রবিবার, ২২শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

<span class="entry-title-primary">আলু, আদা, রসুন পেঁয়াজের দাম এখনো চড়া</span> <span class="entry-subtitle"> শীতের সবজির দামে আগুন</span>

আলু, আদা, রসুন পেঁয়াজের দাম এখনো চড়া শীতের সবজির দামে আগুন

Views

            ষ্টাফ রিপোর্টার\ এখন শীতকাল। পৌষের মাঝামাঝি সময় সবজির ভরা মৌসুম। এখনো সবজি নি¤œবিত্ত মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে। বাজারে ভরপুর নানা জাতের তরতাজা সবজি। কিন্তু দাম চড়া। সপ্তাহের ব্যবধানে শীতকালীন সবজি ও ব্রয়লার মুরগির দাম আরো বেড়েছে। এছাড়া দরিদ্র মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে আলুর দাম। পণ্যটির দাম এখন প্রতি কেজি চালের দামের চেয়েও বেশি। অন্যদিকে পেঁয়াজ, রসুন, আদা ও চিনি আগের উচ্চমূল্যেই বিক্রি হচ্ছে। গত সোমবার বিভিন্ন বাজার ঘুরে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

            ব্যবসায়ীদের দাবি কাঁচাবাজারে পণ্যদ্রব্যের দাম ঊর্ধ্বগতি থাকলেও বর্তমানে এসব পণ্যের দাম কমতে শুরু করেছে। শীতের সবজি বাজারে পুরোপুরি আমদানি হওয়ায় ইতোমধ্যে সব ধরনের সবজির দাম অনেকটা কমে এসেছে। এদিকে বিগত দিনের তুলনায় সব ধরনের মাছ এখন কম দামে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া স্বস্তি ফিরেছে গোশতের ও মসলার বাজারেও।

            পাইকারি বাজারের ব্যবসায়ীদের দাবি, গত এক সপ্তাহে বাজারে সবকিছুর দামই কমতির দিকে। শীতের সবজি বাজারে পুরোপুরি আসায় সকল ধরনের সবজিই আগের চেয়ে কম দামে বিক্রি হচ্ছে। সব ধরনের মাছের দামও কমতির দিকে। নতুন করে দাম বাড়েনি মাংসের দামও।

            বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায় চলতি সপ্তাহে ২০০ টাকা কেজি দরে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে। যা গত সপ্তাহে ১৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। সোনালি, সোনালি হাইব্রিড ও লেয়ার মুরগির দামও বেড়েছে। সোনালি ৩২০ টাকা, সোনালি হাইব্রিড ৩০০ টাকা, দেশি মুরগি ৫০০ থেকে ৫২০ টাকা কেজি, লেয়ার ২৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পাইকারি বাজারে মুরগির দাম বাড়ায়, খুচরা বাজারেও মুরগি বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।

পুরনো আলুর সঙ্গে শীত মৌসুমে যুক্ত হয়েছে নতুন আলু। তবে এবারের শীতে পণ্যের দামে একেবারে ভিন্ন চিত্র। বাজারভেদে আলু বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা কেজি দরে। ফলে দাম বিবেচনায় উচ্চমূল্যের চালকেও ছাড়িয়ে গেছে আলু। আলুর দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে ব্যবসায়ীদের দাবি সরবরাহ কম থাকা। আলুর মতো পেঁয়াজের বাজার এখনো চড়া রয়ে গেছে। অথচ ভারত থেকে পেঁয়াজ আসার পাশাপাশি দেশি পেঁয়াজে হাট-বাজার ভরে গেছে। ক্রেতাকে প্রতি কেজি নতুন দেশি পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে। পুরনো দেশি পেঁয়াজের দাম পড়ছে প্রতি কেজি ১৫০-১৬০ টাকা।

            ওদিকে ভরা মৌসুমেও নতুন করে আরো বেড়েছে প্রায় সকল ধরনের সবজির দাম। বাজারগুলোতে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায় প্রতি কেজি মুলা বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা, শিম ৮০ থেকে ৯০ টাকা, ফুলকপি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, বাঁধা কপি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, পাকা টমেটো প্রকারভেদে ৮০ থেকে ১০০ টাকা, কাঁচা টমেটো ৫০ টাকা, কচুরমুখী ৭০ টাকা এবং গাজর ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া এসব বাজারে বেগুন ৫০ থেকে ৮০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ১০০ টাকা, পটল ৮০ টাকা, বরবটি ১০০ টাকায়, ধুন্দুল ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৮০ টাকা, শশা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, প্রতিটি লাউ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৪০ টাকা, লেবুর হালি ২০ থেকে ৪০ টাকা, ধনে পাতা কেজি ১০০ থেকে ১৫০ টাকা, কলা হালি বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায়, জালি কুমড়া ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে। বাজারগুলোতে লাল শাক ১০ টাকা আঁটি, লাউ শাক ৪০ টাকা, মূলা শাক ১০ টাকা, পালং শাক ২০ টাকা, কলমি শাক ১০টাকা আঁটি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে। বাজারে আসা শরিফুল ইসলাম নামে একজন ক্রেতা জানান, তিনি এখন প্রতিটি পণ্য চাহিদার তুলনায় অর্ধেক করে কেনেন।

            মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দাম আগের মতোই চড়া। মাছের বাজার যেন আগের উচ্চমূল্যেই স্থির হয়ে গেছে। গত শনিবার বিভিন্ন বাজারে এক কেজি শিং মাছ চাষের (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকায়, প্রতি কেজি রুই মাছের দাম বেড়ে (আকারভেদে) ৪০০ থেকে ৫৫০ টাকায়, মাগুর মাছ ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা, মৃগেল ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকায়, পাঙ্গাস (চাষের) ২০০ থেকে ২২০ টাকায়, চিংড়ি প্রতি কেজি ৬০০ থেকে ৮০০ টাকায়, বোয়ালমাছ প্রতি কেজি ৪০০ থেকে ৯০০ টাকায়, কাতল ৪০০ থেকে ৬০০ টাকায়, পোয়া মাছ ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায়, পাবদা মাছ ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায়, তেলাপিয়া ২২০ টাকায়, কৈ মাছ ২২০ থেকে ২৩০ টাকায়, মলা ৫০০ টাকা, টেংরা মাছ ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, কাচকি মাছ ৬০০ টাকায় এবং সোল মাছ ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়াও গরুর গোশত ৬৫০ টাকা, খাসির গোশতের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১১০০ টাকা দরে।

            বিক্রেতা মো. রফিক ইসলাম বলেন, ছুটির দিনে বাজারে ক্রেতা বেশি থাকে। এ সময় দাম একটু বাড়তি থাকে। সে তুলনায় সকল ধরনের সবজি আগের চেয়ে কম দামেই বিক্রি হচ্ছে। পাইকারি বাজারে সবজির দাম কমায় আমরাও কিছুটা কম দামে বিক্রি করতে পারছি। বর্তমানে বাজার স্বাভাবিক আছে। সামনে সব ধরনের সবজির দাম আরও কমে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন এই ব্যবসায়ী। বাজার করতে আসা ক্রেতা আনিসুর রহমান বলেন, শীতের ভরা মৌসুমে এখন সবজি খাওয়ার সময়। তাই ব্যাগ ভরে সবজি নেব কিন্তু পারছি না। শীতের সময়ে সতেজ সবজি পাওয়া যায়। স্বাদও আলাদা।

Share This