বৃহস্পতিবার, ১৭ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

যাতায়াতে সীমাহীন ভোগান্তি এলাকাবাসীর নাঙ্গলকোটের গুরুত্বপূর্ণ অধিকাংশ সড়কই বেহাল দশায়

<span class="entry-title-primary">যাতায়াতে সীমাহীন ভোগান্তি এলাকাবাসীর</span> <span class="entry-subtitle">নাঙ্গলকোটের গুরুত্বপূর্ণ অধিকাংশ সড়কই বেহাল দশায়</span>
২৪ Views

            আবুল কাশেম গাফুরী\ বর্ষার শুরুতেই কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের বেহাল সড়ক ব্যবস্থা তার স্বরূপে ফিরেছে। উপজেলার সর্বত্র গুরুত্বপূর্ণ অধিকাংশ সড়কের কার্পেটিং উঠে ছোট-বড় অসংখ্য খানা খন্দক এক-একটি পুকুরে পরিণত হয়েছে। সড়কগুলোর ছোট-বড় অসংখ্য খানা-খন্দক দিয়ে ছোট-বড়  যানবাহন চলাচলে এলাকাবাসীকে প্রতিনিয়ত নাকাল হতে হচ্ছে। বেহাল সড়ক ব্যবস্থা দিয়ে এলাকাবাসীর যাতায়াতে ভোগান্তির যেন শেষ নেই।

            বিধ্বস্ত সড়কগুলো দিয়ে মালবাহী ট্রাক-ট্রাকটর, পিকআপভ্যান, যাত্রীবাহি সিএনজি চালিত অটোরিক্সা, ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সা, মাইক্রোবাস, স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীদের চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। দীর্ঘ প্রায় ৫/৬ বছর থেকে উপজেলার বিধ্বস্ত সড়ক ব্যবস্থা দিয়ে এলাকাবাসীকে ভোগান্তির মধ্যে দিয়ে নিয়মিত যাতায়াত করতে হচ্ছে। অনেক সড়ক দীর্ঘ ১০ বছরেও সংস্কার করা হয়নি বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেন। উপজেলা এলজিইডি সড়কগুলো মেরামতে প্রতিনিয়ত আশারবাণী শোনালেও দীর্ঘদিনেও অধিকাংশ সড়ক সংস্কার করা সম্ভব হয়নি। নাঙ্গলকোট উপজেলা প্রকৌশলী অহিদুল ইসলাম সিকদার বলেন, কুমিল্লা উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ১শ’ ৫০ কিলোমিটার নতুন সড়ক নির্মাণ এবং পুরাতন সড়ক মেরামতের জন্য প্রকল্প প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।

            জানা যায়, উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ  বাংগড্ডা চারিজানিয়া উত্তর মাহিনী  সড়ক, -জোড্ডা-দৌলখাঁড় সড়ক, দৌলখাঁড়-বিরাহিমপুর সড়ক, মাহিনী-অলিপুর-জোড়পকুরিয়া পর্যন্ত সড়ক, নাঙ্গলকোট-শ্রীফলিয়া-বাঙ্গড্ডা সড়ক, মাধবপুর-নাঙ্গলকোট স্টীলব্রিজ সড়ক, বটতলী-রাজারবাগ-মান্দ্রা-নাথেরপেটুয়া সড়ক, ঘোড়াময়দান-গোহারুয়া সড়ক, চডিয়া বাজার-নাথেরপেটুয়া সড়ক, ভোলাইন-আদ্রা-মেরকোট সড়ক, তালতলা-হাসানপুর-বাইয়ারা সড়ক, মন্তলী-বাসন্ডা-ঝাটিয়াপাড়া সড়ক, শান্তিরবাজার-পিপড্ডা সড়ক, ছুপুয়া-মাহিনী-শান্তিরবাজার সড়ক, বাঙ্গড্ডা-গান্দাছি সড়ক, গান্দাছি-শ্যামপুর সড়ক, পরিকোট-শ্যামপুর-সড়ক, গোমকোট বাজার থেকে ডিপজল হয়ে বাগমারা পর্যন্ত সড়কসহ আরো ছোট-বড় অনেক সড়কে দীর্ঘদিন থেকে কার্পেটিং উঠে ছোট-বড় অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়ে এলাকাবাসী যাতায়াতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এছাড়া, গ্রামীণ কাঁচা সড়কগুলোও কর্দমাক্ত হওয়ায় এলাকাবাসীকে ভোগান্তির মধ্যে দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে।

            সরেজমিনে বিভিন্ন সড়ক ঘুরে ও খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শংকুরপুর-জোড্ডা-দৌলখাঁড়-বক্সগঞ্জ সড়কের শংকুরপুর প্রাইমারী স্কুল হতে জয়াগ, মুরগাঁও দৌলখাঁড় পর্যন্ত সড়কটিতে কার্পেটিং উঠে অসংখ্য খানা-খন্দকে ছোট-বড় যানবাহন যাতায়াতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। দৌলখাঁড়-বিরাহিমপুর সড়কটিতে দৌলখাঁড় বাজার হতে বিরাহিমপুর পর্যন্ত ছোট-বড় খানা-খন্দকে সড়কটি যাতায়াতে একেবারেই অনুপযোগী অবস্থায় রয়েছে। মাহিনী-অলিপুর-জোড়পকুরিয়া পর্যন্ত সড়কের মাহিনী বাজার হতে শুরু হয়ে ছুপুয়া, অলিপুর বাজার পর্যন্ত ছোট-বড় অনেক ছোট-বড় খানা-খন্দক পুকুরে পরিণত হয়েছে। নাঙ্গলকোট-শ্রীফলিয়া-বাঙ্গড্ডা সড়কের কৈয়া হতে দৌলতপুর পর্যন্ত অসংখ্য ছোট-বড় খানা-খন্দক পুকুরে পরিণত হওয়ায় ছোট-বড় যানবাহন চলাচলে ভোগান্তি পোহতে হচ্ছে।

            তালতলা-হাছানপুর-বাইয়ারা সড়কে অসংখ্য ছোট-বড় খানা খন্দকে বর্ষার পানি জমে সড়কটি যাতায়াতে একেবারে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এভাবে উল্লেখিত প্রত্যেকটি সড়কে অসংখ্য ছোট-বড় খানা-খন্দক দিয়ে যানবাহনসহ পথচারীদের যাতায়াতে নাকাল হতে হচ্ছে। খানা-খন্দকগুলো দিয়ে ছোট-বড় যানবাহনকে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। একটু-এদিক-সেদিক হলে যানবাহন উল্টে যাত্রীদের দূর্ঘটনায় প্রাণহানির আশংকা রয়েছে। অন্যদিকে বেহাল সড়ক দিয়ে যাতায়াতে ছোট-বড় যানবাহনকে প্রায় নষ্ট হতে হচ্ছে। সড়কগুলো দিয়ে এ্যাম্বুলেন্সবাহী অসুস্থ রোগীদের আরো অসুস্থ হতে হচ্ছে। বেহাল সড়ক দিয়ে আধা ঘন্টার যাতায়াতে প্রায় এক ঘন্টা অতিরিক্ত সময় ব্যয় হচ্ছে।

            নাঙ্গলকোট-শ্রীফলিয়া-বাঙ্গড্ডা সড়কে যাতায়াতকারী ছেহরিয়া গ্রামের জালাল  উদ্দিন বলেন, গত ৫ বছরে সড়কটিতে ছোট-বড় অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়ে সড়ক দিয়ে ছোট-বড় যানাবাহনে এলাকাবাসীকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। দৌলখাঁড় গ্রামের মাওলানা শহিদুল্লাহ মজুমদার বলেন, শংকুরপুর-জোড্ডা-দৌলখাঁড় এবং দৌলখাঁড়-বিরাহিমপুর সড়কটি বিভিন্নস্থানে অসংখ্য ছোট-বড় খানা-খন্দক দিয়ে এলাকাবাসীকে যাতায়াতে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তালতলা-হাছানপুর-বাইয়ারা সড়কে যাতায়াতকারী কলেজ শিক্ষার্থী মাহমুদা আক্তার ও খাদিজা আক্তার  বলেন, এ বেহাল সড়ক দিয়ে নিয়মিত যাতায়াত করতে গিয়ে আমাদেরকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এসড়ক দিয়ে হেঁটেও যাতায়াত করা যায় না। সড়কটি দ্রæত  মেরামত করা হোক।

            এ বিষয়ে নাঙ্গলকোট উপজেলা প্রকৌশলী অহিদুল ইসলাম সিকদার বলেন, কুমিল্লা উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় উপজেলার সর্বত্র ১শ’ ৫০ কিলোমিটার নতুন সড়ক নির্মাণ এবং পুরাতন সড়ক মেরামতের জন্য প্রকল্প প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। প্রস্তাব পাশ হলে ক্রমান্বয়ে সড়কগুলোর উন্নয়ন ও মেরামত করা হবে।

Share This