পশ্চিমা দেশগুলোতে হামলার বিষয়ে রাশিয়া পিছপা হবে না: পুতিন
ইউক্রেন যুদ্ধ ক্রমেই জটিল আকার ধারণ করছে। যদিও এটি মূলত ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে সংঘটিত, তবুও পরোক্ষভাবে এতে জড়িয়ে পড়েছে বিভিন্ন দেশ। এই পরিস্থিতিকে বৈশ্বিক যুদ্ধের বৈশিষ্ট্য বলে উল্লেখ করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, প্রয়োজন হলে রাশিয়া পশ্চিমা দেশগুলোতে হামলা চালাতে পিছপা হবে না।
ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ও পাল্টা আঘাত
গত মঙ্গলবার ও বুধবার ইউক্রেন পশ্চিমা সমর্থিত দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে রাশিয়ার ভূখণ্ডে আঘাত হানে। এর জবাবে বৃহস্পতিবার রাশিয়া ইউক্রেনের নিপ্রো এলাকায় নতুন ধরনের হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে। রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন জানিয়েছেন, ক্ষেপণাস্ত্রটি নতুন প্রজন্মের হাইপারসনিক, যার নাম ‘ওরেশনিক’। এটি মধ্যপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র হলেও পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম।
পশ্চিমা দেশগুলোকে সতর্ক করে পুতিন বলেন, রাশিয়ার ভূখণ্ডে হামলার অনুমতি দেওয়ার পরিণতি ভালো হবে না। তিনি স্পষ্ট করেছেন, রাশিয়ার ওপর হামলার জন্য যে দেশগুলো তাদের অস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে, সেসব দেশের সামরিক স্থাপনাগুলোও রাশিয়ার হামলার লক্ষ্যবস্তু হতে পারে।
ন্যাটোর প্রতিক্রিয়া
রাশিয়ার এই হামলার পর ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্য এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনার জন্য ন্যাটোর বৈঠক আগামী মঙ্গলবার ব্রাসেলসে অনুষ্ঠিত হবে। ন্যাটোর একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, রাশিয়ার হামলা যুদ্ধের গতিপথ বদলাতে পারবে না এবং ইউক্রেনকে দেওয়া পশ্চিমা সমর্থনে কোনো প্রভাব ফেলবে না।
রাশিয়ার অগ্রগতি ও ইউক্রেনের প্রতিরোধ
ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে রাশিয়া উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। বৃহস্পতিবার রাশিয়া দাবি করে, দোনেৎস্ক অঞ্চলের দালনে গ্রাম তারা দখলে নিয়েছে। যদিও ইউক্রেন এটি স্বীকার করেনি। উল্টো ইউক্রেন জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় তাদের প্রতিরোধব্যূহ ভাঙতে রাশিয়া ২৬ বার চেষ্টা চালিয়েছে।
রাশিয়ার এই হামলা শীতকালীন অভিযান হিসেবে দেখা হচ্ছে। শুক্রবার ভোরে সুমি শহরে ড্রোন হামলায় রাশিয়া দুজনকে হত্যা এবং ১২ জনকে আহত করেছে।
যুদ্ধের বর্তমান অবস্থা
২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযান শুরু হয়। কিয়েভ দখলের লক্ষ্য ব্যর্থ হওয়ার পর রাশিয়া পূর্বাঞ্চলীয় দনবাস দখলে মনোযোগ দেয়। দনবাস অঞ্চলে রাশিয়া সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বড় ধরনের অগ্রগতি অর্জন করেছে। বর্তমানে ইউক্রেনের প্রায় ২০ শতাংশ ভূখণ্ড রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
ইউক্রেন যুদ্ধের এই দীর্ঘায়িত রূপ আন্তর্জাতিক উত্তেজনা আরও বাড়াচ্ছে। পশ্চিমাদের সঙ্গে রাশিয়ার ক্রমবর্ধমান সংঘাত পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।