শনিবার, ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

মামলায় আটকে আছে বেসরকারি শিক্ষা  প্রতিষ্ঠানে ৩২ হাজার শিক্ষক নিয়োগ

মামলায় আটকে আছে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৩২ হাজার শিক্ষক নিয়োগ

রাহুল শর্মা ॥ সুপারিশবঞ্চিত এক প্রার্থীর মামলার কারণে আটকে গেছে বেসরকারি স্কুল, কলেজ ও মাদরাসার ৩২ হাজার শিক্ষকের নিয়োগ। মামলা নিষ্পত্তি না হওয়ায় নিয়োগের চূড়ান্ত সুপারিশ করতে পারছে না বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। অথচ, এ সংক্রান্ত নিয়োগের জন্য প্রাথমিক সুপারিশ করে চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তির ফল প্রকাশ করা হয়েছিল বিগত ১২ই মার্চ তারিখে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে গত সোমবার এনটিআরসিএর চেয়ারম্যান মো. এনামুল কাদের খান গত বলেছেন, মামলা সংক্রান্ত জটিলতার কারণে চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে প্রাথমিক সুপারিশ পাওয়া প্রার্থীদের চূড়ান্ত সুপারিশ করা যাচ্ছে না। এ বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের সলিসিটরের মতামত চাওয়া হয়েছে। তাঁরা দ্রুত এই সমস্যার সমাধান করে নিয়োগের চূড়ান্ত সুপারিশ করার চেষ্টা করছেন।

এনটিআরসিএ সূত্র জানায়, চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তির ফলে ৩২ হাজার ৪৩৮ প্রার্থীকে নির্বাচন করা হয়। পুলিশ ভেরিফিকেশন চলা অবস্থায় চূড়ান্ত নিয়োগের সুপারিশ করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন চাওয়ার পরিকল্পনা ছিল এনটিআরসিএর। এর আগে তৃতীয় গণনিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে পুলিশ ভেরিফিকেশন চলা অবস্থায় চূড়ান্ত নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছিল।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রাথমিক সুপারিশপ্রাপ্ত প্রায় ২৮ হাজার প্রার্থীর ভিআর ফরম সংগ্রহ করা হয়েছে। যাচাই-বাছাই শেষে কিছু ভিআর ফরম শিক্ষা মন্ত্রণালয়েও পাঠানো হয়েছে। ভুল থাকায় ৯৩০ প্রার্থীর ভিআর ফরম ফেরত পাঠানো হয়েছে। বাকিগুলো যাচাই-বাছাই চলছে। কিন্তু মামলাসংক্রান্ত জটিলতায় নিয়োগ কার্যক্রম আটকে গেছে।

এনটিআরসিএর ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, মামলার বিষয়টি সুরাহার পাশাপাশি চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তির অন্যান্য কার্যক্রম চলছে, যাতে মামলাসংক্রান্ত জটিলতা নিরসন হলে দ্রুত নিয়োগের চূড়ান্ত সুপারিশ করা সম্ভব হয়।

মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ৬৮ হাজার ৩৯০টি শূন্য পদে শিক্ষক নিয়োগের জন্য গত বছরের ২১শে ডিসেম্বর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এনটিআরসিএ। এগুলোর মধ্যে স্কুল ও কলেজে ৩১ হাজার ৫০৮টি এবং মাদরাসা, ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা ও কারিগরি প্রতিষ্ঠানের ৩৬ হাজার ৮৮২টি শিক্ষকের পদ শূন্য ছিল। সব কটি পদই এমপিওভুক্ত।

বিজ্ঞপ্তিতে অনলাইনে আবেদনের পদ্ধতি সহজ করার পাশাপাশি একজন প্রার্থী সর্বোচ্চ ৪০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আবেদনের সুযোগ পেয়েছেন। এ ছাড়া, পছন্দের ৪০ প্রতিষ্ঠানে সুযোগ না পেলে মেধার ভিত্তিতে অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে চাকরির সুযোগ পেলে যোগ দেবেন কি না, তা বাছাইয়েরও সুযোগ দেয়া হয়।

এর আগে ৫৪ হাজার ৩০৪টি শূন্য পদ পূরণে ২০২১ সালের ৩০শে মার্চ তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এনটিআরসিএ। এর ফল প্রকাশিত হয় গত বছরের ১৫ই জুলাই। সেখান থেকেই সুপারিশ করা হয় ৩৪ হাজার ৭৩ জন শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্তটি।

এর আগে আন্দোলনকারী শিক্ষকরা দু’টি অর্জন নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। মূল দাবি-শিক্ষা জাতীয়করণ সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। এ নিয়ে দু’টি কমিটি কাজ করবে। দুই কমিটিতে আন্দোলনকারী শিক্ষকদের প্রতিনিধিরাও থাকবেন।

মূল দাবি পূরণের আগে বেসরকারি শিক্ষকদের বাড়িভাড়া, চিকিৎসা ও উৎসবভাতা সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সমান করার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দেবেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ১লা আগস্ট রাতে ঢাকায় অনশন ভেঙে ২২ দিনের আন্দোলনের সমাপ্তি টানেন শিক্ষকরা।

সৌজন্যে: আজকের পত্রিকা

Share This