শনিবার, ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

কুমিল্লা বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির সাবেক  উপ-ব্যবস্থাপক ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা দায়ের

কুমিল্লা বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির সাবেক উপ-ব্যবস্থাপক ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা দায়ের

            ষ্টাফ রিপোর্টার\ কুমিল্লা বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের সাবেক উপ-ব্যবস্থাপক আব্দুল হাই ভুঁইয়া ও তার স্ত্রী মিসেস আঞ্জুমান আরা বেগমের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলায় ১ কোটি ৭৭ লাখ ৯৭ হাজার ৭৯৩ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ উল্লেখ করা হয়েছে। গত সোমবার (৩রা জুন) কুমিল্লা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি দায়ের করেন দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আতিকুর রহমান।

            মামলার এজাহারে বলা হয়, দুদক থেকে বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের অবসরপ্রাপ্ত উপ ব্যবস্থাপক আব্দুল হাই ভূইয়ার স্ত্রী আঞ্জুমান আরা বেগমের কাছে সম্পদ বিবরণী জানতে চাওয়া হয়। দুদকের ওই ফরম গত ২৮শে ফেব্রæয়ারি গ্রহণ করেন তিনি। পরবর্তীতে সম্পদ বিবরণী পূরণ করে তা ৬ই মার্চ নিজ স্বাক্ষরে জমা দেন। তার জমা দেয়া সম্পদ বিবরণীতে তিনি উল্লেখ করেন, তার নিজ নামে মোট ১ কোটি ৭২ লাখ ৭৫ হাজার ৮৮ টাকার স্থাবর সম্পদ এবং মোট ৮৩ লাখ ৬১ হাজার ৫২ টাকার অস্থাবর সম্পদ  রয়েছে। অর্থাৎ তিনি সর্বমোট ২ কোটি ৫৬ লাখ ৩৬ হাজার ১৪০ টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন।

            আঞ্জুমান আরা বেগমের আয়কর নথি অনুযায়ী তার পারিবারিক ও অন্যান্য ব্যয় ৩৫ লাখ ৫ হাজার ৭৯৩ টাকা। পারিবারিক ও অন্যান্য ব্যয়সহ তার মোট অর্জিত সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ২ কোটি ৯১ লাখ ৪১ হাজার ৯৩৩ টাকা। তার দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণী ফরমের স্থাবর অংশে ৬ শতাংশ জমি এবং উক্ত জমিতে চারতলা নির্মাণাধীন একটি বাড়ির কথা উল্লেখ করেন। ওই জমি তার মায়ের নিকট থেকে হেবা সূত্রে অর্জন করেন।

            তবে সম্পদ বিবরণী ফরমে উক্ত বাড়ির কোন নির্মাণ ব্যয় উল্লেখ করেননি। অনুসন্ধানকালে দুদকের প্রকৌশলী টিম বাড়িটি পরিমাপ করে চারতলা (ডাবল ইউনিটের) এই ভবনের নির্মাণ ব্যয় নির্ধারণ করেন ১ কোটি ৭২ লাখ ৭৫ হাজার ৮৮ টাকা। এছাড়া তার দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীর অস্থাবর অংশে মোট ৮০ লাখ ৬১ হাজার ৫২ টাকার কথা উল্লেখ করলেও যাচাই/অনুসন্ধানকালে মোট ৮৩ লাখ ৬১ হাজার ৫২  টাকার সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়। অর্থাৎ তিনি সম্পদ বিবরণীতে ১ কোটি ৭২ লাখ ৭৫ হাজার ৮৮ টাকার স্থাবর সম্পদ ও ৩ লাখ টাকার অস্থাবর সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন মর্মে প্রতীয়মান হয়। তার গোপনকৃত মোট সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ১ কোটি ৭৫ লাখ ৭৫ হাজার ৮৮ টাকা।

            আয়কর নথিতে ২০২২-২০২৩ করবর্ষ পর্যন্ত তিনি মোট আয় ১ কোটি ২৫ লাখ ২২ হাজার ৫১ টাকা দেখালেও যাচাই/অনুসন্ধানকালে এই টাকার মধ্যে মোট ১১ লাখ ৭৭ হাজার ৯১১ টাকার অসামঞ্জস্যপূর্ণ ও অসঙ্গতিপূর্ণ আয় পায় দুদক। যার বিপরীতে কোন রেকর্ডপত্র/তথ্য প্রমাণ/সাক্ষী ইত্যাদি তিনি দেখাতে পারেননি বিধায় উক্ত আয় গ্রহণ করা হয়নি। কাজেই, তার গ্রহণযোগ্য আয়ের পরিমাণ দাঁড়ায় মোট ১ কোটি ১৩ লাখ ৪৪ হাজার ১৪০ টাকা। তার মোট অর্জিত সম্পদ তার জ্ঞাত- আয়ের উৎসের চেয়ে বেশি হওয়ায় তার জ্ঞাত-আয় বর্হিভূত সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ১ কোটি ৭৭ লাখ ৯৭ হাজার ৭৯৩ টাকা ।

            মামলায় আরো উল্লেখ করা হয়, আঞ্জুমান আরা বেগম দুদকে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে অসৎ উদ্দেশ্যে সম্পদের মিথ্যা হিসাব প্রদান, তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনপূর্বক ভোগদখলে তিনি এবং তার স্বামী শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

            সোমবার বিকেলে মামলার বিষয়টি বিষয়টি নিশ্চিত করে দুদকের কুমিল্লা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. ফজলুল হক বলেন, সোমবার (৩ জুন) কুমিল্লার সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। মামলার তদন্ত শেষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Share This