মঙ্গলবার, ৪ঠা নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

নাঙ্গলকোটে ১৫ কিলোমিটার বেহাল সড়কে জনদুর্ভোগ চরমে

নাঙ্গলকোটে ১৫ কিলোমিটার বেহাল সড়কে জনদুর্ভোগ চরমে
১৬৪ Views

            আবুল কাশেম গাফুরী\ কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের উত্তরাঞ্চলের জনগুরুত্বপূর্ণ তিনটি সড়কের বেহাল দশায় তিনটি ইউনিয়নের প্রায় ৩০ হাজার জনগণকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। গত প্রায় ৪ বছর ধরে বিধ্বস্ত সড়কগুলো দিয়ে এলাকাবাসীর উপজেলাসদরসহ বিভিন্নস্থানে যাতায়াতে ভোগান্তির যেন শেষ নেই। সড়কগুলোর শত-শত ছোট-বড় খানাখন্দ দিয়ে এলাকাবাসীকে যাতায়াতে প্রতিনিয়ত নাকাল হতে হচ্ছে। সড়কগুলোর একেকটি খানাখন্দ যেন পুকুরে পরিণত হয়েছে। বর্ষার শেষ মুহূর্তে এসে বৃষ্টিতে ছোট-বড় খানাখন্দ পানিতে সয়লাব হওয়ায় পথচারীসহ ছোট-বড় যানবাহন দিয়ে এলাকাবাসীকে দূর্ভোগের মধ্যে দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। বিধ্বস্ত সড়কগুলোতে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট-বড় দূর্ঘটনা। এতে আহত হচ্ছে অনেকে।

            সরেজমিনে ঘুরে ও এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার জনগুরুত্বপূর্ণ মাহিনী-অলিপুর- জোড়পুকুরিয়া সেতু পর্যন্ত সড়ক, নাঙ্গলকোট-শ্রীফলিয়া-বাঙ্গড্ডা সড়ক এবং নাঙ্গলকোট স্টীল সেতু থেকে মাধবপুর পর্যন্ত ৩টি সড়কের প্রায় ১৫ কিলোমিটারে শত-শত খানা খন্দকের সৃষ্টি হয়েছে।

            গত প্রায় ৪বছর ধরে সড়কগুলোর শত-শত খানাখন্দ দিয়ে পথচারী এবং ছোট-বড় যানবাহনকে চরম ভোগান্তির মধ্যে দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। মাহিনী-জোড়পকুরিয়া সড়কের মাহিনী দারুল কোরআন মাদ্রাসা থেকে অলিপুর বাজার পর্যন্ত সবচাইতে বেহাল দশা বিরাজ করছে। মাহিনী, ছুপুয়া এবং অলিপুর বাজার পর্যন্ত একেকটি খানাখন্দ পুকুরে পরিণত হয়েছে। সড়কটিকে খানা-খন্দকে স্থানীয় এলাকাবাসী ব্যাক্তিগত উদ্যোগে এবং ইউনিয়ন পরিষদ থেকে একাধিকবার ইটের টুকরা ফেলে সড়কটি দিয়ে ছোট-বড় যানবাহন চলাচলের উপযোগী রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছে। কিন্তু কয়েকদিন পর আবার সড়কটি পূর্বের অবস্থায় ফিরে যায়।

            নাঙ্গলকোট-শ্রীফলিয়া বাঙ্গড্ডা সড়কের চেহরিয়া, কৈয়া, ভূলুয়াপাড়া, সাবিত্রা এবং নাঙ্গলকোট পর্যন্ত সড়কটির বিভিন্নস্থানে শত-শত খানা-খন্দকের সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে কৈয়া গ্রামের ভিতরের ৪/৫টি বড় ধরনের খানাখন্দ পুকুরে পরিণত হয়েছে। নাঙ্গলকোট স্টীল সেতু থেকে মাধবপুর পর্যন্ত সড়কটিরও বিভিন্নস্থানে শত-শত খানাখন্দ সৃষ্টি হয়ে সড়কটি চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সড়কটির মক্রবপুর এবং মাধবপুর অংশ সবচাইতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থায় রয়েছে।

            ক্ষতিগ্রস্ত তিনটি সড়ক দিয়ে ছোট-বড় যানবাহন এবং পথচারীদের যাতায়াতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। আধা ঘন্টার যাতায়াতে এক ঘন্টা সময় ব্যয় হচ্ছে। খানাখন্দ দিয়ে যাত্রীবাহি সিএনজি চালিত অটোরিকশাা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, মাইক্রোবাস, মিশুক, মালবাহী পিকআপভ্যান, ট্রাক-ট্রাকটরকে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় চলাচল করতে হচ্ছে। ফলে প্রায় সময় ঘটছে ছোট-বড় দুঘর্টনা। এছাড়া খানাখন্দে পড়ে ছোটবড় যানবাহন অহরহ নষ্ট হচ্ছে। সড়কগুলো দিয়ে রোগীবাহি অ্যাম্বুলেন্স যাতায়াতে অসুস্থ রোগীদের আরো অসুস্থ হতে হচ্ছে।

            এলাকাবাসী জানান, সড়কগুলোর পাশে বাড়িঘর এবং পুকুর থাকায় পানি সরতে না পারায় সড়কগুলোতে পানি জমে সবচাইতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সড়কগুলোর পাশে ড্রেনেজ ব্যবস্থা থাকলে সড়কগুলো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতো না।

            উপজেলার রায়কোট উত্তর ইউনিয়নের ছুপুয়া গ্রামের ইউপি সদস্য কামাল হোসেন বলেন, মাহিনী-অলিপুর-জোড়পুকুরিয়া সড়কটি গত প্রায় ৪ বছর থেকে খানাখন্দে বেহাল দশা বিরাজ করছে। এলাকাবাসীর উদ্যোগে এবং ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বরাদ্ধ নিয়ে খানাখন্দে ইট-সুরকি ফেলে সড়কটি যাতায়াতের উপযোগী রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি সড়কটি দ্রæত সংস্কারের দাবি জানান।

            নাঙ্গলকোট-শ্রীফলিয়া-বাঙ্গড্ডা সড়কের চলাচলকারী সিএনজি চালিত অটোরিকশার চালক নবী জানান, সড়কটির ছেহরিয়া থেকে কৈয়া পর্যন্ত বেহাল দশা বিরাজ করছে। বিশেষ করে কৈয়া গ্রামের ভিতরে ৪/৫টি খানাখন্দ পুকুরে পরিণত হয়েছে। সড়কটি দিয়ে চরম ভোগান্তির মধ্যে দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। এছাড়া অধিকাংশ সময় খানাখন্দে পড়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা নষ্ট হচ্ছে।

            নাঙ্গলকোট স্টিল সেতু থেকে মাধবপুর পর্যন্ত সড়ক দিয়ে নিয়মিত যাতায়াতকারী মক্রবপুর গ্রামের ওমর ফারুক জানান, সড়কটির নাঙ্গলকোট স্টিল সেতু থেকে মক্রবপুর পর্যন্ত কয়েকশ’ খানাখন্দ দিয়ে পথচারীসহ ছোট-বড় যানবাহন চলাচলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। খানাখন্দ দিয়ে যাতায়াতে অসুস্থ রোগীদের আরো অসুস্থ হতে হচ্ছে।

            এ প্রসঙ্গে নাঙ্গলকোট এলজিইডি প্রকৌশলী মো. অহিদুল ইসলাম সিকদার বলেন, মাহিনী-অলিপুর-জোড়পুকুরিয়া সড়ক চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রকল্পে এবং নাঙ্গলকোট-শ্রীফলিয়া-বাঙ্গড্ডা সড়ক জিওবি মেইনটেনোন্স প্রকল্পে প্রস্তাব দেয়া আছে। প্রকল্প পাস হলে এস্টিমেট করে এলজিইডি কুমিল্লা নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ে প্রেরণ করা হবে।

Share This