শ্রেণিকক্ষ সংকটে পর্দা টাঙ্গিয়ে চলছে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠদান
নিজস্ব প্রতিনিধি\ শ্রেণিকক্ষ সংকটে কুমিল্লার তিতাস উপজেলার ভিটিকান্দি ইউনিয়নের কাশীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১১১ জন শিক্ষার্থীর পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। বাধ্য হয়ে পর্দা টাঙ্গিয়ে শ্রেণিকক্ষ ভাগাভাগি করে পাঠদান চালিয়ে যেতে হচ্ছে শিক্ষকদের।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই বিদ্যালয়ের দু’টি ভবনের মধ্যে পুরনো ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় গত বছরের নভেম্বর মাসে সেটিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। নতুন ভবনটিতে রয়েছে দু’টি কক্ষ। এর মধ্যে একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ অন্য শিক্ষকদের অফিস কক্ষ এবং অন্যটি পাঠদানের কক্ষ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। কক্ষ সংকটের কারণে বর্তমানে ওই কক্ষ এবং শিক্ষকদের কক্ষে কখনো পর্দা টাঙ্গিয়ে, আবার কখনো আসবাবপত্র দিয়ে বেড়া বানিয়ে চলছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান। এতে করে শিশু শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছে সুশিক্ষার পরিবেশ থেকে। কক্ষ সংকটে মাঝেমধ্যে বিদ্যালয়ের খোলা মাঠেও চলে শিশুদের পাঠদান।
বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী সীমা আক্তার বলে, ‘শ্রেণিকক্ষ না থাকায় একই কক্ষে কাপড়ের বেড়া দিয়ে আমাদের ক্লাস নিচ্ছেন স্যাররা। এতে আমাদের সমস্যা হয়। আমাদের নতুন ভবন দরকার।’ চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্র বলে, ‘অনেক দিন ধরে আমাদের শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে পড়াশোনা করতে কষ্ট হচ্ছে। আমরা চাই আমাদের বিদ্যালয়ের বড় একটি বিল্ডিং হোক। সেখানে আমরা আনন্দে পড়াশোনা করতে পারব।’
কাশীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনোয়ারা বেগম বলেন, ‘আমাদের পুরনো ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় গত বছরের নভেম্বর মাসে এটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। তাই একই কক্ষে পর্দা টাঙ্গিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্লাস নিতে হচ্ছে। নতুন ভবন হয়ে গেলে শিক্ষার্থীরা শিক্ষার ভালো পরিবেশ পাবে। কিছুটা সমস্যা হলেও আমরা চেষ্টা করছি ১১১ জন শিক্ষার্থীর পাঠদান ভালোভাবে চালিয়ে নেয়ার।’
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আবদুল কাদির বলেন, ‘আমি প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে জানতে পেরেছি যে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বিষয়টির সমস্যা সমাধানে কাজ করছেন। আশা করি, খুব দ্রæত দরপত্র আহবান করে এখানে নতুন একটি ভবন হবে। তবে শত সমস্যা থাকলেও শিক্ষার্থীদের পাঠদান যেন স্বাভাবিক থাকে, আমরা সে বিষয়ে সতর্ক আছি।’
এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা লায়লা পারভীন বানু বলেন, ‘ওই বিদ্যালয়ের পুরনো ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ওই ভবনটিতে বর্তমানে পাঠদান দেয়া বন্ধ রয়েছে। আমরা বিষয়টি অবগত আছি। এরই মধ্যে ওই বিদ্যালয়ে নতুন ভবনের অনুমতি হয়েছে বলে জেনেছি। শিগগিরই দরপত্র আহ্বানের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলেই সেখানে নতুন ভবনের নির্মাণকাজ শুরু হবে। আশা করছি, দ্রæত সময়ের মধ্যে শ্রেণিকক্ষ সংকটের সমাধান হবে।’