তীব্র শীতেও বোরো চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা
ষ্টাফ রিপোর্টার\ কর্মক্ষেত্রে চাকরিজীবীদের ছুটি থাকলেও কৃষকদের কোনো ছুটি নেই। একটার পর একটা কৃষিকাজ লেগেই থাকে। আর সেই কাজ নিয়েই ব্যস্ত থাকতে হয় তাদের। আমন ধান কাটার পরে শুরু হয়ে যায় বিভিন্ন কৃষি আবাদ। শাক-সবজি, গম, ভুট্টাসহ নানা ধরনের চাষাবাদ শেষ হতে না হতেই আবার শুরু হয়ে যায় বোরো ধান রোপণের সময়। তীব্র শীত যেন তাদের কাছে কিছুইনা।
প্রচন্ড হাঁড়কাপানো শীত উপেক্ষা করে সকাল সন্ধ্যা অবধি বোরো ধানের জমি প্রস্তুত ও চারা রোপণ কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। কেউবা জমিতে হাল চাষ দিচ্ছেন।
কেউ জমির আইলে কোদাল পাড়া কিংবা জৈব সার বিতরণ কাজে ব্যস্ত। কেউ সেচের জন্য ড্রেন নির্মাণ কিংবা পাম্পের বা শ্যালো মেশিনের জন্য ঘর তৈরি করছেন।
আবার অনেকে তৈরি জমিতে পানি সেচ দিয়ে ভিজিয়ে রাখছেন। আনুসঙ্গিক কাজ শেষ করে কেউবা বীজতলা থেকে চারা তুলে তা রোপণ করছেন ক্ষেতে।
চারা রোপণের প্রতিটি কাজ ঠিকমতো করলেও মনে শান্তি নেই কৃষকদের। সবার মনেই রয়েছে হতাশা। ধানের ন্যায্য দাম না পেলে লোকসান গুনতে হবে।
কৃষক আবদুল মতিন বলেন, এ বছর নতুন জাতের বিআর-৫৮ ধান ১৬৫ শতক জায়গায় চাড়া রোপণ করতেছি, এখন তীব্র শীত বিরাজ করছে তবে পরবর্তিতে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আশা করি সমস্যা হবে না। তিনি বলেন, বোরো ধান লাগাতে দিন-রাত পরিশ্রম করতে হয়। এছাড়া বোরো আবাদে খরচও বেশি হয়। বোরো ধান লাগানোর পর থেকে তিন-চার দিন পর পর সেচ দিতে হয়। খরচ বেশি হলেও ধানে ন্যায্য দাম পেলে আশা করি লাভবান হবো।
কুমিল্লার লাকসাম, মনোহরগঞ্জ, নাঙ্গলকোট, লালমাই, বরুড়া, ব্রাহ্মণপাড়াসহ প্রায় সকল উপজেলায় এবার মৌসুমের শুরুতেই কৃষকরা ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন বোরো চারা রোপনে। কিন্তু গত ক’দিনের প্রচন্ড শীতে তারা কাবু হয়ে গেছেন। দেশব্যাপী শৈত্য প্রবাহ এবং টানা ৪/৫ দিন সুর্যের দেখা নেই। কৃষকরা জানান, শীতের তীব্রতা বাড়লেও এ মূহূর্তে চারা গাছ রোপন করতে না পারলে সময়মতো ধান উৎপাদন হবেনা। এতে তারা চরম বিপাকে পড়বেন।
কৃষি অফিস সূত্র জানায়, বিভিন্ন উপজেলার অনেক জায়গায় ধানের চারা উত্তলন ও জমিতে চারা রোপণ শুরু হয়েছে। তীব্র শীতের মধ্যে ধানের চারা ভাল রাখার জন্য আমরা কৃষককে বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছি। এ বছর হাইব্রিড ও উপসি জাতের ধান চাষে কৃষকরা বেশি আগ্রহী। আশা করি আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি উৎপাদন হবে।