কুমিল্লা সদর দক্ষিন উপজেলার যত্রেতত্রে গড়ে উঠেছে লাইসেন্সবিহীন হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার


নিজস্ব প্রতিনিধি\ কুমিল্লা সদর দক্ষিন উপজেলার যত্রেতত্রে ব্যাঙের ছাতার ন্যায় গড়ে উঠেছে অসংখ্য বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। এগুলোর বেশিরভাগের নেই বৈধ লাইসেন্স। মেয়াদোত্তীর্ণ লাইসেন্স দিয়েই চলছে এসব হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার, যা জনস্বাস্থ্য ঝুঁকির কারণ এবং প্রায়ই ঘটছে নানা অঘটন। এই প্রতিষ্ঠানগুলোর সেবার মান নিয়েও অভিযোগ রয়েছে। নবায়নের আবেদন কপি দেখিয়ে বছরের পর বছর চলছে এসব হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার।
কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার টমছমব্রীজ, শাকতলা, জাঙ্গালিয়া, সুয়াগাজী বাজার, পদুয়ার বাজার, বিশ্বরোড এলাকায় বেশিরভাগ এসব অবৈধ ক্লিনিক গড়ে উঠেছে। দিনদিন বাড়ছে এর সংখ্যা। তবে সদর দক্ষিণ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বলছেন, অচিরেই মেয়াদোত্তীর্ণ হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সূত্রে জানা যায়, কুমিল্লা সদর দক্ষিণে সরকারি তালিকাভুক্ত ২৬টি বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে। এগুলোর বেশিভাগের লাইসেন্স নবায়ন করা হয়নি। বছরের পর বছর নবায়ন ছাড়াই চলছে এসব হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। অনেকে আবার অনুমোদন না পেয়েও শুধুমাত্র আবেদন করেই শুরু করে দিয়েছে ডায়াগনস্টিক সেন্টার। এসব প্রতিষ্ঠানে ভুয়া, হাতুড়ে ডাক্তার, অদ নার্স ও স্টাফ নিয়োগ দিয়ে মধ্যবিত্ত, দরিদ্র ও অসহায় রোগীদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে। অপর্যাপ্ত সরঞ্জাম দিয়ে অসহায় রোগীদের সঙ্গে ভয়াবহ প্রতারণা করা হচ্ছে।
অনেকে আবার দালাল নিয়োগ করে বাস ও সিএনজি স্ট্যান্ডে গ্রামের সহজ সরল মানুষকে ধোকা দিয়ে এসব হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যাচ্ছে। এতে মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে জনস্বাস্থ্য।
মাজহারুল ইসলাম নোমান নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি জানান, সদর দক্ষিণের টমছম ব্রীজের আশপাশে এবং সুয়াগাজী বাজারে চিকিৎসা সেবার নামে অবৈধ ব্যবসার ফাঁদ পাতা হয়েছে। অদক্ষ ডাক্তার দ্বারা সিজার করায় অনেক সময় প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে। প্রশাসনের কাছে দাবি জানাচ্ছি, মেয়াদোত্তীর্ণ হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। মানুষের জীবন নিয়ে ব্যবসা করার অধিকার কারোর নেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনৈক ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের নানা শর্তে তারা বছরের পর বছর লাইসেন্স নবায়ন করতে পারছেন না। কোনো উপায় না দেখে লাইসেন্স নবায়ন ছাড়াই এগুলো পরিচালনায় তারা বাধ্য হয়েছেন।
কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মেসবাহউদ্দিন বলেন, অচিরেই এসব হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হবে।
কুমিলা সদর দক্ষিণ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুবাইয়া খানম বলেন, মেয়াদোত্তীর্ণ হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে কুমিল্লা সিভিল সার্জন আলী নুর মোহাম্মদ বশীর আহমেদ বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার মাধ্যমে মেয়াদোত্তীর্ণ হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।