শুক্রবার, ১৫ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

মনোহরগঞ্জের নাথেরপেটুয়া-হাসনাবাদ সড়কে দু’টি ব্রিজ  নির্মাণে ধীরগতিতে ৫ ইউনিয়নের মানুষের চরম ভোগান্তি

মনোহরগঞ্জের নাথেরপেটুয়া-হাসনাবাদ সড়কে দু’টি ব্রিজ নির্মাণে ধীরগতিতে ৫ ইউনিয়নের মানুষের চরম ভোগান্তি

৭৩ Views

            ষ্টাফ রিপোর্টার\ কুমিল্লা জেলার নাথেরপেটুয়া-হাসনাবাদ রোডে মনোহরগঞ্জ উপজেলার বাইশগাঁও বাজার ও হাসনাবাদ এলাকায় দু’টি ব্রিজ নির্মাণ কাজে ধীরগতি ও গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। এই সড়ক দিয়ে নাথেরপেটুয়া, লক্ষনপুর, সরসপুর, বাইশগাঁও ও হাসনাবাদ ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ ছাড়াও চাটখিল উপজেলার জনসাধারন নিত্য চলাচল করে থাকে। গত ক’দিনের বৃষ্টিতে নির্মাণাধীন ব্রিজের পাশের বিকল্প সড়কটি ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় উল্লেখিত ৫টি ইউনিয়নের  জনগনকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

            জনগুরুত্বপূর্ণ এ ব্রিজগুলো নির্মাণ কাজ চলতি বছরের জুন মাসে শেষ করার কথা থাকলেও শেষ না হওয়ায় ভোগান্তিতে রয়েছেন এলাকাবাসী।

            প্রায় ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে এ সড়কে দু’টি ব্রিজ নির্মাণের কাজ পায় মেসার্স হারুন এন্ড সন্স ও ফরিদপুর জান্নাত কনস্ট্রাকশন নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কর্মরত শ্রমিকরা বলছেন, ইতিমধ্যে প্রায় ৬০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে, বাকি কাজ সম্পন্ন করতে আরো ৫-৬ মাস সময় লাগতে পারে বলে তাদের ধারণা।

            উপজেলা প্রকৌশল অফিস সুত্রে জানা যায়, এলজিইডির অধীনে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে নাথেরপেটুয়া-হাসনাবাদ সড়কের বাইশগাঁও বাজারে নদনা খালের উপর নির্মিত ২ কোটি ৫৯ লাখ ২৩ হাজার ৫৪১ টাকা ব্যয়ে ১৫ মিটার দৈর্ঘ্যের ব্রিজটির কাজ শুরু হয় ২০২২ সালের ফেব্রæয়ারি মাসে। নির্ধারিত সময় পার হলেও কাজ হয়েছে মাত্র ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ। আর এ নির্মাণ কাজ পায় মেসার্স হারুন এন্ড সন্স নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

            ওই ব্রিজ থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে একই সড়কের হাসনাবাদ এলাকায় মন্দা খালের উপর এলজিইডির অধীনে ১২ মিটার দৈর্ঘ্যরে আরও একটি ব্রিজ নির্মাণের কাজ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ফরিদপুর জান্নাত কনস্ট্রাকশন। ১ কোটি ৯৮ লাখ ৬৫ হাজার ৪৬৭ টাকা ব্যয়ে এ ব্রিজটি নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০২২ সালের ফেব্রæয়ারি মাসে। নির্মাণ কাজ চলতি বছরের জুনে শেষ করার কথা থাকলেও কাজ হয়েছে মাত্র ৫০ থেকে ৫৫ শতাংশ। প্রায় ৫ মাস অতিবাহিত হয়ে গেলেও এখনো ঢালাইয়ের কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদার।

            ফরিদপুর জান্নাত কনস্ট্রাকশনের ম্যানেজার কবির আহমেদ বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগে তো কারো হাত থাকে না। কনস্ট্রাকশনের কাজে নিদিষ্ট সময়ে কেউ করতে পারেন না, অনেক সমস্যা কারণে সময় পিছিয়ে যেতে পারে। কাজের শুরুতে সাইডে বিল্ডিং ভাংঙ্গতে এবং সেগুলো সরাতে সময় লেগেছে প্রায় ৫/৬ মাস। এখন ব্রিজের কাজ চলছে আশা করি চলতি বছরের নভেম্বরের মধ্যে নির্মাণের কাজ শেষ হবে।

            মেসার্স হারুন এন্ড সন্স ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাইড ইঞ্জিনিয়ার রেদোয়ান হোসেন বলেন, ব্রিজ নির্মাণের কাজ ধীরগতি হচ্ছে এটা ঠিক নয়। মূলত টানা বৃষ্টির পানিতে বিকল্প সড়কটি ভেঙে যায়। পানি প্রবাহ কমলে সড়কটি সংস্কার করা হবে। এছাড়াও ব্রিজ নির্মাণের কাজ ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ হয়েছে, কয়েকদিনের মধ্যেই ব্রিজের কাজ শুরু করা হবে।

            স্থানীয় বাসিন্দা রুবেল মিয়া বলেন, নির্মাণাধীন সেতুর বিকল্প সড়কটি দায়সারাভাবে করায় খালের পানিতে ভেঙে গেছে। এতে করে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে হাজার হাজার মানুষ। স্থানীয়রা গাছের খুঁটি বিছিয়ে দিয়ে জনচলাচলের ব্যবস্থা করলেও খবরও নেয়নি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণে সেতু নির্মাণ কাজের ধীরগতি ও জনগণের ভোগান্তি হচ্ছে বলে তিনি জানান।

            বাইশগাঁও গ্রামের বাসিন্দা আহসান উল্লাহ বলেন, ঠিকাদার দায়সারাভাবে বিকল্প সড়কটি করেছে। রাতে-দিনে সড়ক দিয়ে চলাচল সময়  দূর্ঘটনা ঘটে, গত কয়েকদিনের পূর্বে ৩ জন মোটরসাইকেল আরোহী খালে পড়ে আহত হন।

            উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) প্রকৌশলী শাহ আলম বলেন, প্রায় ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে এ সড়কে দু’টি ব্রিজ নির্মাণ করা হচ্ছে। নির্মাণ কাজে বারবার শ্রমিক পরিবর্তনের কারণে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। এখানে আমার গাফেলতির কোনো সুযোগ নেই। বৃষ্টির পানি কমতে শুরু হ’য়ে গেছে, দ্রæততম সময়ের মধ্যে বিকল্প সড়ক সংস্কারসহ ব্রিজের কাজ শেষ করতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বলা হয়েছে।

Share This

COMMENTS