সোমবার, ১৫ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

সমাজ ও দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে তরুণদের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান

সমাজ ও দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে তরুণদের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান
১৭ Views

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস তরুণদের মেধা, শক্তি ও সৃজনশীলতাকে দেশের উন্নয়ন ও সমাজের অগ্রগতিতে কাজে লাগানোর আহ্বান জানিয়েছেন।

সোমবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের শাপলা হলে আয়োজিত ‘ইয়ুথ ভলান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’ প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি বলেন,
“আমি প্রত্যেক তরুণকে আহ্বান জানাই—তোমাদের অর্জন যেন শুধু ব্যক্তিগত সাফল্যে সীমাবদ্ধ না থাকে; বরং তা সমাজ ও জাতির জন্য অনুপ্রেরণার দৃষ্টান্ত হয়ে উঠুক। আমি বিশ্বাস করি, তরুণরা সক্রিয় থাকলে দেশের কোনো সমস্যাই অমীমাংসিত থাকবে না।”

অনুষ্ঠানে ১২ তরুণকে স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজের স্বীকৃতি হিসেবে পুরস্কার তুলে দেন প্রধান উপদেষ্টা।

তিনি বলেন,
“আজ আমরা তারুণ্যের শক্তিকে উদযাপন করছি। এটিই জাতির চালিকাশক্তি। একটি দেশের যুবসমাজ যখন উদ্যমী ও উদ্ভাবনী শক্তিতে সমৃদ্ধ হয়, তখন কোনো প্রতিবন্ধকতাই তাদের অগ্রযাত্রা থামাতে পারে না।”

তরুণদের বহুমুখী অবদানের প্রসঙ্গ টেনে অধ্যাপক ইউনূস উল্লেখ করেন, তারা শুধু শিক্ষাক্ষেত্রে নয়—স্বাস্থ্যসেবা, পরিবেশ সুরক্ষা, দারিদ্র্য বিমোচন ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায়ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তিনি বলেন, “যুগে যুগে তরুণরাই এ দেশের ইতিহাস রচনা করেছে।”

নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “জনস্বাস্থ্যের সংকট, শিক্ষা-সুবিধার ঘাটতি কিংবা পরিবেশগত বিপর্যয়—যে চ্যালেঞ্জই আসুক না কেন, হতাশ না হয়ে আমাদের নিজস্ব শক্তি দিয়ে একসাথে মোকাবিলা করতে হবে। আমি আশা করি, এই কাজেও তরুণরাই নেতৃত্ব দেবে।”

স্বেচ্ছাসেবার গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, “এটি শুধু মানবকল্যাণেই সীমাবদ্ধ নয়; বরং আত্ম-উন্নয়ন, চরিত্র গঠন ও নেতৃত্ব বিকাশের অন্যতম পথ। আমরা চাই, তরুণরা সমাজের নীতি নির্ধারক, উদ্ভাবক ও পরিবর্তনের স্থপতি হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলুক।”

পুরস্কারপ্রাপ্তদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন,
“এই পুরস্কার শুধু স্বীকৃতি নয়, এটি একটি নতুন আহ্বান। আরও সাহসী হও, নেতৃত্ব দাও, সমাজের কল্যাণে নতুন উদ্ভাবন নিয়ে কাজ করো।”

তিনি জোর দিয়ে বলেন, তরুণদের সক্রিয় অংশগ্রহণ শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পরিবেশসহ প্রতিটি খাতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম। যদিও পথ সহজ নয়, তবে এর মাধ্যমেই ধৈর্য, সহনশীলতা ও নেতৃত্বের মতো গুণাবলি বিকশিত হয়।

অধ্যাপক ইউনূস প্রত্যাশা প্রকাশ করেন,
“আমরা চাই তরুণরা নতুন নীতি, যুগান্তকারী ধারণা ও সামাজিক পরিবর্তনের অগ্রদূত হোক। তাদের সম্মিলিত প্রয়াসেই বাংলাদেশ একদিন উন্নত, মানবিক ও উদ্ভাবনী রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বে মর্যাদার সঙ্গে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে।”

অনুষ্ঠানে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মাহবুব-উল-আলম এবং পুরস্কার বিজয়ী সুরাইয়া ফারহানা রেশমাও বক্তব্য রাখেন।

Share This