পবিত্র আশুরা আজ: ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যে পালিত হচ্ছে কারবালার শোকাবহ স্মৃতি


আজ সারা দেশে যথাযোগ্য মর্যাদা ও গভীর ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে পবিত্র আশুরা—হিজরি ১৪৪৭ সালের মহররমের ১০ তারিখ। এই দিনটি কারবালার হৃদয়বিদারক ট্র্যাজেডির সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত; ফোরাতের তীরে হযরত ইমাম হোসাইন (রা.) তাঁর পরিবার ও ৭২ জন সঙ্গীকে নিয়ে সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে ইয়াজিদের বাহিনীর হাতে শাহাদাত বরণ করেন (৬৮০ খ্রিস্টাব্দ)।
কারবালা প্রান্তরে তাঁদের আত্মত্যাগ ইসলামি ইতিহাসে শান্তি, ন্যায় আর সম্প্রীতির চিরভাসমান দীপশিখা হয়ে আছে। এ দিনটি মুসলিম উম্মাহর কাছে শুধু শোকেরই নয়, নৈতিক দৃঢ়তা ও মানবিক আদর্শ রক্ষার গৌরবময় স্মারকও।
পবিত্র আশুরার প্রাক্কালে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এক বাণীতে কারবালার শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। তিনি বলেন, ‘আশুরা মুসলিম উম্মাহর জন্য এক একইসঙ্গে শোকাবহ ও তাৎপর্যপূর্ণ দিন। কারবালার মরুতে যাঁরা ইসলামের সত্য ও শান্তির পতাকা রক্ষায় প্রাণ উৎসর্গ করেছেন—হযরত ইমাম হোসাইন (রা.) ও তাঁর সহাবস্থ সকল শহীদের প্রতি আমি গভীর শ্রদ্ধা জানাই।’
তিনি আরও উল্লেখ করেন, দুরাচারী শাসকের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো ওই ত্যাগ মানবজাতিকে অনাগতকাল সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার অনুপ্রেরণা জোগাবে। হাদিসের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি জানান, রাসুলুল্লাহ (সা.) আশুরার উপলক্ষে দুটি রোজা পালনের ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছেন। ‘আসুন,’—বাণীতে আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার—‘আমরা এ দিনের মহিমা অনুধাবন করে সৎকর্মে মনোনিবেশ করি এবং সাম্য, শান্তি ও ন্যায়ের সমাজ বিনির্মাণে ঐক্যবদ্ধ হই।’
পবিত্র আশুরা উপলক্ষে আজ সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। বাংলাদেশ বেতার, বিটিভি ও বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলো আশুরার তাৎপর্য তুলে ধরে বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করছে, আর জাতীয় ও অনলাইন সংবাদমাধ্যমগুলো প্রকাশ করছে বিশেষ প্রতিবেদন। বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ, ইসলামিক ফাউন্ডেশনসহ দেশের বিভিন্ন মসজিদ ও ইসলামি প্রতিষ্ঠানে দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে, যেখানে কারবালার শিক্ষাকে তুলে ধরে মুসলিম উম্মাহর শান্তি ও অগ্রগতি কামনা করা হবে।