শনিবার, ২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

বাংলাদেশে পরিচ্ছন্ন ও সাশ্রয়ী জ্বালানি সমাধানের ওপর গুরুত্বারোপ প্রধান উপদেষ্টার

বাংলাদেশে পরিচ্ছন্ন ও সাশ্রয়ী জ্বালানি সমাধানের ওপর গুরুত্বারোপ প্রধান উপদেষ্টার
১১ Views

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বক্তব্য: বাংলাদেশকে পরিচ্ছন্ন ও টেকসই জ্বালানির পথে এগোতে হবে

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে টেকসই করতে হলে এখনই দেশকে পরিচ্ছন্ন, নিরাপদ ও সাশ্রয়ী জ্বালানি ব্যবস্থার দিকে এগোতে হবে।

বৃহস্পতিবার রাতে অ্যানথ্রোপোসিন ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান কার্ল পেজ ও তার সহকর্মীদের সঙ্গে এক ভার্চুয়াল সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ঘনবসতিপূর্ণ ও জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশের মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ দীর্ঘদিন জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরশীল থাকার সামর্থ্য রাখে না। তিনি আরও বলেন, এখন সময় এসেছে বিকল্প পরিচ্ছন্ন জ্বালানি সমাধান, বিশেষ করে বৃহৎ পরিসরে সৌরবিদ্যুৎ স্থাপনের দিকে গুরুত্ব দিতে।

গুগলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ল্যারি পেজের ভাই কার্ল পেজ বৈশ্বিকভাবে উদীয়মান পারমাণবিক প্রযুক্তি ও হাইব্রিড সিস্টেমে অগ্রগতির কথা তুলে ধরেন, যা নির্ভরযোগ্য ও শূন্য-কার্বন বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে সক্ষম। তিনি জোর দিয়ে বলেন, বার্জ-ভিত্তিক পারমাণবিক রিঅ্যাক্টরগুলো সাশ্রয়ী, কম রক্ষণাবেক্ষণ প্রয়োজন এবং বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান শিল্প খাতকে দীর্ঘমেয়াদে বিদ্যুৎ সরবরাহে সক্ষম।

পেজ উল্লেখ করেন, পারমাণবিক শক্তি আজ আর বিশ্বব্যাংক বা অন্যান্য বড় উন্নয়ন অর্থায়ন সংস্থার কাছে নিষিদ্ধ নয়। ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশ ইতোমধ্যেই এ প্রযুক্তি গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের শক্তিশালী রেকর্ড রয়েছে, যা দেশকে পরিচ্ছন্ন জ্বালানিতে রূপান্তরে নেতৃত্ব দিতে সক্ষম করবে। এর ফলে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে, জ্বালানির দাম স্থিতিশীল থাকবে এবং শিল্প খাতের প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি পাবে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ উদীয়মান প্রযুক্তির ক্ষেত্রে একটি কৌশলগত কেন্দ্র হিসেবে এবং পারমাণবিক উদ্ভাবনে শান্তিপূর্ণ নেতৃত্বের ভূমিকায় এগিয়ে যেতে পারে।

অধ্যাপক ইউনূস জানান, অন্তর্বর্তী সরকার সম্প্রতি একটি নতুন জাতীয় বিদ্যুৎ নীতি প্রণয়ন করেছে, যেখানে সৌর জ্বালানি গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। তবে তিনি সতর্ক করে উল্লেখ করেন, পারমাণবিক বিকল্প গ্রহণের আগে কঠোর গবেষণা ও সম্ভাব্যতা যাচাই অপরিহার্য।

তিনি বলেন, “আমরা অবশ্যই এসব সম্ভাবনা অনুসন্ধান করব, তবে প্রতিশ্রুতিশীল প্রযুক্তি নিয়ে গভীর গবেষণা করা অত্যাবশ্যক। কোনো সন্দেহ নেই—বাংলাদেশকে জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা দ্রুত হ্রাস করতে হবে।”

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন এবং সরকারের সিনিয়র সচিব ও এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ।

Share This

COMMENTS