কর্মচারীদের আন্দোলন উপেক্ষা করে সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ জারি


সরকারি চাকরির নতুন অধ্যাদেশ জারির মধ্যেই সচিবালয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন কর্মচারীরা। আজ সোমবার সন্ধ্যায় সরকার ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করেছে। এর আগে গত বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে এর খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়।
অধ্যাদেশ জারির প্রতিবাদে আজ রোববার সচিবালয়ের ভেতরে দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ মিছিল করেন বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মচারীরা। তাঁরা এই অধ্যাদেশকে ‘নিবর্তনমূলক’ এবং ‘কালো আইন’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে দ্রুত তা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন। দাবি মানা না হলে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তাঁরা।
আন্দোলনটি বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের ব্যানারে চলছে। কর্মচারীদের অভিযোগ, ৪৫ বছর আগের কিছু ‘নিবর্তনমূলক’ ধারা নতুন করে যোগ করে এ অধ্যাদেশ প্রণয়ন করা হয়েছে।
অধ্যাদেশে চারটি কর্মকাণ্ডকে সরকারি কর্মচারীদের জন্য ‘অসদাচরণ’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে:
-
এমন কাজ করা, যা অনানুগত্য বা শৃঙ্খলা ভঙ্গের সামিল;
-
যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকা;
-
অন্য কর্মচারীদের দায়িত্ব পালনে বাধা দেওয়া বা প্ররোচনা দেওয়া;
-
কারো কর্তব্য পালনে বাধা সৃষ্টি করা।
এসব অপরাধের শাস্তি হিসেবে কর্মচারীদের পদাবনতি, চাকরি থেকে অপসারণ বা বরখাস্ত করা যেতে পারে।
সবচেয়ে বিতর্কিত দিকটি হলো—এবার থেকে বিভাগীয় মামলা ছাড়াই শাস্তি দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে। অভিযোগ ওঠার সাত দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে, এবং এরপর আরও সাত কর্মদিবসের মধ্যে শাস্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে। দণ্ডিত কর্মচারী ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে আপিল করতে পারবেন, তবে রাষ্ট্রপতির আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে না—শুধুমাত্র পুনর্বিবেচনার আবেদন করা যাবে।
আন্দোলনরত কর্মচারীরা বলছেন, এই অধ্যাদেশ সংবিধানবিরোধী এবং তা নাগরিক অধিকার খর্ব করে। তাই অবিলম্বে এর প্রত্যাহার চান তাঁরা।