শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

পানি প্রবাহে বাধাঃ বাড়িঘর ও ফসলি জমির ক্ষতি  নাঙ্গলকোটে ডাকাতিয়া নদীতে সেতুর ওপর সেতু

পানি প্রবাহে বাধাঃ বাড়িঘর ও ফসলি জমির ক্ষতি নাঙ্গলকোটে ডাকাতিয়া নদীতে সেতুর ওপর সেতু

            সাইফুল ইসলাম\ কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার ডাকাতিয়া নদীর পরিকোটে ধসে পড়া স্টিল সেতুর উপর আরেকটি সেতু নির্মাণ করায় পানি প্রবাহে বাধাগ্রস্ত হয়ে ফসলিজমিসহ বাড়িঘরে পানি উঠে জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতিসহ চরম ভোগান্তিতে রয়েছেন অসংখ্য পরিবার। দীর্ঘ ৯ বছর ধরে এলাকাবাসীকে এ ভোগান্তি পোহাতে হলেও সড়ক ও জনপথ অধিদফতর এ ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেন।

            এলাকাবাসী জানান, লাকসাম-চৌদ্দগ্রাম সড়কের নাঙ্গলকোটের পরিকোট নামক স্থানে ডাকাতিয়া নদীর উপর ১৯৬২ সালে একটি সেতু নির্মাণ করা হয়। ১৯৭১ সালে যুদ্ধকালীন পাকবাহিনীর যাতায়াতে সুবিধাজনক হওয়ায় স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা সেতুটি ভেঙে ফেলেন। পরবর্তীতে এ স্থানে স্টিলের সেতু নির্মাণ করা হয়।

            ২০১৫ সালে এ সেতুটি ধসে পড়লে সড়ক ও জনপথ বিভাগের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ধসে পড়া পুরনো সেতুটি অপসারণ না করে সে সেতুর উপর আরেকটি সেতু নির্মাণ করেন। ফলে ধসে পড়া সেতুটি অপসারণ না করায় নদীর উত্তরদিকে কয়েক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে কচুরিপানা জমাট বেঁধে পানি প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করে। এতে করে নদীর এক পাশে কচুরিপানা অন্যদিকে পলি জমে ভরাট হয়ে হ্রাস পেয়েছে নদীর নাব্যতা। বর্ষাকালে ভারী বর্ষণে পানি উপচেপড়ে পার্শ¦বর্তী মাঠের ফসল এবং বাড়িঘর ডুবে যায়। এতে দুর্ভোগে পড়তে হয় কয়েকশ’ পরিবারকে। ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাদের অনেক টাকার সম্পদ। তাছাড়া শুষ্ক মৌসুমে কৃষকরা নদী থেকে পানি সেচ দিয়ে জমিতে ফসল আবাদের পাশাপাশি নদীতে মাছ ধরে অনেক জেলে জীবিকা নির্বাহ করতো। অথচ এক সময় ডাকাতিয়া নদী ছিল এ অঞ্চলের বহু মানুষের জীবন জীবিকার প্রধান উৎসাহ। নদীতে চলাচল করত বড় বড় লঞ্চ, স্টিমারসহ বিভিন্ন ধরণের নৌযান। কৃষকরা পানি সেচ করে জমিনে ফসল ফলাতেন। মাঝি মহল্লারা নৌযান চালিয়ে অর্থকড়ি উপার্জন করতো। কিন্তু বিগত কয়েক বছর ধরে কৃষক ও জেলেরা তা থেকেও বঞ্চিত রয়েছেন।

            নদীর তীরে বসবাসকারী আবদুর রহিম বলেন, ডাকাতিয়া নদীর উপর ধসে পড়া সেতুর উপর আরেকটি সেতু নির্মাণ করায় পানি দ্রæত সরতে না পারায় নদীতে কচুরিপানা জমাট বেঁধে আমাদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। বর্ষা আসলে আমাদের মাঠের ফসল ও বাড়িঘর পানিতে ডুবে যায়। আমরা বার বার আবেদন নিবেদন করেও কোনো সমাধান পাচ্ছি না।

            বাঙ্গড্ডা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা করা হয়েছে।

            উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুরাইয়া আক্তার লাকী বলেন, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে কথা বলেছি। তিনি বলেছেন, স্টীল সেতুর বিষয়টি তাদের তালিকায় রয়েছে। তারা সেতুটি অপসারণের কারিগরি বিষয় নিয়ে কাজ করছেন। আগামী অর্থবছরের জুলাই-আগস্টের মধ্যে তারা সেতুটি অপসারণ করবেন বলে আমাকে জানিয়েছেন।

Share This