
সাড়ে ৩ বছরেও শেষ হয়নি লাকসামে ডাকাতিয়ার ওপর নির্মিতব্য চুনাতি ব্রীজ

আবুল কালাম আজাদ\ রাজধানীর হাতিরঝিলের আদলে লাকসামে দৃষ্টিনন্দন আর্চ সেতু নির্মাণ কাজ ধীরগতিতে চলছে। ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে এলাকাবাসীর ভোগান্তির অভিযোগ পাওয়া গেছে। নির্মাণাধীন সেতুটির তিন বছরে ৬০ শতাংশ কাজও এখনো শেষ হয়নি।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, কুমিল্লার লাকসাম উপজেলাবাসীর বহুল প্রত্যাশিত চুনাতির সেতুটির কাজ মন্থর গতিতে চলায় দুর্ভোগে আছেন লক্ষাধিক জনসাধারণ। পাশাপাশি পণ্যবাহী পরিবহন পড়ছে চরম ভোগান্তিতে। পৌরসভার ১, ২ ও ৪নং ওয়ার্ল্ড এবং উপজেলার কান্দিরপাড় ইউনিয়নের চুনাতি মনোহরপুর গ্রামের হাজারো মানুষ এই ভোগান্তিতে রয়েছেন। তাদের অভিযোগ কার্যাদেশ পাওয়ার তিন বছর পরও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান যথাসময়ে নির্মাণ কাজ শেষ করতে পারেনি এবং সেতুটির ৬০ ভাগ কাজ এখনো অসম্পন্ন। জানা গেছে, স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল বিভাগের লাকসাম উপজেলা ও পৌরশহরে ডাকাতিয়া নদীর ওপর রাজধানীর হাতিরঝিলের আদলে এই দৃষ্টিনন্দন সেতু নির্মাণের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়। ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে কাশেম ট্রেডার্স এন্ড দি নিউ ট্রেড লিংক নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এ ব্রিজটি নির্মাণের কার্যাদেশ পায়। ৪৩ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৯.৩০ মিটার প্রস্থের সেতু নির্মাণের জন্য বরাদ্দের পরিমাণ ৭ কোটি ৩৭ লাখ ১১ হাজার ২৪৬ টাকা। তবে কার্যাদেশ পাওয়ার প্রায় তিন বছর পার হওয়া সত্তে¡ও চুনাতি-মনোহরপুর ডাকাতিয়া নদীর ওপর নির্মিত সেতুর মূল অবকাঠামোর ৬০ ভাগ কাজও শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
লাকসামের ছোট্ট চাঁদপুর গ্রামের বাবুল মজুমদার, ওমর ফারুক বলেন, ডাকাতিয়া নদীর ওপর সেতুটির নির্মাণ কাজ ধীরগতিতে চলায় দীর্ঘ চার বছর ধরে জরাজীর্ণ বিকল্প সেতু দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পায়ে হেটে চলাচল করছে। যাতায়াত ও মাল পরিবহনে চরম ভোগান্তিতে পড়ছে তারা। এছাড়াও প্রতিদিন এলাকার বয়স্ক ব্যক্তি ও শিক্ষার্থীরা ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে জরাজীর্ণ বিকল্প সেতু দিয়ে তাই সেতুটি দ্রæত নির্মাণ করা জরুরি।
এ ব্যাপারে কাশেম ট্রেডার্স ঠিকাদার তাজুল ইসলাম বলেন, পুরোনো সেতু অপসারণ ও মালামাল-শ্রমিকের ঘরের জায়গা না থাকায় কাজের সময় লেগেছে, এছাড়া বর্ষাকালে নদীতে পানি আসার কারণে কাজ বাধাগ্রস্ত হয়। তাই সেতুর কাজ শেষ করতে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। ইতোমধ্যে সেতুটির প্রায় ৮০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তাই চলতি বছরের জুনের মধ্যে সেতুটির কাজ সম্পন্ন করা হবে।
লাকসাম উপজেলা উপ-সহকারী প্রকৌশলী (এলজিইডি) মোহাম্মদ জাহিদ হোসেন বলেন, চুনাতি মনোহরপুর এলাকায় ডাকাতিয়া নদীর ওপর সেতুটির নির্মাণ কাজ ৭৫ শতাংশ শেষ হয়েছে। সেতুর দু’পাশের জায়গা জটিলতাসহ বিভিন্ন কারণে নির্মাণ কাজে কিছুটা বিলম্বিত হয়েছে। এছাড়া দেশের প্রেক্ষাপটের কারণে ঠিকাদার ও কাজের শ্রমিক ঠিকমত না থাকায় নির্মাণ কাজ বন্ধ ছিল। এখন চলমান আছে আশা করছি দু’একমাসের মধ্যে নির্মাণ শেষ হবে।