“বিচার ও সংস্কার ছাড়া নির্বাচন মেনে নেবে না জনগণ” — নাহিদ ইসলাম


জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, “বিচার ও সংস্কার ছাড়া কোনো নির্বাচনই দেশের মানুষ গ্রহণ করবে না। যারা এই মৌলিক দাবিগুলো উপেক্ষা করে নির্বাচন করতে চায়, তারা আসলে গণতন্ত্রকে পিছিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।”
শুক্রবার যশোরের খেজুর চত্বরে এক পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন। গণঅভ্যুত্থানের তরুণ নেতৃত্ব থেকে গড়ে ওঠা নতুন রাজনৈতিক দল ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’ সারাদেশে “দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা” কর্মসূচি পালন করছে। এই কর্মসূচি ১ জুলাই শুরু হয়ে চলবে ২৯ জুলাই পর্যন্ত।
নাহিদ বলেন, “আমরা একটি ইনসাফভিত্তিক, দায়বদ্ধ ও সমঅধিকার নিশ্চিত রাষ্ট্র গঠন করতে চাই—যেখানে নারী-পুরুষ, সব মত-পথের মানুষের অধিকার সমভাবে প্রতিষ্ঠিত হবে। আমরা বৈষম্য ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াই করছি।”
তিনি আরও বলেন, “কেউ দাবি করে তাদের লাখো সমর্থক রয়েছে। কিন্তু এই গণঅভ্যুত্থানে লক্ষ-কোটি মানুষ নিজের বিশ্বাস থেকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে যুক্ত হয়েছে—আবাবিল পাখির মতো। তাই আমাদের সংখ্যা দিয়ে মাপবেন না। একজন সত্যপন্থী মানুষই এক লাখ দুর্নীতিপরায়ণ মানুষের সমান হতে পারে। আমরা সেই একজন ইনসাফপ্রিয় মানুষ হয়ে থাকতে চাই, যে অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়।”
রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোর দলীয়করণের অভিযোগ তুলে নাহিদ বলেন, “গত ৫৪ বছরে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোকে দলীয়করণ করা হয়েছে। আমরা চাই না, পুলিশ বা আমলাতন্ত্র কোনো দলের হয়ে কাজ করুক—তারা জনগণের সেবক হোক।”
তিনি অভিযোগ করে বলেন, “গত ১৬ বছরে সবচেয়ে বেশি দলীয়করণ করা হয়েছে নির্বাচন কমিশনে। এটি এখন ভেঙে পড়া একটি প্রতিষ্ঠান, যা জনগণের ভোটাধিকার রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে। এই নির্বাচন কমিশনকে অবশ্যই পুনর্গঠন ও শক্তিশালী করতে হবে।”
একটি কল্যাণভিত্তিক রাষ্ট্র ও অর্থনীতির আকাঙ্ক্ষা জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা বাংলাদেশপন্থী রাজনীতির মাধ্যমে মানুষের কল্যাণ নিশ্চিত করতে চাই। গণঅভ্যুত্থানে আপনারা যেভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন, আগামী দিনেও দুর্নীতিবাজ-চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।”
পথসভার শেষ দিকে তিনি ঘোষণা দেন, “আমরা ইতোমধ্যে রাজপথে নেমেছি। সামনে চাঁদাবাজ ও দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে আরও বড় আন্দোলন সংগঠিত হবে।”