রবিবার, ১৩ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

<span class="entry-title-primary">১৮৪টি পদের মধ্যে ৭৩টি পদই শূণ্য</span> <span class="entry-subtitle">মনোহরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্য সেবা ব্যাহত</span>

১৮৪টি পদের মধ্যে ৭৩টি পদই শূণ্য মনোহরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্য সেবা ব্যাহত

৫৭ Views

            আহমেদ উল্ল্যাহ\ জনবল সংকটে কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ব্যাহত হচ্ছে স্বাস্থ্যসেবা। এখানে সেবা নিতে এসে বিপাকে পড়ছেন এ জনপদের বাসিন্দারা । কাঙ্খিত সেবা না পেয়ে সেবাপ্রার্থীদের অনেকেই ছুটছেন অন্যত্র। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মঞ্জুরীকৃত ১৮৪টি পদের মধ্যে এখানে ৭৩টি পদই শূণ্য। এদের মধ্যে  একজন আবাসিক মেডিকেল অফিসার, একজন জুনিয়র কনসালটেন্ট, তিনজন মেডিকেল অফিসার, চারজন সহকারি সার্জন, পাঁচজন সিনিয়র স্টাফ নার্স, ছয়জন মিডওয়াইফ, একজন ষ্টোর কিপার, আটজন সেকমো, তিনজন স্বাস্থ্য পরিদর্শক, পাঁচজন সহকারি স্বাস্থ্য পরিদর্শক, চারজন স্বাস্থ্য সহকারি, বারোজন সিএইচপিসি, তিনজন অফিস সহায়ক, দুইজন আয়া, দুইজন কুক, তিনজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী রয়েছে। একটি হসপিটাল পরিচালনায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদ আবাসিক মেডিকেল অফিসার দীর্ঘদিন ধরে এ পদটি এখানে শূণ্য রয়েছে। ৮ মাসেরও বেশি সময় ধরে খালি রয়েছে জুনিয়র কনসালটেন্ট সার্জারি পদটি। এ পদটি খালি থাকায় মেজর কোন অপারেশন হচ্ছে না এখানে। মেডিকেল অফিসারের তীব্র সংকটের কারনে বহিঃবিভাগের মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা প্রতিনিয়ত বিঘœ ঘটছে। মিড ওয়াইফ ও সিনিয়র নার্সের অভাবে আন্তঃবিভাগ ও লেবাররুমে ব্যহত হচ্ছে রোগীদের সেবা। অত্যাধুনিক আল্ট্রাসাউন্ড মেশিন থাকলেও এখানে কোন সনোলজিস্ট নেই। এখানে অত্যাধুনিক ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন থাকলেও কোন রেডিওগ্রাফার নেই। একজনমাত্র টেনোলজিস্ট সেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করেন। ডেন্টাল টেকনোলজিস্ট না থাকায় দন্তসেবা প্রদানে বিড়ম্বনায় পড়ছেন ওই বিভাগের একমাত্র ডেন্টাল সার্জন। এম্ব্যুলেন্স ড্রাইভার না থাকায় স্বাস্থ্য কমর্কর্তার ব্যক্তিগত চালক দিয়েই চালানো হচ্ছে কমপ্লেক্সে পড়ে থাকা এম্ব্যুলেন্সটিও। এখানে স্টোরকিপার নেই, একজন মাত্র ফার্মাসিস্ট স্টোর কিপারের দায়িত্ব পালন করেন। তাছাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে ৩য় ও ৪র্থ শ্রেনীর কর্মচারী সংকট প্রকট আকার ধারন করেছে। ৫ জন পরিচ্ছন্নতা কর্মীর মধ্যে রয়েছে দুইজন, বাকী ৩ জনের পদ শূণ্য। কুক ও সহকারী দুজনের কেউই নেই। নিরাপত্তা প্রহরী না থাকায় রাতের বেলায় নিরাপত্তাহীনতায় পড়ে থাকে পুরো স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি উদ্বোধনের শুরু থেকে পর্যাপ্ত সরঞ্জামাদী ও টেকনিশিয়ানের অভাবে স্বাস্থ্যসেবা পেতে এ জনপদের বাসিন্দাদের দুর্ভোগ বেড়েই চলেছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবা নিতে আসা কয়েকজনের সাথে কথা হলে জনবলের চরম সংকটের কথা উল্লেখ করে তারা বলেন, এখানে সেবা পেতে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষার প্রহর গুনতে হয়। টেকনিশিয়ানের অভাবে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরিক্ষাও করতে হয় বাইরের ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে কাংখিত সেবা না পেয়ে সেবাপ্রার্থীরা পাশ্ববর্তী লাকসাম উপজেলা ও জেলা শহরে যাওয়ার কথা জানান। চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পর্যাপ্ত জনবল নিয়োগের দাবী জানান এলাকাবাসী। এ বিষয়ে কথা হলে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আফজালুর রহমান বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই মনোহরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনবল সংকট রয়েছে। সীমিত জনবল নিয়েই মানসম্মত সেবা প্রদানে আমরা সর্বাতœক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এখানে কর্মরত মেডিকেল অফিসাররা বহিঃর্বিভাগে রোগী দেখা শেষ করে আন্তঃবিভাগেও কাজ করছেন। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে জনবল চেয়ে একাধিকবার চিঠিও দেয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে এখানে আবাসিক মেডিকেল অফিসার, জুনিয়র কনসাললটেন্ট (সার্জারি) ও মেডিকেল অফিসারসহ জরুরী ভিত্তিতে জনবল নিয়োগের আবশ্যকতার কথা জানান তিনি।

Share This