শুক্রবার, ১লা আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

জাতীয় সংসদে উত্থাপিত এই বাজেট দেশের কল্যাণ বয়ে আনবে না: জামায়াতে ইসলামী

জাতীয় সংসদে উত্থাপিত এই বাজেট দেশের  কল্যাণ বয়ে আনবে না: জামায়াতে ইসলামী
১২৭ Views

            ষ্টাফ রিপোর্টার\ সম্প্রতি জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য পেশ করা বাজেট নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দলটি বলেছে, ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলকারী বর্তমান সরকার ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার যে বাজেট পেশ করেছে, তা দেশের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে না।

            জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার গত বৃহস্পতিবার (৬ই জুন) এক বিবৃতিতে বলেন, জনগণের ভোটাধিকার হরণ করে ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে বর্তমান সরকার পুনরায় ক্ষমতা দখল করেছে। তদুপরি, ঋণনির্ভর বিশাল আকারের কল্পনাবিলাসী যে অবাস্তব বাজেট পেশ করেছে, তাতে দেশের জনগণের জন্য কল্যাণকর ও অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে ওঠার মতো কোনো দিক নির্দেশনা নেই। জামায়াত প্রস্তাবিত এই বাজেটকে প্রত্যাখ্যান করেছে।

            অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার আরও বলেন, অর্থমন্ত্রী ‘সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মাট বাংলাদেশ বিনির্মাণের অঙ্গীকার’ শীর্ষক শিরোনামে বাজেট জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করেছেন। বাস্তবে বাংলাদেশকে সুখী ও সমৃদ্ধ করার পরিবর্তে দুর্নীতি ও দুঃশাসনের মাধ্যমে এবং বিদেশে অর্থপাচারের ব্যবস্থা করে ও দুর্নীতিবাজদের সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে বাংলাদেশকে সমৃদ্ধ করার পরিবর্তে বর্তমান সরকার দেশকে অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু করে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে।

            ‘জামায়াতে ইসলামী’র সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়া বিবৃতিতে বলেন, জনগণের ভোটাধিকার হরণ করে ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে বর্তমান সরকার পুনরায় ক্ষমতা দখল করেছে। প্রস্তাবিত বাজেট ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ১১ দশমিক ৫৬ শতাংশ বেশি। এবার ব্যয় বেড়েছে ৮২ হাজার ৫ শত ৮২ কোটি টাকা। বড় অঙ্কের ব্যয় মেটাতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে ৪ লাখ ৯৫ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে দেয়া হয়েছে। এটি অর্জন করতে চলতি সংশোধিত বাজেট থেকে ৬৬ হাজার কোটি টাকা বেশি আহরণ করতে হবে। যা বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদগণ। বাজেটে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা। বাকি ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। চলতি অর্থ বছরে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ল্যমাত্রা ৭ শতাংশের বেশি নির্ধারণ করা হয়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রা ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ হতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

            জামায়াত নেতা বলেন, বাজেটে ব্যক্তি শ্রেণির আয়সীমা গত বছরের মতোই রাখা হয়েছে, যা গ্রহণযোগ্য নয়। বেশি আয়ের লোকদের আয়করের সীমা ২৫ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি করে ৩০ শতাংশ করা হয়েছে। রাজস্ব আয় বাড়ানোর জন্য ভ্যাট ও আমদানি শুল্কখাতে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়েছে। স্থানীয় শিল্পের কর অবকাশ ও ভ্যাট অব্যাহতির সুবিধা সংকুচিত করা হয়েছে। এতে দেশীয় পণ্যের উৎপাদন খরচ বাড়বে। পাশাপাশি এসি ও এলইডি তৈরির উপকরণ আমদানিতে শুল্ক বাড়ানো হয়েছে। ফলে এসি ও টিভির মূল্যসহ বৈদ্যুতিক জিনিসপত্রের মূল্য বৃদ্ধি পাবে। মোবাইল ফোনে কথা বলা ও ইন্টারনেট ব্যবহারের ওপর সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধি করা হয়েছে। এতে ভোক্তার খরচ বৃদ্ধি পাবে। বাজেটে ১৫ শতাংশ কর দিয়ে অপ্রদর্শিত অর্থ অর্থাৎ কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখা হয়েছে। যা কোনোভাবেই সমর্থন যোগ্য নয়।

তিনি বলেন, অর্থমন্ত্রী বাজেটে যেসব পরিসংখ্যান ও নীতি বাক্য উচ্চারণ করেছেন তার সাথে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। দেশে বিরাজমান অর্থনৈতিক দুরবস্থা সমাধানের বাস্তব কোনো পরিকল্পনা ও পদপে নেই। বর্তমান সরকার গত ২০২৩ ও ২০২৪ সালের জন্য যে বাজেট পেশ করেছিল তার অর্ধেকও বাস্তবায়ন করতে পারেনি। মেগা প্রকল্প গ্রহণ করে তা বাস্তবায়নের পরিবর্তে লুটপাট করেছে। অর্থমন্ত্রী ব্যাংক লুটপাট, বিদেশে অর্থপাচার, শেয়ারবাজারসহ অর্থনৈতিক খাতে দুর্নীতি রোধকল্পে বাজেটে কোনো দিক নির্দেশনা দিতে পারেননি। পড়ঁৎঃবংু: ফযধশধঢ়ড়ংঃ

Share This

COMMENTS