মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ৫ই নভেম্বর ২০২৪
শামস রহমান॥ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আগামী ৫ই নভেম্বর মঙ্গলবার। চিরাচরিতভাবে নভেম্বর মাসের প্রথম ‘মঙ্গলবার’ই আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে- (The U.S. presidential election is held on the first Tuesday after the first Monday in November every four years. Meaning it can fall between November 2 and November 8.)
ঐতিহাসিক কারণেই বিশ্ব পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে এই নির্বাচন অনেক গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচনে কমলা হ্যারিস না ডোনাল্ড ট্রাম্প, কে হচ্ছেন- দেশটির পরবর্তী প্রেসিডেন্ট তা নিয়ে যেমন আছেন শঙ্কা তেমনি অজানা কৌতুহল। কারণ-বিশ্বকে সবক দেয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার প্রায় প্রত্যেক প্রেসিডেন্টকেই দেশটির রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা একসময় না একসময় স্বৈরাচারী বলে অভিযুক্ত করেছেন। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি ভিন্ন। তিনি এমন একমাত্র সাবেক প্রেসিডেন্ট- যাকে তার নিজের হাতে বেছে নেওয়া উপদেষ্টা ‘ফ্যাসিস্ট’ বলে প্রকাশ্যে অভিযোগ করেছেন। নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে এই বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে।
ট্রাম্পের দীর্ঘদিনের প্রধান স্টাফ জন কেলি সম্প্রতি মন্তব্য করেছেন, ‘ট্রাম্প ফ্যাসিবাদের সাধারণ সংজ্ঞার মধ্যে পড়েন’। এ মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ট্রাম্প তাকে ‘পুরোপুরি নীচ ব্যক্তি’, ‘নিম্নমানের ও খারাপ জেনারেল’ বলে পাল্টা আক্রমণ করেছেন। তবে প্রথমেই তিনি ফ্যাসিবাদের অভিযোগটি অস্বীকার করেননি। বরং দিন কয়েক পর এক সাক্ষাৎকারে সরাসরি তা নাকচ করেছেন।
ফ্যাসিবাদের ভাষা ও ইতিহাসের ব্যবহার: প্রেসিডেন্টদের ক্ষমতার সীমা বৃদ্ধি ও কখনও কখনও এর অপব্যবহার নতুন কিছু নয়! তবে ট্রাম্প এমন একমাত্র নেতা যিনি গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভেঙে ফেলতে চান এবং বিদেশে স্বৈরাচারী নেতাদের প্রতি প্রকাশ্যে সমর্থন জানিয়েছেন। যদিও আগের প্রেসিডেন্টদের বিরুদ্ধেও স্বৈরাচারী আচরণের অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু তাদের কোনও উপদেষ্টাই তাদেরকে ফ্যাসিস্ট বলে আখ্যায়িত করেননি।
তবে ট্রাম্প নিজেকে ফ্যাসিস্ট বলে অভিহিত করেন না। বরং তার প্রতিপক্ষদের ফ্যাসিস্ট বলে অভিযুক্ত করেন। অবশ্য তিনি সব সময় নিজেকে শক্তিশালী নেতা হিসেবে উপস্থাপন করতে চান এবং পুনরায় নির্বাচিত হলে সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করে বিরোধীদের দমন, বিচার বিভাগকে ব্যবহার করে শত্রুদের কারাগারে প্রেরণ এবং সংবাদমাধ্যমের ওপর দমনমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। বিশেষ করে তিনি বেআইনিভাবে দেশে বসবাসরত লক্ষাধিক মানুষকে আটক বা বহিষ্কার করার পরিকল্পনা করেছেন।
এর আগে ২০২০ সালের নির্বাচনের পর তিনি নির্বাচনের বৈধতা নিয়ে মিথ্যা প্রচারণা চালান এবং দাবি করেন যে সংবিধান বাতিল করে তাকে আবার ক্ষমতায় বসানো উচিত। যদিও তিনি তা করতে পারেননি। কিন্তু তার সমর্থকদের একটি বৃহৎ অংশকে এই ধারণায় বিশ্বাস করাতে পেরেছিলেন যে বাইডেনের জয় অবৈধ ছিল।
সমালোচকদের ভাষ্য ও ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়া: ট্রাম্পের সমালোচকদের অনেকেই তাকে স্বৈরাচারী বলে অভিযুক্ত করেছেন। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে ১৩ জন সাবেক ট্রাম্প উপদেষ্টা জন কেলির মন্তব্য সমর্থন করে একটি চিঠি প্রকাশ করেছেন- যেখানে ট্রাম্পের ‘অপরিমেয় ক্ষমতার আকাঙ্ক্ষা’র বিষয়ে সতর্কতা জানানো হয়েছে। সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন মন্তব্য করেছেন, ‘ফ্যাসিজম একটি ব্যাপক আদর্শ’, এবং ‘ট্রাম্প কোনও আদর্শগত চিন্তায় সক্ষম নন’।
যদিও ট্রাম্পের সমর্থকেরা দাবি করেন যে, প্রথম মেয়াদে তিনি ফ্যাসিস্ট ছিলেন না। দ্বিতীয় মেয়াদেও হবেন না। তবে তার ভাষা ও ক্রিয়াকলাপ ফ্যাসিজমের একটি প্রতিচ্ছবি বহন করে। যেমন, তিনি ২০১৫ সালে তার প্রথম নির্বাচনি প্রচারণার দিন মেক্সিকান অভিবাসীদের ধর্ষক বলে উল্লেখ করেন এবং মুসলমানদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ নিষিদ্ধ করার অঙ্গীকার করেছিলেন। তার পররাষ্ট্রনীতিও জাতীয়তাবাদ ও বিচ্ছিন্নতাবাদের ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে।
ফ্যাসিজমের প্রতীক ও ইতিহাসের উল্লেখ: ট্রাম্প একবার বেনিতো মুসোলিনির একটি উক্তি পুনরায় টুইট করেছিলেন। এনবিসির চ্যাক টডের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘কে এটি বলেছেন তাতে কী আসে যায়?’ এছাড়া তিনি সোভিয়েত নেতা জোসেফ স্ট্যালিনের ভাষা ব্যবহার করে সাংবাদিকদের ‘জনগণের শত্রু’ বলে আখ্যায়িত করেন। এমনকি তার একাধিক সাবেক উপদেষ্টা উল্লেখ করেছেন যে, তিনি হিটলারের ‘মাইন ক্যাম্ফ’ পড়েছেন।
ট্রাম্পের সঙ্গে যারা যুক্ত ছিলেন তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন হিটলার ও ফ্যাসিজমের প্রশংসা করেছেন। উদাহরণস্বরূপ, ২০২২ সালে তিনি নিক ফুয়েন্তেস নামক একজন শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদী এবং কানি ওয়েস্টের সঙ্গে ডিনারে অংশ নেন। কানি ওয়েস্ট পরে ‘হিটলারকে আমি পছন্দ করি’ বলে মন্তব্য করেছিলেন।
বর্তমান যুগের স্বৈরাচারী নেতাদের প্রতি সমর্থন
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনসহ অন্যান্য নেতাদের প্রশংসা করেছেন ট্রাম্প। অন্যদিকে, জার্মানির অ্যাঙ্গেলা মেরকেল, ব্রিটেনের থেরেসা মে, কানাডার জাস্টিন ট্রুডো এবং ফ্রান্সের ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর মতো গণতান্ত্রিক নেতাদের তিরস্কার করেছেন।
যদিও যুক্তরাষ্ট্রের অনেক প্রেসিডেন্ট যুদ্ধ বা জাতীয় নিরাপত্তার হুমকির সময়ে গণতন্ত্রের সীমা বৃদ্ধি করেছেন, তবে ট্রাম্প ছিলেন ব্যতিক্রমী। তিনি একবার বলেন, আমার কাছে সংবিধানের দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ আছে, যেখানে আমি যেটা চাই তা করতে পারি।
ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন প্রথম মেয়াদে বেশ কিছু অবৈধ বা অস্বাভাবিক পদক্ষেপ গ্রহণের চেষ্টা করেছিল। যেমন, অভিবাসীদের ওপর ‘হিট রে’ ব্যবহার করা বা সীমান্তে খাল খুঁড়ে তাতে কুমির ছেড়ে দেওয়ার প্রস্তাব করা। এছাড়া তিনি ২০২০ সালে বিক্ষোভকারীদের ওপর সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করার জন্য চাপ দিয়েছিলেন।
পুনরায় ক্ষমতায় এলে সম্ভাব্য হুমকি: সমালোচকরা মনে করেন, দ্বিতীয় মেয়াদে ট্রাম্প আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারেন। তার মন্ত্রিপরিষদে সাধারণত অতি-দক্ষদের পরিবর্তে চরমপন্থি পরামর্শদাতারা থাকবেন, যারা তার দুর্নীতির প্রতিরোধ করবেন না। এর ফলে গণতন্ত্রের ওপর ব্যাপক প্রভাব পড়তে পারে।
সমসাময়িক ঘটনাবলির আলোকে ট্রাম্পের মন্তব্য ও কর্মকাণ্ড ফ্যাসিজমের এক বিপজ্জনক প্রতিচ্ছবি উপস্থাপন করছে। যা গণতন্ত্রের জন্য গুরুতর হুমকি হতে পারে! তার হুমকি ও ভাষা আমেরিকার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎকে নিয়ে যেতে পারে এক অন্ধকার পথেও।
মূলত: বিশ্বের অন্যতম ক্ষমতাধর দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তাই দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচন এলেই সবার চোখ চলে যায় এদিকে। যদিও দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচন প্রক্রিয়া অনেকটাই জটিল। তাই বুঝে ওঠা সবার পক্ষে সম্ভব নয়। তবুও কৌতুহলের শেষ নেই। সেই দেশটির এবারের নির্বাচনে হোয়াইট হাউসে যাবেন ৪৮তম প্রেসিডেন্ট। সেখানে লড়ছেন ডেমোক্রাটিক পার্টির কমলা হ্যারিস ও রিপাবলিকান পার্টির ডোনাল্ড ট্রাম্প। এখন পর্যন্ত বিগত ৪৭ জন প্রেসিডেন্ট তাদের দায়িত্ব পালনকালে হয়েছেন আলোচিত, সমালোচিত, এমনকি নিন্দিতও। অনেকে দিয়েছেন প্রাণ, অনেকে হয়েছেন হামলায় গুরুতর আহত। এবার প্রার্থীতার ঘোষণা দিয়েই হামলার শিকার হয়েছেন প্রার্থী (ট্রাম্প)। তবে, যাই হোক না কেন, নির্বাচনি লড়াই থেমে নেই।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মসনদে এ পর্যন্ত যারা বসেছেন- তাঁদের মধ্যে জর্জ ওয়াশিংটন ছিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম প্রেসিডেন্ট। ১৭৮৯ সালের এপ্রিল ৩০ থেকে ১৭৯৭ সালের মার্চ ৪ পর্যন্ত। নির্দলীয় এই প্রেসিডেন্টের ভায়েস প্রেসিডেন্ট ছিলেন জন অ্যাডাম্স।
জর্জ ওয়াশিংটনের সময়কার ভায়েস প্রেসিডেন্ট জন অ্যাডাম্স পরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হন। ১৭৯৭ সালের মার্চ ৪ থেকে ১৮০১ সালের মার্চ ৪ পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন তিনি। আবার তিনি ছিলেন একজন আইনজীবী, কূটনীতিক, রাজনৈতিক ভাষ্যকার, ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জনকদের মধ্যে অন্যতম। তিনি ফেডারেলিস্ট পার্টির হলেও নির্দলীয়ভাবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। তার ভায়েস প্রেসিডেন্ট ছিলেন টমাস জেফারসন।
টমাস জেফারসন মার্কিন ক্ষমতায় আসেন ১৮০১ সালের ৪ঠা মার্চ, থাকেন ১৮০৯ সালের ৪ঠা মার্চ পর্যন্ত। ডেমোক্রেটিক-রিপাবলিকানের এই নেতার ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন অ্যারন বিউর। পরবর্তীতে ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন জর্জ ক্লিনটন।
জেমস ম্যাডিসন ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের চতুর্থ প্রেসিডেন্ট। তিনি ১৮০৯ সালের ৪ঠা মার্চ থেকে ১৮১৭ সালের ৪ঠা মার্চ পর্যন্ত ডেমোক্রেটিক-রিপাবলিকানের হয়ে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন। তার ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন জর্জ ক্লিনটন। পরবর্তীতে একই পদে দায়িত্ব পালন করেন এলব্রিজ গ্যারি।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পঞ্চম প্রেসিডেন্ট ছিলেন জেমস মন্রো। তিনি ১৮১৭ সালের ৪ঠা মার্চ থেকে ১৮২৫ সালের ৪ঠা মার্চ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। ডেমোক্রেটিক-রিপাবলিকান পার্টির এই নেতার রাজত্বকালে ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন ড্যানিয়েল ডি থম্পকিন্স।
জন কুইন্সি অ্যাডাম্স ছিলেন আমেরিকার ষষ্ঠ প্রেসিডেন্ট। তিনিও জয়লাভ করেন ডেমোক্রেটিক-রিপাবলিকান পার্টির হয়ে। ১৮২৫ সালের ৪ঠা মার্চ থেকে ১৮২৯ সালের ৪ঠা মার্চ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। তখন ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন জন সি ক্যালৌন।
অ্যান্ড্রু জ্যাকসন মার্চ ১৮২৯ সালের ৪ঠা মার্চ থেকে ১৮৩৭ সালের ৪ঠা মার্চ পর্যন্ত সপ্তম প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ছিলেন ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতা। তার সময়ে ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন জন সি ক্যালৌন। পরে ভাইস প্রেসিডেন্ট হন মার্টিন ভ্যান বিউরেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অষ্টম প্রেসিডেন্ট ছিলেন, ডেমোক্রেটিক পার্টির মার্টিন ভ্যান বিউরেন। তিনি ১৮৩৭ সালের ৪ঠা মার্চ থেকে ১৮৪১ সালের মার্চ ৪ পর্যন্ত দায়িত্ব পালণ করেন। তার সময়ে ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন রিচার্ড মেন্টর জনসন।
দেশটির নবম প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম হেনরি হ্যারিসন দায়িত্ব পালন করেন ১৮৪১ সালের ৪ঠা মার্চ থেকে ১৮৪১ সালের ৪ঠা মার্চ পর্যন্ত। হুইগ পার্টি থেকে তিনিই দেশটির প্রথম প্রেসিডেন্ট। জন টাইলার ছিলেন তার ভাইস প্রেসিডেন্ট। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর অভিষেক-অনুষ্ঠানে হ্যারিসন তুষারপাতের মধ্যেই টানা এক ঘণ্টা ভাষণ দেন। ফলে ঠান্ডা লেগে তিনি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হন এবং মাসখানেক পরে মারা যান। তার শাসনামল ছিলো মাত্র ৩১ দিন, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টদের মধ্যে সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত শাসনকাল। রোনাল্ড রেগান নির্বাচিত হওয়ার আগে হ্যারিসনই ছিলেন সবচেয়ে বেশি বয়সে নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার সময় হ্যারিসনের বয়স ছিল ৬৮ বছর।
প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম হেনরি হ্যারিসনের মৃত্যুর পর ১৮৪১ সালের ৪ঠা এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় আসেন হুইগ পার্টির নেতা ও সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট জন টাইলার। ১০ম প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি ১৮৪৫ সালের ৪ মার্চ পর্যন্ত দেশটির ক্ষমতায় আসীন ছিলেন।
জেমস নক্স পোক নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে ১৮৪৫ সালের ৪ঠা মার্চ প্রেসিডেন্ট হয়ে মার্কিন মসনদে বসেন, ছিলেন ১৮৪৯ সালের ৪ঠা মার্চ পর্যন্ত। ডেমোক্রেটিক পার্টির এই নেতার শাসনামলে ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন জর্জ এম ডালাস।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১২তম প্রেসিডেন্ট ছিলেন জ্যাকারি টেইলর। ১৮৪৯ সালের ৪ঠা মার্চ থেকে ১৮৫০ সালের ৯ই জুলাই পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট ছিলেন হুইগ পার্টির এই নেতা। তার সময়ে ভাইস প্রেসিডেন্টে ছিলেন মিলার্ড ফিল্মোর। টেইলর ছিলেন মার্কিন সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা যিনি মেজর জেনারেল পদে উন্নীত হন এবং মেক্সিকান-আমেরিকান যুদ্ধে তার বিজয়ের জন্য জাতীয় বীর হিসেবে পরিচিত হন। তার অস্পষ্ট রাজনৈতিক বিশ্বাস সত্ত্বেও তিনি হোয়াইট হাউসে নির্বাচিত হন। প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার প্রধান অগ্রাধিকার ছিল ইউনিয়ন সংরক্ষণ করা। তিনি দায়িত্ব গ্রহণের ১৬ মাসের মাথায় পেটের রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। টেইলরের প্রেসিডেন্ট মেয়াদ যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে তৃতীয়-সংক্ষিপ্ততম ছিল।
প্রেসিডেন্ট টেইলরের মৃত্যুতে দায়িত্ব নেন হুইগ পার্টির অন্যতম নেতা ও টেইলরের সময়ে ভাইস প্রেসিডেন্ট মিলার্ড ফিল্মোর। ১৮৫০ সালের ৯ই জুলাই থেকে ১৮৫৩ সালের ৪ঠা মার্চ পর্যন্ত দায়িত্বে ছিলেন তিনি।
দেশটির ১৪ তম প্রেসিডেন্ট ছিলেন ফ্রাংক্লিন পিয়ের্স। ১৮৫৩ সালের ৪ঠা মার্চ তিনি ক্ষমতায় বসেন। ছিলেন ১৮৫৭ সালের ৪ঠা মার্চ পর্যন্ত। ডেমোক্রেটিক পার্টির এই নেতার শাসনামলে ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেনউইলিয়াম আর কিং।
জেমস বিউকানান ছিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১৫ তম প্রেসিডেন্ট। নির্বাচনে জিতে ১৮৫৭ সালের ৪ঠা মার্চ ক্ষমতায় বসেন তিনি। ডেমোক্রেটিক পার্টির এই নেতা চার বছর শাসন করে বিদায় নেন ১৮৬১ সালের ৪ঠা মার্চ। তার সময়ে জন সি ব্রেকিনরিজ ভাইস প্রেসিন্টের দায়িত্বে ছিলেন।
ওদিকে, বিশ্বে সব থেকে জনপ্রিয় ও গণতন্ত্রের আধুনিক সংজ্ঞাদানকারী আব্রাহাম লিংকন ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের ১৬তম প্রেসিডেন্ট। রিপাবলিকান ন্যাশনাল ইউনিয়নের এই নেতা ১৮৬১ সালের ৪ঠা মার্চ থেকে ১৮৬৫ সালের ১৫ইসএপ্রিল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। ন্যাশনাল ইউনিয়ন পার্টি মূলত ইউনিয়ন পার্টি বা ইউনিয়নিস্ট যা ছিল রিপাবলিকান, ওয়ার ডেমোক্র্যাট এবং সীমান্ত রাজ্যের শর্তহীন ইউনিয়নবাদীদের একটি যুদ্ধকালীন জোট। এটি আমেরিকান গৃহযুদ্ধের সময় লিঙ্কন প্রশাসনকে সমর্থন করেছিল। ১৮৬৩ সালের ১৯শে নভেম্বর আব্রাহাম লিংকন পেনসিলভানিয়ার গেটিসবার্গ বক্তব্যে বলেছিলেন, গণতান্ত্রিক সরকার জনগণের অংশগ্রহণ, জনগণের দ্বারা ও জনগণের জন্য। তার শাসনামলে হ্যানিবাল হ্যামলিন ও পরে অ্যান্ড্রু জনসন ছিলেন ভাইস প্রেসিডেন্ট।
ডেমোক্রেটিক ন্যাশনাল ইউনিয়নের হয়ে আব্রাহাম লিংকনের পর প্রেসিডেন্ট পদে আসেন অ্যান্ড্রু জনসন। দেশটির ১৭তম এই প্রেসিডেন্টের মেয়াদ ছিল ১৮৬৫ সালের ১৫ই এপ্রিল থেকে ১৮৬৯ সালের ৪ঠা মার্চ পর্যন্ত।
ইউলিসিস এস গ্রান্ট ছিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১৮তম প্রেসিডেন্ট। তিনি ১৮৬৯ সালের ৪ঠা মার্চ থেকে ১৮৭৭ সালের ৪ঠা মার্চ পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন। রিপাবলিকান পার্টির এই নেতার শাসনামলে ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন শুইলার কোলফ্যাক্স ও হেনরি উইলসন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১৯তম প্রেসিডেন্ট ছিলেন রাদারফোর্ড বি হেইজ। তার শাসনামল ছিল ১৮৭৭ সালের ৪ঠা মার্চ থেকে ১৮৮১ সালের ৪ঠা মার্চ পর্যন্ত। রিপাবলিকান পার্টির এই নেতার সময়ে উইলিয়াম এ হুইলার দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন।
২০তম প্রেসিডেন্ট ছিলেন- জেমস গারফিল্ড। তিনি ১৮৮১ সালের ৪ঠা মার্চ থেকে একই বছরের ১৯শে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ২রা জুলাই শনিবার সকাল সাড়ে ৯টায় গুলিবিদ্ধ হন। এরপর অর্ধমাস চিকিৎসার পর ১৯শে সেপ্টেম্বর মারা যান তিনি। তার সময়ে ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন চেস্টার এ আর্থার।
রিপাবলিকান পার্টির নেতা চেস্টার এ আর্থার ছিলেন দেশটির ২১তম প্রেসিডেন্ট। তিনি ১৮৮১ সালের ১৯শে সেপ্টেম্বর ২০তম প্রেসিডেন্ট ছিলেন জেমস গারফিল্ড মারা গেলে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পান। ক্ষমতায় ছিলেন ১৮৮৫ সালের ৪ঠা মার্চ পর্যন্ত।
দেশটির ২২তম প্রেসিডেন্ট ছিলেন গ্রোভার ক্লিভ্ল্যান্ড। যিনি ১৮৮৫ সালের ৪ঠা মার্চ থেকে ১৮৮৯ সালের ৪ঠা মার্চ পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন। ডেমোক্রেটিক পার্টির এই নেতার শাসনামালে ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেনটমাস এ হেন্ড্রিক্স।
রিপাবলিকান নেতা বেঞ্জামিন হ্যারিসন ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের ২৩তম প্রেসিডেন্ট। তিনি ১৮৮৯ সালের ৪ঠা মার্চ থেকে ১৮৯৩ সালের ৪ঠা মার্চ পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন। তার সরকারে লেভি পি মর্টন ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন।
১৮৯৩ সালের ৪ঠা মার্চ থেকে ১৮৯৭ সালের ৪ঠা মার্চ পর্যন্ত ২৪তম প্রেসিডেন্ট ছিলেন গ্রোভার ক্লিভ্ল্যান্ড। ডেমোক্রেটিক পার্টির এই নেতা দ্বিতীয়বার মার্কিন মসনদে চড়েন। এর আগে তিনি ২২তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে ১৮৮৫ সালের ৪ঠা মার্চ থেকে ১৮৮৯ সালের ৪ঠা মার্চ পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন। দ্বিতীয়বার সরকার গঠন করলে গ্রোভার ক্লিভ্ল্যান্ডের ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন অ্যাডলাই ই স্টিভেনসন।
২৫তম প্রেসিডেন্ট ছিলেন উইলিয়াম ম্যাকিন্লি, যিনি ১৮৯৭ সালের ৪ঠা মার্চ থেকে ১৯০১ সালের ১৪ই সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন। রিপাবলিকান পার্টি থেকে বিজয়ী এই প্রেসিডেন্টের ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন গ্যারেট হোবার্ট ও থিওডোর রুজ্ভেল্ট।
আততায়ীর গুলিতে ২৫তম প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম ম্যাকিন্লি নিহত হলে থিওডোর রুজ্ভেল্ট হন বিশ্বের ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট। রিপাবলিকান পার্টির এই নেতা ২৬তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি ১৯০১ সালের ১৪ই সেপ্টেম্বর থেকে ১৯০৯ সালের ৪ঠা মার্চ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। তার ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন চার্লস ডব্লিউ ফেয়ারব্যাংক্স।
আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের ২৭তম প্রেসিডেন্ট ছিলেন উইলিয়াম হাওয়ার্ড ট্যাফ্ট্। তিনি ১৯০৯ সালের ৪ঠা মার্চ থেকে ১৯১৩ সালের ৪ঠা মার্চ পর্যন্ত ক্ষমতার মসনদে ছিলেন। রিপাবলিকান পার্টির এই নেতার শাসনামলে ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন জেমস এস শার্মান।
উড্রো উইল্সন ১৯১৩ সালের ৪ঠা মার্চ দেশটির ২৮তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন। ডেমোক্রেটিক পার্টির এই নেতা ক্ষমতায় ছিলেন ১৯২১ সালের ৪ঠা মার্চ পর্যন্ত। তার ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন থমাস আর মার্শাল।
ওয়ারেন জি. হার্ডিং ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের ২৯তম প্রেসিডেন্ট। ১৯২১ সালের ৪ঠা মার্চ থেকে ১৯২৩ সালের ২রা আগস্ট পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন রিপাবলিকান পার্টির এই নেতা। তার মৃত্যুর সময় পর্যন্ত অন্যতম জনপ্রিয় প্রেসিডেন্ট ছিলেন তিনি। যদিও পরে তার প্রশাসনের অধীনে ঘটে যাওয়া টিপট ডোম কেলেঙ্কারি প্রকাশিত হয় এবং তার পরিচারিকা ন্যান ব্রিটনের সাথে তার সম্পর্কের কথা প্রকাশিত হয়। এরপর থেকে তার নামের সঙ্গে যুক্ত হয় কলঙ্কিত একটি অধ্যায়। এই প্রেসিডেন্টের ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন ক্যালভিন কুলিজ।
যুক্তরাষ্ট্রের ৩০তম প্রেসিডেন্ট ছিলেন ক্যালভিন কুলিজ। ১৯২৩ সালের ২রা আগস্ট থেকে ১৯২৯ সালের ৪ঠা মার্চ পর্যন্ত হোয়াইট হাউজের অধিশ্বর ছিলেন রিপাবলিকান এই নেতা। চার্লস জি ডয়েস তার ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন।
দেশটির ৩১তম প্রেসিডেন্ট ছিলেন হার্বার্ট হুভার। তিনি ১৯২৯ সালের ৪ঠা মার্চ থেকে ১৯৩৩ সালের ৪ঠা মার্চ পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন। রিপাবলিকান পাটির এই নেতার ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন চার্লস কার্টিস।
ফ্রাঙ্কলিন ডি. রুজভেল্ট ১৯৩৩ সালের ৪ঠা মার্চ থেকে ১৯৪৫ সালের ১২ই এপ্রিল পর্যন্ত ৩২তম প্রেসিডেন্টের দায়িত্বে ছিলেন। ডেমোক্রেটিক পার্টি থেকে মার্কিন অধিপতি ফ্রাঙ্কলিনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন জন ন্যান্স গার্নার, এরপর হেনরি এ. ওয়ালেস ও শেষে হ্যারি এস ট্রুম্যান।
দেশটির ৩৩তম প্রেসিডেন্ট ছিলেন সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট হ্যারি এস ট্রুম্যান। তিনিও ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতা ছিলেন। ১৯৪৫ সালের ১২ই এপ্রিল থেকে ১৯৫৩ সালের ২০শে জানুয়ারি তক্ ক্ষমতায় ছিলেন ট্রুম্যান। তার ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন অ্যালবেন বার্কলি।
ডোয়াইট ডি. আইজেনহাওয়ার ১৯৫৩ সালের ২০শে জানুয়ারি থেকে ১৯৬১ সালের ২০শে জানুয়ারি পর্যন্ত ছিলেন হোয়াইট হাউসের অধিশ্বর। রিপাবলিকান পার্টির এই নেতার ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন রিচার্ড নিক্সন।
বিশ্বের ক্ষমতাধর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৩৫তম প্রেসিডেন্ট ছিলেন *জন এফ কেনেডি। ডেমোক্রেটিক পার্টির হয়ে লড়ে তিনি ১৯৬১ সালের ২০শে জানুয়ারি ক্ষমতার মসনদে চড়েন। ছিলেন ১৯৬৩ সালের ২২শে নভেম্বর পর্যন্ত। উল্লেখ্য, বিশ্বের বিখ্যাত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর (এয়ারপোর্ট) “জন এফ কেনেডি” এই প্রেসিডেন্টের নামেই আজও বিদ্যমান আছে। এটি নিঊইয়র্কেই অবস্থিত। লিন্ডন বি. জনসন ছিলেন তার ভাইস শাসনামলে ভাইস চেয়ারম্যান।
আবার লিন্ডন বি. জনসন ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের ৩৬তম প্রেসিডেন্ট। ডেমোক্রেটিক এই নেতা ১৯৬৩ সালের ২২ই নভেম্বর থেকে ১৯৬৯ সালের ২০শে জানুয়ারি পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। তার সময়ে ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন হুবার্ট হাম্ফরে।
৩৭তম প্রেসিডেন্ট ছিলেন রিচার্ড নিক্সন। রিপাবলিকান পার্টির এই নেতা ১৯৬৯ সালের ২০শে জানুয়ারি থেকে ১৯৭৪ সালের ৯ই আগস্ট পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তার আমলে ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন স্পিরো অ্যাগনিউ ও জেরাল্ড ফোর্ড।
১৯৭৪ সালের ৯ই আগস্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট থেকে প্রেসিডেন্টের দায়িত্বে আসেন জেরাল্ড ফোর্ড। রিপাবলিকান পার্টির এই নেতা যুক্তরাষ্ট্রের ৩৮তম প্রেসিডেন্ট জিসেবে ১৯৭৭ সালের ২০শে জানুয়ারি পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন নেলসন রকফেলার।
জিমি কার্টার আমেরিকান রাজনীতিবিদ, লেখক এবং ডেমোক্রেটিক পার্টির সদস্য। তিনি ১৯৭৭ সালের ২০শে জানুয়ারি থেকে ১৯৮১ সালের ২০শে জানুয়ারি পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৩৯তম প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ২০০২ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন। ওয়াল্টার মন্ডেল তার ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন।
রোনাল্ড উইলসন রেগন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪০তম প্রেসিডেন্ট, যিনি ১৯৮১ সালের ২০শে জানুয়ারি থেকে ১৯৮৯ সালের ২০শে জানুয়ারি পর্যন্ত এই দায়িত্ব পালন করেন। প্রেসিডেন্টের আগে তিনি হলিউডের চলচ্চিত্র অভিনেতা ছিলেন। এরপর তিনি ১৯৬৭ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত ক্যালিফোর্নিয়ার ৩৩তম গভর্নরেরও দায়িত্ব পালন করেন। রিপাবলিকান পার্টির এই নেতার ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশ।
জর্জ হার্বার্ট ওয়াকার বুশ ছিলেন একজন আমেরিকান রাজনীতিবিদ, কূটনীতিক এবং ব্যবসায়ী। যিনি ১৯৮৯ সালের ২০শে জানুয়ারি থেকে ১৯৯৩ সালের ২০শে জানুয়ারি পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪১তম প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। রিপাবলিকান পার্টির এই সদস্য রোনাল্ড রিগানের অধীনে ১৯৮১ থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত দেশটির ৪৩তম ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে এবং এর আগে বিভিন্ন ফেডারেল পদে দায়িত্ব পালন করেন। জর্জ ওয়াকার বুশের সময়ে ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন ড্যান কোয়ায়েল।
বহুল আলোচিত বিল ক্লিনটন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪২তম প্রেসিডেন্ট ছিলেন। ১৯৯৩ সালের ২০শে জানুয়ারি থেকে ডেমোক্রেটিক এই নেতা ২০০১ সালের ২০শে জানুয়ারি পর্যন্ত দেশটির ক্ষমতার মসনদে থেকেছেন। এই সময়ে ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন আল গোর।
জর্জ ওয়াকার বুশ বা জর্জ ডব্লিউ বুশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৩তম প্রেসিডেন্ট, যিনি ২০০১ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। জজ বুশ ২০০১ ও ২০০৪ সালের যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী হন। এর আগে তিনি ১৯৯৫ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের ৪৬তম প্রশাসক বা গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
বারাক ওবামা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৪তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০৯ সালের ২০শে জানুয়ারি থেকে ২০১৭ সালের ২০শে জানুয়ারি পর্যন্ত ডেমোক্র্যাটিক পার্টির এ সদস্য দেশটি পরিচালনা করেন। ওবামা ছিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম আফ্রো-মার্কিন বংশোদ্ভূত প্রেসিডেন্ট। তিনি এর আগে ২০০৫ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত ইলিনয় থেকে মার্কিন সিনেটর এবং ১৯৯৭ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত ইলিনয় রাজ্যের সিনেটর হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। ডেমোক্র্যাটিক পার্টির এই নেতার ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
এছাড়া, এবারকার আসন্ন ইলেকশনে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্পই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তিনি ২০১৭ সালের ২০শে জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের ২০শে জানুয়ারি পর্যন্ত দেশটির ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত ছিলেন।
এখানে উল্লেখ থাকে যে, উক্ত ডোনাল্ড ট্রাম্প একজন বড় ধনাঢ্য ব্যবসায়ী, বিনিয়োগকারী, বিশিষ্ট সামাজিক ব্যক্তিত্ব, লেখক হিসেবেও আলোচিত। ট্র্যাম্পের আমলে ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন মাইক পেন্স।
অবশেষে, আমেরিকার ডেমোক্রেট পার্টির নেতা জো বাইডেন দেশটির ৪৬তম প্রেসিডেন্ট (বর্তমান)। ২০২১ সালের ২০শে জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত দেশটির ক্ষমতার মসনদে আছেন তিনি। অবশ্য ৫ই নভেম্বরে ইলেকশনের পরেও ২০শে জানুয়ারি পর্যন্তও তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্বে থাকবেন। জো বাইডেন-এর এই সময়কালে কমলা হ্যারিস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। Ref: thikana/ al jazeera