শুক্রবার, ১৫ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

দেবিদ্বারে ৫শ’ বছরের পুরনো সরকারি খাল ভরাট করে রাস্তা নির্মান

দেবিদ্বারে ৫শ’ বছরের পুরনো সরকারি খাল ভরাট করে রাস্তা নির্মান

১০০ Views

            নিজস্ব প্রতিনিধি\ কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার ধামতি পূর্বপাড়া-কুরাখাল কান্দা গ্রামে ৫০০ বছরের পুরনো খাল ভরাট করে নিজের বাড়ির যাতায়াতের রাস্তা নির্মাণ করেছেন সায়মন হোসেন নামে স্থানীয় এক প্রভাবশালী ব্যক্তি। তিনি ওই গ্রামের সাইদুর রহমানের ছেলে। তবে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ রায়হানুল ইসলাম খাল থেকে মাটি সরিয়ে নিতে নির্দেশ দিয়েছেন।

            সরেজমিন দেখা গেছে, ধামতি পূর্বপাড়া-কুরাখাল কান্দা খালটি ভরাটের কাজ করছেন ১০-১২ জন শ্রমিক। তারা জানান, খাল ভরাটের জন্য আমাদের আনা হয়েছে; তাই ভরাটের কাজ করছি। তবে এটি সরকারি খাল। এ বিষয়ে কথা বলার চেষ্টা করলে অভিযুক্ত সাইমনকে খাল ভরাটস্থলে পাওয়া যায়নি। তবে তার বাবা সাইদুর রহমানকে পাওয়া গেলেও তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা না বলে দ্রæত চলে যান।

            ভুক্তভোগী কৃষকরা জানান, এ খালটি ৫০০ বছরের অধিক পুরনো। এ খালে এক সময় নৌকা চলাচল করতো। বর্তমানে খালের মধ্যে বাঁধ দেয়ায় জলাবদ্ধতা তৈরি হয়ে প্রায় ২০০ একর ফসলের ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। আমরা চরম দুর্ভোগে পড়বো। জলাবদ্ধতা নিরসনসহ খাল ভরাটকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।  ধামতি পূর্বপাড়া জামে মসজিদের সেক্রেটারি মো. মোশাররফ হোসেন বলেন, গত কয়েক বছর আগে সায়মন খাল ভরাট করাকালে তৎকালীন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. গিয়াস উদ্দিন খালের মাটি সরাতে নির্দেশ দিলে তারা সরিয়ে ফেলেন।

বর্তমানে আবারো খাল ভরাটের কাজ করছেন তিনি। এতে পানি নিষ্কাশনের একমাত্র খালটি দখল করায় আশপাশের অন্তত ৭-৮ গ্রামের মানুষের প্রায় ২০০ একর জমিতে পানি জমে থাকবে। এতে জমিগুলো অনাবাদি হয়ে পড়বে। কৃষকের ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হবে। স্থানীয় মো. জুনাব আলী ও আবদুর রাজ্জাক বলেন, এ খাল দিয়ে একসময় নৌকা চলতো। বর্ষা মৌসুমে জোয়ার-ভাটার পানির সঙ্গে পলি এসে জমির উর্বরতা বাড়াতো, কৃষিজমির সেচকাজ চলতো এ খালের পানি দিয়ে। পুরনো খালটি ভরাট করলে আমরা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হবো। এ বিষয়ে অভিযুক্ত সায়মন মুঠোফোনে বলেন, এটি ইউনিয়ন পরিষদের অর্থায়নে ভরাট করা হয়েছে। তবে মাটির নিচে দু’টি পাইপ দেয়া হয়েছে। এরপর তিনি চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলতে বলেন।

            এ বিষয়ে ধামতি ইউপি চেয়ারম্যান মো. মহিউদ্দিন মিঠু বলেন, সায়মনের বাবা সাইদুর রহমান রাস্তা মেরামতের কথা বলে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে (১%) এক লাখ টাকারও কিছু কম টাকা নিয়ে যায়। তবে তারা যে সরকারি খাল ভরাট করবে তা জানতাম না। এটি অনিয়ম হয়েছে। আমি নিজেও অনিয়ম পছন্দ করি না। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ রায়হানুল ইসলাম বলেন, প্রবহমান এ খালটি উন্মুক্ত করার প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমি ইতিমধ্যে নির্দেশ দিয়েছি খাল থেকে মাটি তুলে নিতে। যদি ২/১ দিনের মধ্যে মাটি তুলে না নেয় তাহলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Share This

COMMENTS