শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পথচারী ও যানবাহনে চলাচলকারী যাত্রী সাধারন  ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা অংশের দু’পাশে ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়

স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পথচারী ও যানবাহনে চলাচলকারী যাত্রী সাধারন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা অংশের দু’পাশে ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়

            সাদিক মামুন\ দেশের ইকোনমিক লাইফ লাইন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক। ফোরলেনের মিডিয়ান ডিভাইডারের মাঝখানে সবুজ ঘাস আর নানা প্রজাতির সারি সারি বাহারি ফুলের গাছ। মনোমুগ্ধকর দৃশ্যের নান্দনিক এ সৌন্দর্য মহাসড়কের কুমিল্লার চান্দিনা ও চৌদ্দগ্রাম অংশে রাস্তার পাশে ফেলে রাখা ময়লা-আবর্জনার স্তূপ ¤ø­ান করে দিচ্ছে। মহাসড়কে চলাচলকারি যানবাহন যাত্রী ও পথচারিরা আবর্জনার দুর্গন্ধ সহ্য করেই ওই অংশ পার হয়ে থাকেন। মহাসড়কের পাশে ফেলে রাখা ময়লা-আবর্জনায় মারাত্মকভাবে দুষিত হচ্ছে পরিবেশ। এসব ময়লার ভাগার সড়ক ডিভাইডারের মাঝখানের ও সড়কের দু’পাশের সবুজায়নের সৌন্দর্য নষ্ট করছে।

            সরেজমিনে দেখা গেছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার দাউদকান্দির গৌরীপুর, ইলিয়টগঞ্জ, চান্দিনার ডুমুরিয়া ব্রিজ এলাকা, বুড়িচংয়ের বিখ্যাত নিমসার কাচাঁবাজারের রোডডিভাইডারসহ দু’পাশের এক কিলোমিটার এলাকা, সদর উপজেলার নিশ্চিন্তপুর, আলেখারচর, সদর দক্ষিণের কোটবাড়ি বিশ্বরোড, বেলতলী, পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড রেলক্রসিংয়ের দু’পাশের এলাকা, পদুয়ারবাজার সংলগ্ন রামপুর, সুয়াগঞ্জ, চৌদ্দগ্রাম টেকনিক্যাল এলাকা ও বিসিক এলাকাসহ কমপক্ষে ২০টিরও বেশি স্থানে প্রতিদিন শত শত টন ময়লা-আবর্জনার স্তÍূপ জমছে। এসব ময়লার ভাগাড়ে দিনরাত ইঁদুর, কুকুর ও বিড়ালের উৎপাত চলছে। ফলে ময়লা ছড়িয়ে সড়কের ওপরে এসে পড়ছে। আর তা পরিবহনের চাকার মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে দূর-দূরান্তে। এতে সৃষ্টি হচ্ছে দুর্গন্ধযুক্ত পরিবেশ। ফলে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন যাত্রীসাধারণসহ এলাকার বাসিন্দারা। বাতাসে ময়লা ও বিষাক্ত ধুলা মিশে আশপাশের পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। সৃষ্টি হচ্ছে চরম স্বাস্থ্যঝুঁকি।

            মহাসড়ক সংলগ্ন কল-কারখানার বর্জ্য, হোটেল রেস্তোরাসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বর্জ্য, পচা শাকসবজি, হাঁস-মুরগির বিষ্ঠাসহ আবাসিক এলাকার এবং মহাসড়ক সংলগ্ন পৌর এলাকার নোনা ধরণের বর্জ্য সড়কের পাশে ফেলা হচ্ছে। এছাড়াও মহাসড়ক এলাকার সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলোর বর্জ্য শোধনাগার না থাকায় রোগীদের ব্যবহৃত বর্জ্য ফেলা হচ্ছে মহাসড়কে। এতে পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। আশপাশের বসতিপূর্ণ এলাকায় জীবাণু ছড়িয়ে পড়ায় অনেকেই বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। ময়লা আবর্জনার স্তুূপ আগুন দিয়ে পুড়ানোর ফলে সৃষ্ট ধোয়া সড়কের ডিভাইডারসহ দু’পাশের গাছপালার ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। ফলে পরিবেশ বিপর্যয়ের সম্ভবনা রয়েছে। মহাসড়কের পাশে ময়লা ফেলার নির্ধারিত স্থান না থাকার কারণে রাস্তার দু’পাশ যেনো ময়লার ভাগাড়ে পরিনত হয়েছে।

            চৌদ্দগ্রাম পৌর মেয়র মীর হোসেন মিরু বলেন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য আমরা কোনো জায়গা বরাদ্দ পাইনি। বরাদ্দ পেতে উপজেলার মাসিক সভা এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে অনুরোধ জানানো হয়েছে। ময়লা সংগ্রহ না করা হলে পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় ময়লা স্তুূপ হয়ে যাবে। তাই বাধ্য হয়ে ময়লাগুলো সংগ্রহ করে সড়কের পাশে ফেলতে হচ্ছে।

            বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) কুমিল্লা আঞ্চলিক শাখার সাধারণ সম্পাদক ও মানবাধিকার কর্মী আলী আকবর মাসুম বলেন, দেশের লাইফলাইনখ্যাত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দিয়ে প্রতিদিনই হাজার হাজার যাত্রী এবং পর্যটকের ঢাকা চট্টগ্রাম আবার পর্যটন নগরী কক্সবাজার, রাঙামাটি, বান্দরবানসহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে যাতায়াত রয়েছে। কিন্তু মহাসড়কের বিভিন্ন অংশে ময়লা-আবর্জনার ভাগাড় গড়ে ওঠায় পর্যটকদের যাতায়াতে বিরুপ প্রভাব পড়ছে। এছাড়া মহাসড়কের পাশে ময়লা-আবর্জনা ফেলার কারণে পরিবেশ হুমকির মুখে পড়ছে।

            কুমিল্লা সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীতি চাকমা বলেন, সড়কের পাশে ময়লার ডাম্পিং করার কারো অধিকার নেই, বিষয়টি আমরা জেনেছি, এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Share This

COMMENTS