দেবীদ্বারে ১৮৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকসহ ১০৯টি পদ খালি
নিজস্ব প্রতিনিধি\ কুমিল্লার দেবীদ্বারে ১৮৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকসহ সহকারী শিক্ষকের ১০৯টি পদ শূন্য রয়েছে। এতে ব্যহত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান ও প্রশাসনিক কার্যক্রম। দ্রæততর সময়ে এসব সমস্যার নিরসন প্রয়োজন বলে মনে করছেন শিক্ষক-অভিভাবকসহ শিক্ষার্থীরা। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ১৮৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে ১৮৫ জন প্রধান শিক্ষক ও ১ হাজার ২১১ জন সহকারী শিক্ষকসহ মোট ১ হাজার ৩৬৬ জন শিক্ষকের পদ রয়েছে। এরমধ্যে ৫৩টি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ ও সহকারী শিক্ষক পদে ৫৬টি পদ শূন্য রয়েছে। গত এক থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত মৃত্যু, অসুস্থতা, অব্যাহতি ও বদলির কারণে এসব পদ শূন্য হয়েছে।
জানা গেছে, প্রধান শিক্ষক না থাকায় এসব বিদ্যালয়ে ভারপাপ্ত হিসেবে জ্যেষ্ঠ শিক্ষকদের এসব দায়িত্ব পালন করতে হয়েছে। ফলে স্কুল পরিচালনা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম পালন শেষে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করানো এখন কঠিন হয়ে পড়েছে। এতেকরে পাঠদান কার্যক্রমে চরম অবনতি দেখে দিয়েছে।
দেবীদ্বার পৌরসভার ১৪০ নং বিজুলীপান্জার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাবিনা ইয়াসমিন জানান, গত বছরের ৭ই মার্চ এ স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. আনোয়ার হোসেনের মৃত্যুর পর থেকে তিনি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করছেন। সহকারী শিক্ষক পদ থেকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হওয়ায় এখন তার স্কুল কার্যক্রমে অনেক চাপ বেড়ে গেছে।
রাজামেহার ইউনিয়নের ৮৬ নং রাজামেহার পূর্ব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শাহিন সুলতানা জানান, গত বছরের ১২ই সেপ্টেম্বর ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নূরুন নাহার অসুস্থ হলে তিনি তার দায়িত্ব পালন করছেন। এখন তার নিয়মিত ক্লাসে শিক্ষার্থীদের পাঠদানে ব্যাঘাত তৈরি হচ্ছে। তা ছাড়া বিদ্যালয়ের অতিরিক্ত কাজ পালন করতে গিয়ে অন্য শিক্ষকদেরও সমস্যায় ভুগতে হচ্ছে।
উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের ১১২ নং উত্তর মোহনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আলী ২০১৯ সালে অসুস্থ হয়ে অবসরে যান। তখন থেকে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন রোমানা আক্তার। গত পাঁচ বছর ধরে তিনি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। এতে বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম যেমন ব্যহত হচ্ছে তেমনি অনেক কাজের চাপও তাকে সামলাতে হচ্ছে।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মুহাম্মদ মিনহাজ উদ্দিন জানান, যেসব বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই এর তালিকা প্রাথমিক গণশিক্ষা অধিদপ্তরের পাঠানো হয়েছে। আর শিক্ষক পদোন্নতির নিয়োগের মাধ্যমে এ সমস্যা সমাধান হবে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সফিউল আলম বলেন, পদোন্নতির মাধ্যমে ৬৫ শতাংশ প্রধান শিক্ষক নিয়োগ হয়ে থাকে। জেলার কয়েকটি উপজেলার নথি মন্ত্রণালয়ে জমা আছে। মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন পেলে এ সমস্যা কেটে যাবে।