শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় কুমিল্লায় ১৪৪৮ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত

স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় কুমিল্লায় ১৪৪৮ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত

ষ্টাফ রিপোর্টার\ কুমিল্লায় স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বন্যার পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১ হাজার ৪৪৮টিতে দাঁড়িয়েছে। এরমধ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয় ৬৩৯টি এবং মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, মাদরাসা ও কারিগরী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে ৮০৯টি। কুমিল্লার ১৭ উপজেলার মধ্যে ১৪ উপজেলা বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে বুড়িচং, ব্রাহ্মণপাড়া, চৌদ্দগ্রাম, নাঙ্গলকোট, লাকসাম, মনোহরগঞ্জ উপজেলায় প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, মাদরাসা ও কারিগরি ৩২৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঠদান বন্ধ রয়েছে। জেলা শিক্ষা অফিস জানিয়েছে সংস্কার বা মেরামতের আগে বন্যায় বড় ধরণের ক্ষতির মুখে পড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান কার্যক্রম চালানো সম্ভব নয়।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবারের বন্যায় জেলার ৬টি উপজেলার সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। উপজেলাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রাথমিক বিদ্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে লাকসাম, চৌদ্দগ্রাম, বুড়িচং, ব্রাহ্মণপাড়া, মনোহরগঞ্জ, নাঙ্গলকোটে। এসব উপজেলার মধ্যে আদর্শ সদর উপজেলায় ১৮টি, লাকসামে ৬৭টি, চৌদ্দগ্রামে ১০৫টি আংশিক এবং ৬৮টি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত, ব্রাহ্মণপাড়ায় ৮০টি আংশিক এবং ১২টি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত, বুড়িচংয়ে ৬৫টি আংশিক এবং ২টি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত, নাঙ্গলকোটে ৮০টি, মনোহরগঞ্জে ৮৯টি আংশিক এবং ১১টি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত, লালমাই উপজেলায় ১৪টি আংশিক ও ১১টি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া বরুড়া, তিতাস ও মুরাদনগরে ১৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয় মোটামুটি ক্ষতি হয়েছে।
বন্যাকবলিত ১৪ উপজেলায় ১০৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বড়ধরণের ক্ষতি হয়েছে। এগুলোতে সম্পূর্ণরূপে মেরামত ছাড়া চালু করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন কুমিল্লা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. সফিউল আলম। তিনি আরও জানান, বন্যায় যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আংশিক ক্ষতি হয়েছে, এগুলো দ্রæত সময়ের মধ্যে মেরামত করে পাঠদান চালু করা হবে। ইতোমধ্যেই ক্ষতিগ্রস্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে জেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, বন্যায় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের ৭২৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরমধ্যে বড় ধরণের ক্ষতির মুখে পড়েছে ২০৫টি প্রতিষ্ঠান। অপরদিকে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মাদরাসা ও কারিগরি ৪১৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১২৩টির বড়ধরণের ক্ষতি হয়েছে।
মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক এবং মাদরাসা ও কারিগরী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর এ বন্যায় প্রাথমিক ক্ষতির পরিমাণ ৬ কোটি ১২ লাখ ৮৩ হাজার টাকা বলে জানিয়েছেন কুমিল্লা জেলা শিক্ষা অফিসার মো. রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, বন্যার পানি পুরোপুরি নেমে যাওয়ার পর ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যালয়গুলোতে পাঠদান কার্যক্রম চালুর চেষ্টা চলছে, একই সঙ্গে আংশিক ক্ষতিগ্রস্তসহ জেলার মোট ৪৯০টি উচ্চ বিদ্যালয়ে পাঠদান চালু করা যাবে।

Share This

COMMENTS