রবিবার, ৭ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

আগামী নির্বাচনে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালনে সশস্ত্র বাহিনীকে প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান

আগামী নির্বাচনে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালনে সশস্ত্র বাহিনীকে প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান
৪০ Views

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় নির্বাচন ও গণভোটে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের দায়িত্বশীল ও ঐতিহাসিক ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি জাতীয় নিরাপত্তা, অগ্রগতি, জাতি গঠন এবং সংকটমুহূর্তে জনগণের পাশে দাঁড়ানোয় সশস্ত্র বাহিনীর অবদানকে প্রশংসা করেন।

আজ রাজধানীর মিরপুর সেনানিবাসে ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজে এনডিসি ও এএফডব্লিউসি–২০২৫ কোর্সের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, “বাংলাদেশের নিরাপত্তা, অগ্রগতি ও জাতীয় উন্নয়নে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান সত্যিই অনন্য। দেশের সুরক্ষায় আপনাদের ত্যাগ ও নিষ্ঠা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও মহামারীর মতো সংকটে সশস্ত্র বাহিনীর দ্রুত সাড়া ও নিবেদিত ভূমিকা জনকল্যাণে তাদের প্রস্তুতি ও পেশাদারিত্বের প্রমাণ।

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে বৈশ্বিক শান্তিতে অবদান রাখার জন্য তিনি বাহিনীর সদস্যদের ধন্যবাদ জানান।

আগামী নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত হতে যাচ্ছে। শান্তিপূর্ণ, উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটগ্রহণ নিশ্চিতের দায়িত্ব আপনাদের কাঁধেই বেশি। ভোটাররা যেন গর্বের সঙ্গে এই মুহূর্তে অংশ নিতে পারে—সেই পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।”

মুক্তিযুদ্ধ ও জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা

বক্তব্যের শুরুতে তিনি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, “ডিসেম্বর বিজয়ের মাস—আমরা গর্বের সঙ্গে স্মরণ করি সেই সব বীরকে যারা এই দেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন।”
একই সঙ্গে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহীদ ও আহতদের প্রতিও তিনি গভীর শ্রদ্ধা জানান।

খালেদা জিয়ার আরোগ্য কামনা

তিনি দেশবাসীর প্রতি বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতার জন্য দোয়া করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “এই আনন্দময় অনুষ্ঠানে আসুন আমরা সবাই তাঁর দ্রুত আরোগ্য কামনায় প্রার্থনা করি।”

নবস্নাতক অফিসারদের উদ্দেশে

স্নাতক সম্পন্নকারী কর্মকর্তাদের অভিনন্দন জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “এনডিসি ও এএফডব্লিউসি সম্পন্ন করা একটি বড় অর্জন, যা দীর্ঘদিনের পরিশ্রম ও অধ্যবসায়ের ফসল। এখন আপনারা জাতীয় নিরাপত্তা, কৌশলগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং রাষ্ট্র পরিচালনায় উচ্চতর দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুত।”

তিনি বলেন, ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ ভবিষ্যতের সেই নেতৃত্ব তৈরি করে, যারা জটিল ভূ-রাজনৈতিক পরিবেশে কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম। বর্তমান সময়ে এশিয়ার প্রতি বৈশ্বিক অর্থনৈতিক কেন্দ্রায়ণ বাংলাদেশের জন্য বিশেষ সুযোগ তৈরি করেছে—এ সুযোগ কাজে লাগানো ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব।

আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ, জলবায়ু পরিবর্তন ও সাইবার হুমকির মতো বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ বিবেচনায় এসব কোর্স কর্মকর্তাদের কৌশলগত, অপারেশনাল ও ট্যাকটিক্যাল সক্ষমতা বৃদ্ধি করে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

Share This