বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগে নারী কোটা বাতিল হচ্ছে

ষ্টাফ রিপোর্টার\ বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগ ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) মাধ্যমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগে বর্তমানে ৩০ শতাংশ কোটা রয়েছে। এ কোটা বাতিল করতে যাচ্ছে সরকার। এরই মধ্যে এ বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। শিগগির কোটা বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে ৩০ শতাংশ নারী কোটা বাতিলের বিষয়ে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মতামত চেয়েছিল। সেই আবেদনের আলোকে বিষয়টি নিয়ে একাধিক সভা হয়েছে। সভায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী শিক্ষক নিয়োগের কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়ে মতামত দেয়া হয়। এ মতামতের ফলে বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগে নারী কোটা বাতিলের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে মন্ত্রণালয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা জানান, কোটার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় যে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে, সেখানে নারী কোটার কথা উল্লেখ করা হয়নি। শুধুমাত্র ৭ শতাংশ কোটা বহাল রাখার কথা বলা হয়েছে। ওই প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী এনটিআরসিএকে নিয়োগ সুপারিশ করতে বলা হয়েছে। ফলে এনটিআরসিএর মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগে নারী কোটা থাকছে না। যে কোনো সময় এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের উপসচিব (বেসরকারি মাধ্যমিক) সাইয়েদ এ জেড মোরশেদ আলী বলেন, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগে নারী কোটা থাকবে কি না- সে বিষয়ে খুব দ্রæত সময়ের মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি হবে। সেখানে সরকারের বিদ্যমান কোটার নীতিমালা (৭ শতাংশ) অনুযায়ী সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৯৯ সালে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগে ৩০ শতাংশ নারী কোটা চালু করা হয়। কিন্তু পুরোপুরি বাস্তবায়ন না হওয়ায় বিশ্বব্যাংকের সুপারিশে ২০০৪ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার নতুন আদেশ জারি করে তা বাধ্যতামূলক করে। এ সিদ্ধান্তের ফলে দেশের অনগ্রসর এলাকায় নারী প্রার্থীর চরম সংকট দেখা দেয়। ২০১০ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গোপালগঞ্জসহ কয়েকটি জেলা ও উপজেলায় নারী কোটা শিথিল করে।
কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালীন গত বছরের ২৪শে জুলাই সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের নির্দেশনার আলোকে সরকারি চাকরির সব গ্রেডেই (৯ম-২০) ৭ শতাংশে কোটা রাখা হয়। বাকি ৯৩ শতাংশ মেধার ভিত্তিতে সরাসরি পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
৭ শতাংশ কোটার মধ্যে রয়েছে- বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তানদের জন্য ৫ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য এক শতাংশ এবং শারীরিক প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য এক শতাংশ।