেন, ওখানে একটি ব্রিজের প্রস্তাব আমরা অধিদপ্তরে পাঠিয়েছি। ডিজাইন চলমান আছে। অচিরেই অনুমোদন হয়ে যাবে।

Share This