বৃহস্পতিবার, ২৮শে আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

মানবাধিকার সংগঠনের প্রতিবেদন দেশে ধর্ষণ বেড়েছে ৬৮ শতাংশ

<span class="entry-title-primary">মানবাধিকার সংগঠনের প্রতিবেদন</span> <span class="entry-subtitle">দেশে ধর্ষণ বেড়েছে ৬৮ শতাংশ</span>
Views

            ষ্টাফ রিপোর্টার\ দেশে নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা কমছে না, বরং আশঙ্কাজনক হারে বেড়েই চলেছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলোর প্রতিবেদন বলছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত ৭ মাসে ধর্ষণের ঘটনা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে প্রায় ৬৮ দশমিক ৫ শতাংশ।

            একই সময়ে শিশুর প্রতি সহিংসতার হার বেড়েছে ৩৮ শতাংশ। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই প্রবণতা কেবল পরিসংখ্যানের বিষয় নয়; বরং সামাজিক নিরাপত্তা ও মানবাধিকারের জন্য বড় ধরনের হুমকি।

            মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) তথ্য অনুযায়ী, এ বছর ৭ মাসে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৪৯২ জন নারী ও শিশু, যেখানে গত বছর একই সময়ে এ সংখ্যা ছিল ২৯২ জন। শিশুর প্রতি সহিংসতা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৪০ জনে, যা গত বছর ছিল ৪৬৩ জন। একই সময়ে পারিবারিক সহিংসতার ঘটনাও বেড়েছে প্রায় ১৬ শতাংশ।

            বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের প্রতিবেদনেও একই চিত্র পাওয়া গেছে। তাদের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৪০৫ জন, সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার ১১৭ জন, ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ১৫ জনকে। গত বছর এ সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ২৫৩, ১০৫ এবং ১৮।

সবচেয়ে উদ্বেগজনক চিত্র দিয়েছে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ)। সংস্থাটির তথ্যমতে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৫০২ জন নারী ও শিশু, যার মধ্যে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার ১৩৩ জন। ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ২৭ জনকে, আর ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে ২০৯ জনকে।

            বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, অপরাধীদের শাস্তি না পাওয়া, বিচার ব্যবস্থার দীর্ঘসূত্রতা, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উদাসীনতা এবং স্থানীয় সরকারের দুর্বল ভূমিকার কারণে এ ধরনের অপরাধ থামছে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দ শাইখ ইমতিয়াজ বলেন, ‘পুলিশি ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়েছে। জুলাই আন্দোলনের পর নারীর স্বাধীনতা ও চলাচল নিয়ে যে নেতিবাচক বয়ান তৈরি হয়েছে, সেটি ধর্ষকদের এক ধরনের উৎসাহ দিয়েছে।’

            মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, দেশে নারীর প্রতি বিদ্বেষমূলক মনোভাব এবং অপরাধীদের দায়মুক্তিই সহিংসতা বৃদ্ধির মূল কারণ। তারা মনে করেন, কার্যকর আইন প্রয়োগ, দ্রæত বিচার এবং সামাজিক সচেতনতা ছাড়া এই প্রবণতা থামানো সম্ভব নয়।

Share This

COMMENTS